পুজোর আগেই ভাঙড় ডিভিশনের নতুন চারটি থানাকে সক্রিয় করতে চাইছে লালবাজার। একই সঙ্গে পৃথক ব্যাটালিয়ন বানানোর পরিকল্পনা শুরু করেছে লালবাজার। শনিবার কলকাতা পুলিশের নগরপালের মাসিক অপরাধ দমন বৈঠকে ভাঙড়ের চারটি থানা হাতিশালা, বিজয়গঞ্জ বাজার, মাধবপুর এবং বোদরা যাতে পুজোর আগে চালু করা যায়, সেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে আধিকারিকদের। বর্তমানে ওই চারটি থানা চালুর সরকারি বিজ্ঞপ্তি থাকলেও কাজ চলছে ভাঙড়েরই অন্য চারটি থানা— পোলেরহাট, উত্তর কাশীপুর, ভাঙড় ও চন্দনেশ্বর থানা থেকে। ওই চারটি থানার ওসি আদেশবলে হাতিশালা, বিজয়গঞ্জ বাজার, বোদরা এবং মাধবপুর থানার দায়িত্বে রয়েছেন।
সূত্রের খবর, গত সোমবার ভাঙড়ে ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে আইএসএফের ডাকা সমাবেশে আসা সমর্থক ভর্তি গাড়িকে পুলিশ ভাঙড়ে আটকে দেয় বলে অভিযোগ। তার পরেই উত্তপ্ত হয় ভাঙড়ের একাধিক এলাকা। উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ও বাইকে আগুন লাগিয়ে দেয়। দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে যায় একাধিক এলাকা। এমনকি, পুলিশকর্মীদের এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতেও দেখা যায় সে দিন। আইএসএফের সমর্থকদের ছোড়া ইটে জখম হন ১৬ জন পুলিশকর্মী। পরে কলকাতা থেকে পুলিশকর্তাদের নেতৃত্বে বিরাট বাহিনী ভাঙড়ে পৌঁছে অবস্থা আয়ত্তে আনে। ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ওই ঘটনায় বাহিনীর অপ্রতুলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে পুলিশের একাংশেই। কলকাতা থেকে বাহিনী নিয়ে গিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হলেও দূরত্বের কারণে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে পুলিশের একাংশের মত। তাই ১৬ মাস আগে ঘোষণার পরেও চালু না হওয়া ভাঙড় ডিভিশনের বাকি চারটে থানাকে সক্রিয় করতে চাইছে লালবাজার। থানার জন্য অফিস বিল্ডিং দেখা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে কলকাতা পুলিশে নেতাজি বাহিনী তৈরির ঘোষণা হলেও তা কার্যকর হয়নি। তিন-চার জন কর্তা ছাড়া ওই ব্যাটালিয়নে আর কোনও পুলিশকর্মী নেই। পুলিশের একাংশের মতে, বাহিনীতে কর্মীর সংখ্যা, বিশেষ করে কনস্টেবল পদে ঘাটতি রয়েছে। তার উপরে নিয়োগও বন্ধ রয়েছে। তা হলে ভাঙড়ে নতুন ব্যাটালিয়ন তৈরি হলে কোথা থেকে কর্মী আসবে, তা নিয়েও
রয়েছে সংশয়।
লালবাজার সূত্রের খবর, এ বার শহরের আইন অমান্য কিংবা মিছিল নিয়ে আগে থেকে প্রস্তুত হতে বাহিনীকে সতর্ক করেছেন নগরপাল। মিটিং-মিছিল বা আইন অমান্যে কত লোক জমায়েত হতে পারে, তা আগাম জেনে নিতে বলা হয়েছে বাহিনীকে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)