প্রতীকী ছবি।
ছ’মাসের শিশুপুত্র-সহ স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অপরাধে এক ব্যক্তিকে আজীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। মঙ্গলবার শিয়ালদহ ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড কোর্টের বিচারক অজেয়ন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এই রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়াও সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দু’বছরের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক।
ওই মামলার সরকারি কৌঁসুলি অসীম কুমার জানান, আজীবন সাজাপ্রাপ্ত ওই অপরাধীর নাম রাজু সিংহ। তার বাড়ি ট্যাংরা থানা এলাকার ট্যাংরা সেকেন্ড লেনে। এ দিন বিচারকের কাছে ছ’মাসের ওই শিশুকে খুন করার জন্য ফাঁসির সাজার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু বিচারক ওই ঘটনা বিরলতম উল্লেখ করে আজীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান সরকারি কৌঁসুলি। এ দিন আদালতে কক্ষে রাজু বিচারককে কিছু বলতে চায়নি। রায় ঘোষণার পরেও ভাবলেশহীন ছিল সে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজুর সঙ্গে ২০১২ সালে বিয়ে হয়েছিল বিহারের বাসিন্দা, বছর ষোলোর প্রতিমা দেবীর। ছ’মাসের ছেলে এবং স্ত্রীকে নিয়ে ট্যাংরা সেকেন্ড লেনে থাকত রাজু। ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে অর্ধেকের বেশি পুড়ে যাওয়া অবস্থায় প্রতিমা সন্তানকে কোলে নিয়ে ট্যাংরা থানার সামনে হাজির হন। তিনি পুলিশকর্মীদের বলেন, ‘‘আমার স্বামী রাজু কেরোসিন তেল ঢেলে গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কোলে ছেলে ছিল। ওকেও পুড়িয়ে দিয়েছে।’’
পুলিশকর্মীরা ওই মহিলাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ২ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর। শিশুটিকে ভর্তি করানো হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। মায়ের মৃত্যুর কয়েক দিন পরে তারও মৃত্যু হয়।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছিল সাব ইনস্পেক্টর বিশ্বজিৎ দাসের (বর্তমানে তিনি চারু মার্কেট থানায় কর্মরত) হাতে। ঘটনার পরেই গ্রেফতার করা হয় রাজুকে। জানা যায়, ঘটনার দিন বাড়িতে খাবার না থাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল রাজু ও প্রতিমার মধ্যে। তখনই মত্ত অবস্থায় থাকা রাজু ওই ঘটনা ঘটায়। হাসপাতালে প্রতিমার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি গ্রহণ করেন এক বিচারক। সেখানেও একই বয়ান দেন প্রতিমা। প্রথমে খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করা হলেও পরে দু’জনেরই মৃত্যু হওয়ায় খুনের মামলা করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিচারপর্ব চলাকালীন ২০১৫ সালে হাইকোর্ট থেকে জামিন পায় রাজু। কিন্তু ২০১৬ সালে জামিনের শর্ত লঙ্ঘন করে পালিয়ে যায় সে। পরে আদালত তদন্তকারী অফিসারকে ফের রাজুকে পাকড়াও করার নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালে ডানকুনি থেকে ফের গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। তার পর থেকে জেলেই ছিল সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy