Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Garbage Dump

ফেরেনি সচেতনতা, প্লাস্টিক আর জঞ্জালে দফারফা নিকাশি-পথের 

বাগজোলা-বাইপাস (১) খালের অনেকটা অংশ বাগুইআটির সাহাপাড়া, ধানমাঠ-সহ বিস্তীর্ণ অংশের বর্জ্য জল বহন করে। কিন্তু প্লাস্টিক আর আবর্জনা জমে সেই খালের শোচনীয় দশা।

An image of Garbage

অবরুদ্ধ: প্লাস্টিক জমে এ ভাবেই বুজে গিয়েছে বাগজোলা-বাইপাস (১) খাল। —নিজস্ব চিত্র।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫৪
Share: Save:

প্লাস্টিক ব্যবহারে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিধাননগর পুরসভা। ১২০ মাইক্রনের কম ঘনত্ববিশিষ্ট প্লাস্টিক, থার্মোকল— সব কিছুর উপরেই বলবৎ হয়েছে সেই নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। বন্ধ তো দূর, প্লাস্টিক ব্যবহার করার পরে সেগুলি খালে, নর্দমায় ফেলে নিকাশি ব্যবস্থারও দফারফা করে ছাড়া হচ্ছে। যা ঠেকানো যাচ্ছে না।

বাগজোলা-বাইপাস (১) খালের অনেকটা অংশ বাগুইআটির সাহাপাড়া, ধানমাঠ-সহ বিস্তীর্ণ অংশের বর্জ্য জল বহন করে। কিন্তু প্লাস্টিক আর আবর্জনা জমে সেই খালের শোচনীয় দশা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খাল বুজে যাওয়ার ফলে বেড়েছে মশার উপদ্রব। তবে প্লাস্টিক কে বা কারা ফেলছেন, তা নিয়ে কেউ মন্তব্য করতে চাননি।

পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, বাগজোলা-বাইপাস (১) আদতে খাল নয়। সেটি একটি বিরাট নালা। তবে ওই নালার মধ্যে দিয়ে যে বিস্তীর্ণ এলাকার জল বাগজোলা খালে গিয়ে পড়ে, তা মেনে নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, মানুষকে বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও যত্রতত্র প্লাস্টিক কিংবা প্লাস্টিকের জিনিস ফেলা ঠেকানো যাচ্ছে না।

খালই হোক কিংবা নালা, নিকাশির ওই পথটি দীর্ঘদিন ধরেই নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা চোখে পড়বে বাগুইআটির জোড়ামন্দির থেকে সার্ভিস রোড বরাবর তেঘরিয়ার দিকে এগোতে থাকলেই। দোকান, শোরুম, হোটেল, পলিক্লিনিক— সব কিছুই খালের পাড় দখল করে ফেলায় জল বেরোনোর পথ অতিরিক্ত অপ্রশস্ত হয়ে পড়েছে। তার সঙ্গেই যোগ হয়েছে খালে প্লাস্টিক ফেলার প্রবণতা।

বাগজোলা-বাইপাস (১) খালের ওই শাখাটি রয়েছে ফয়রা ভবন থেকে অদূরে ধানমাঠের দিকে যেতে। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, খালের মাঝখান ভরে আছে প্লাস্টিক-সহ নানা ধরনের আবর্জনায়। জলের প্রবাহ অতি ক্ষীণ। প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিনের প্যাকেট, থার্মোকল— কিছুই বাকি নেই। অভিযোগ, এ সব নিয়ে পুর প্রশাসনের হেলদোল নেই। শুধু ওই জায়গাটিই নয়, জোড়ামন্দির থেকে তেঘরিয়ামুখী সার্ভিস রোড বরাবর চলা ওই খালের নীচের অনেক জায়গায় পলি জমে আছে। এমনিতেই জবরদখলের কারণে ওই খালের প্রবাহমুখ নানা ভাবে ব্যাহত হয়েছে। তার উপরে এ ভাবে পলি জমে গিয়েছে।

এক সময়ে ওই সব এলাকায় শুধুই বসতবাড়ি ছিল। পরবর্তী কালে বিভিন্ন আবাসন গড়ে উঠেছে। বর্তমানে ওই সার্ভিস রোড তথা বাগজোলা-বাইপাস খালের ধারে নানা ধরনের দোকানও বসে গিয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, যত প্লাস্টিক ওই জায়গায় জমে রয়েছে, তা ফেলা হচ্ছে আশপাশ থেকেই।

বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবরাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গত বছর ওই খাল থেকে পলি তোলা হয়েছিল। আমরা বার বার নাগরিকদের কাছে আবেদন করছি, যাতে তাঁরা প্লাস্টিক ব্যবহার না করেন কিংবা যত্রতত্র না ফেলেন। আমাদের এত লোকবলও নেই যে, আনাচকানাচে নজরদারি করব। ওই জায়গাটি সংরক্ষণ করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’

শুধু ওই জায়গাটিই নয়। ভিআইপি রোডের ধারে কেষ্টপুর থেকে বাগুইআটি পর্যন্ত যে ক’টি নয়ানজুলি রয়েছে, আবর্জনা ও প্লাস্টিক জমে সেগুলির অবস্থাও শোচনীয়। এর ফলে শুধু যে নিকাশি ব্যবস্থার উপরে প্রভাব পড়ছে তা-ই নয়, তৈরি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশও। তবে দেবরাজ জানান, বিষয়টি তাঁদের নজরে রয়েছে। ভবিষ্যতে ওই সব জায়গা নিয়ে উন্নয়নের পরিকল্পনা আছে।

অন্য বিষয়গুলি:

garbage dump sewage system awareness
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy