মা উড়ালপুল। —ফাইল চিত্র।
মা উড়ালপুলের দু’পাশে অত্যাধুনিক ‘ক্র্যাশ ব্যারিয়ার’ লাগানোর চিন্তাভাবনা করছে লালবাজার। সেই সঙ্গে মাঞ্জা সুতোর বিপদ এড়াতে উড়ালপুলের বাকি অংশে ফেন্সিং দেওয়ার পাশাপাশি, উড়ালপুলের চার নম্বর সেতুর উপরে লোহার বিমে ওঠা আটকাতে সেটি ঘেরার পরিকল্পনাও করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত ওই কাজ শুরুর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি লালবাজারে একটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা। সেখানেই মা উড়ালপুল নিয়ে লালবাজারের পরিকল্পনা জানানো হয় কেএমডিএ-কে। পুলিশ সূত্রের খবর, বৈঠকে মা উড়ালপুলের দু’পাশে লোহার ‘ক্র্যাশ ব্যারিয়ার’ লাগানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মূলত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে কোনও বাইক বা গাড়ি ধাক্কা মারলে কারও নীচে পড়ে যাওয়া এবং সেতু থেকে ঝাঁপ দেওয়ার বিপদ এড়াতেই এই ‘ক্র্যাশ ব্যারিয়ার’ দেওয়ার ভাবনা বলে মনে করা হচ্ছে।
এর সঙ্গে ঘুড়ির মাঞ্জা সুতোর বিপদ এড়াতে মা উড়ালপুলের অরক্ষিত অংশে ফেন্সিং লাগানোর অনুরোধও করা হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থাকে। প্রসঙ্গত, মা উড়ালপুলের উপরে চিনা মাঞ্জা সুতোয় আটকে একাধিক বাইকচালকের আহত হওয়ার ঘটনা অতীতে ঘটেছে। এমন বিপদ এড়াতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফেন্সিং দেওয়ার কাজ শুরু
হয়।
বোট ক্লাব থেকে চার নম্বর সেতু পর্যন্ত উড়ালপুলের ৯০০ মিটার অংশ ফেন্সিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। এর জন্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে কেএমডিএ। কিন্তু কাজ শেষের পরে সেতুর উপরে মাঞ্জা সুতোর বিপদ কমানো গেলেও অরক্ষিত বাকি অংশে একাধিক বাইকচালকের আহত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। ফলে চার নম্বর সেতু থেকে পার্ক সার্কাসের দিকের কয়েকশো মিটার এবং পরমা আইল্যান্ডের দিকে অরক্ষিত অংশ পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে।
এর পরেই ওই ফাঁকা অংশে ফেন্সিং দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করেন লালবাজারের কর্তারা। তার পরে সেতুর বাকি অংশ ফেন্সিং দিয়ে ঘিরতে একাধিক বার পুলিশের তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে কেএমডিএ-কে। লালবাজারের ওই বৈঠকেও ফের মা উড়ালপুল ঘেরার অনুরোধ করেন পুলিশকর্তারা।
পাশাপাশি, মাস দুয়েক আগে মা উড়ালপুলের চার নম্বর সেতুর কাছে লোহার বিমের উপরে উঠে গিয়েছিলেন এক যুবক। তাঁকে নীচে নামাতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছিল পুলিশ এবং দমকলকর্মীদের। তাই এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে সেতুর লোহার বিমের ওই অংশে যাতে কেউ কোনও ভাবেই উঠতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা করার জন্য কেএমডিএ-কে প্রস্তাব দিয়েছে লালবাজার।
কেএমডিএ-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেতুর ভার বহন ক্ষমতা বজায় রেখে লালবাজারের প্রস্তাবগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘সেতুর উপরে সুরক্ষা আরও মজবুত করতেই পরিকল্পনাগুলি করা হয়েছে। এই কাজ শেষ হলে সেতু ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা আরও দৃঢ় হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy