Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
gold medal

জাতীয় মিটে লক্ষ্য সোনা, সাইকেলের দাম দিল লালবাজার

সাইকেল, দস্তানা, হেলমেট-সহ আনুষঙ্গিক জিনিস বাবদ খরচ হওয়া ৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৯১৪ টাকার চেক বসন্তের হাতে তুলে দিয়েছেন কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল।

An image of the man with his new cycle

নতুন সাইকেল নিয়ে বসন্ত। নিজস্ব চিত্র।

সুদীপ দাস
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৩৫
Share: Save:

কলকাতা পুলিশ মিটে সাফল্য জাতীয় স্তরে ডাক এনে দিয়েছে। কিন্তু, সেখানে ‘সাইক্লিং’-এ নামতে গেলে চাই এমন সাইকেল, যাতে গতির ঝড় উঠবে! এ কথা ভেবেই কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কনস্টেবল বসন্ত হেমব্রম আধুনিক একটি সাইকেল কিনে ফেলেন। এ জন্য কয়েক লক্ষ টাকা ধার করতে হয়েছে হুগলির পোলবার অমরপুরের বাসিন্দা, বছর ছত্রিশের ওই যুবককে। সে কথা জেনেই বসন্তের পাশে দাঁড়াল লালবাজার।

সাইকেল, দস্তানা, হেলমেট-সহ আনুষঙ্গিক জিনিস বাবদ খরচ হওয়া ৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৯১৪ টাকার চেক বসন্তের হাতে তুলে দিয়েছেন কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল। গত বুধবার লালবাজারে ডেকে কলকাতা পুলিশের ক্রীড়া তহবিল থেকে ওই চেক দেওয়ার সময়ে অধস্তনের পিঠ চাপড়ে নগরপালের আর্জি, ‘‘জিতে আসতে হবে কিন্তু।’’ প্রত্যুত্তরে বাহিনীর শীর্ষ কর্তাকে বসন্ত বলেছেন, ‘‘ট্র্যাকে নামলে, সোনা আমার স্যর!’’

আগামী ২৩ অক্টোবর দিল্লিতে জাতীয় পুলিশ মিট। সে জন্য হুগলির সুগন্ধা থেকে দিল্লি রোড ধরে শেওড়াফুলি পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সাইকেল ছুটিয়ে প্রতিদিন অনুশীলন চলছে বসন্তের।

কী আছে আট লাখি সাইকেলে?

বসন্ত জানান, আছে ২২টি গিয়ার। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। হাওয়া কেটে দ্রুত এগোনোর জন্য রয়েছে বিশেষ প্রযুক্তি। প্রতিটি চাকার দাম ১০ হাজার টাকা। দু’টি চাকার একটি এসেছে আমেরিকা থেকে। অন্যটি ফ্রান্স। সাইকেলের বাকি অংশ আমেরিকার। সেগুলি জোড়া হয়েছে কলকাতায়। মাস দেড়েক আগে সাইকেল হাতে পেয়েছেন বসন্ত। ৩০ কিলোমিটার যেতে তাঁর সময় লাগছে ঘণ্টাখানেক। এই সময় ৪৮ মিনিটে নামিয়ে আনাই তাঁর লক্ষ্য।

স্কুলবেলা থেকেই সাইকেল-প্রেম বসন্তের। ২০০৯ সালে কলকাতা পুলিশের হোমগার্ডে চাকরি পান। খেলায় পারদর্শিতার সুবাদে কনস্টেবল পদে উত্তীর্ণ হন। কাজের চাপে প্রশিক্ষণে সমস্যা হওয়ায় ডেপুটেশনে বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগে পাঠানো হয় তাঁকে। ‘ডিউটি’ সেরে ফিরে সন্ধ্যায় চলে অনুশীলন। কলকাতা পুলিশ স্পোর্টস মিটে সাইক্লিংয়ে পর পর পাঁচ বার সোনা জিতেছেন।

বসন্তের প্রশিক্ষক তথা পশ্চিমবঙ্গ সাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ শেঠ বলেন, ‘‘আশা করছি, দিল্লিতেও বাজিমাত করবে। বসন্ত আন্তর্জাতিক ট্র্যাকে নামার ক্ষমতা রাখে।’’জাতীয় মিটে ডাক পেয়ে সাইকেল কিনে ফেললেও দেনা কী ভাবে শোধ করবেন, তা ভেবে আগে ঘুম উবেছিল বসন্তের। সেই চিন্তা দূর হয়েছে। এখন ভাবনা, শুধু দিল্লি। সেই পথে তাকিয়েই প্যাডেলে চাপ দিয়ে গিয়ার বাড়াচ্ছেন বসন্ত।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE