—নিজস্ব চিত্র।
তিন মাস ঠিক মতো ঘুমোয়নি সে। তাকে তাড়া করে বেড়াত কোনও এক আতঙ্কের স্মৃতি। পুলিশ সূত্রের খবর, রানিকুঠির স্কুলের আত্মঘাতী কিশোরী কৃত্তিকা পালের (১৪) ফেলে যাওয়া চিঠি থেকে এ সবই জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে এক গভীর অবসাদের ইঙ্গিতও রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। হাতের লেখার ধরন দেখে পুলিশের সন্দেহ, প্রথম দু’টি পাতা আগেই লেখা হয়েছিল। তৃতীয় পাতাটি মৃত্যুর কিছু ক্ষণ আগে লেখে সে। চিঠিটি হস্তলেখ বিশারদদের কাছে পাঠানো হচ্ছে।
লালবাজারের খবর, চিঠিতে রয়েছে, ছোটবেলা থেকেই তার আত্মহত্যা প্রবণতা ছিল। নানান অসংলগ্ন কথাও রয়েছে। আবার এক ‘কে’-র উদ্দেশে আবেগতাড়িত বার্তাও রয়েছে তার। পুলিশ ও মনোবিদদের একাংশের বক্তব্য, কথাগুলি স্বাভাবিক নয়। ছোট্ট মেয়েটি দীর্ঘদিন ধরেই অবসাদের ভুগছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, কৃত্তিকার আত্মহত্যার পদ্ধতি বিরল। একটি সিনেমা ও ওয়েব সিরিজে মুখে ব্যাগ জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু দেখানো হয়েছিল। ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রির মনোরোগ-চিকিৎসক সুজিত সরখেলের মতে, ইদানীং নেটের দৌলতে এ সব সহজে জানা যাচ্ছে। তাতে বিপদের আশঙ্কাও বাড়ছে। এই ঘটনা রুখতে স্কুলগুলিতে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের নিয়ে নিয়মিত কর্মশালা প্রয়োজন। পুলিশের খবর, কৃত্তিকার নিজস্ব মোবাইল ছিল না। বাবার ল্যাপটপ বা স্কুলের কম্পিউটর ব্যবহার করত সে। সেগুলি পুলিশ পরীক্ষা করতে পারে।
লালবাজারের খবর, কৃত্তিকার সহপাঠিনী এবং কয়েক জন শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, স্কুলে সহপাঠীর সঙ্গে টিফিন খেয়ে মাঠে খেলাধুলো করেছিল সে। পঞ্চম পিরিয়ডের পর কৃত্তিকা মনিটরকে জানিয়েছিল, শরীর খারাপ লাগায় সে ‘সিক রুমে’ যাচ্ছে। ষষ্ঠ পিরিয়ডের শিক্ষিকা ক্লাস নিতে এলে তিনি ওই ছাত্রীকে দেখতে না পেয়ে বাকিদের কাছ জানতে চান কৃত্তিকা কোথায়। ‘সিক রুমে’ রয়েছে জানতে পেরে তিনি কিছু বলেননি। সপ্তম পিরিয়ডের শিক্ষিকা কৃত্তিকা দীর্ঘক্ষণ ক্লাসে নেই তা জানতে পেরে বাকি ছাত্রীদের খোঁজ নিতে বলেন। দেখা যায়, ‘সিক রুমে’র রেজিস্টারে কৃত্তিকার নাম নেই। তার পরেই স্কুল জুড়ে খোঁজ শুরু হয় এবং দোতলার একটি বন্ধ শৌচাগারের ভিতরে কৃত্তিকার দেহ মেলে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy