Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Police

৫ দিনে জরিমানা ৫ হাজার বাইকের, তাণ্ডব রুখতে এ বার নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করে অভিযান

লালবাজার সূত্রের খবর, নগরপাল ‘বাইক-গ্যাং’ ধরতে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিভিন্ন থানা এবং গোয়েন্দা বিভাগকেও সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছেন।

বেপরোয়া বাইকচালকদের শায়েস্তা করতে শহর জুড়ে বিশেষ অভিযান কলকাতা পুলিশের। নিজস্ব চিত্র।

বেপরোয়া বাইকচালকদের শায়েস্তা করতে শহর জুড়ে বিশেষ অভিযান কলকাতা পুলিশের। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ১৬:৩৩
Share: Save:

নাকা পয়েন্ট করে শুধু ব্লক রেইড নয়, বেপরোয়া বাইকচালকদের শায়েস্তা করতে শহরের বিশেষ কিছু এলাকা চিহ্নিত করে বিশেষ অভিযান চালানোর উপর গুরুত্ব দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। গত সপ্তাহে বাইক-গ্যাংয়ের হাতে মডেল-অভিনেত্রী ঊষসী সেনগুপ্তের হেনস্থা হওয়ার পরেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা শহরের রাস্তায় বেপরোয়া বাইকচালকদের পাকড়াও করতে বিশেষ অভিযানের নির্দেশ দেন।

সেই নির্দেশ মেনেই শনিবার রাতে শহর জুড়ে বিশেষ অভিযান চলে। সেই অভিযানের ফল নিয়ে আপাত ভাবে পুলিশ কর্তা খুশি। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করছেন, অভিযানের পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতা শহরের রাস্তায় যে পরিমাণ বেপরোয়া বাইক চলে তার একটা বড় অংশ শহরের নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকা থেকে বার হয়। ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে, সেখানে বিশেষ অভিযান চালালে তা অনেক বেশি কার্যকরী হবে।”

লালবাজার সূত্রের খবর, নগরপাল ‘বাইক-গ্যাং’ ধরতে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিভিন্ন থানা এবং গোয়েন্দা বিভাগকেও সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত শহরের ৪৮টি জায়গায় নাকা চেকিং পয়েন্ট বসিয়ে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। তাতে, প্রায় ২ হাজার ৭০০ বাইকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ২৭৮টি ক্ষেত্রে হেলমেট না থাকার কারণে মামলা দায়ের করা হয়। ৬০৪টি মামলা হয়েছে ট্রাফিক আইন ভেঙে এক বাইকে তিন জন চড়ার জন্য। ১২১ জন চালককে আটক করা হয় মদ্যপান বাইক চালানোর জন্য। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৭৭টি বাইক। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার থেকে এই বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। তাতে এখনও পর্যন্ত ১৪৭টি বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আইন ভাঙার জন্য। ট্রাফিক আইনের বিভিন্ন ধারাতে জরিমানা করা হয়েছে সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার বাইকের ক্ষেত্রে।

আরও পড়ুন: যুদ্ধ চাই, শান্তি নয়! তৃণমূলের এখন এই স্লোগান

কিন্তু তার পরেও রবিবার বিকেলে পার্ক সার্কাসের সিআইটি রোড এবং হাতিবাগান লেনের সংযোগস্থলে হেলমেট ছাড়া প্রচণ্ড গতিতে চলা একটি বাইক ধরতে গিয়ে প্রহৃত হতে হয় পার্ক সার্কাস ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট ইয়ার মহম্মদ বিশ্বাসকে। পরে বাইক চালক এবং আরোহী সেবেস্টিয়ান জন গোমস এবং কার্তিকপ্রসাদ রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। দু’জনেই ওই এলাকার বাসিন্দা।

রবিবারই দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে গার্ডেনরিচ ফ্লাইওভারে। একটি স্কুটি চড়ে রাত সওয়া ন’টা নাগাদ প্রচণ্ড গতিতে যাচ্ছিল তিন কিশোর। পাহাড়পুর কুলিং স্টেশনের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফ্লাইওভার থেকে প্রায় তিরিশ ফুট নীচে পড়ে যান তিন জন। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। প্রত্যেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি।

আরও পড়ুন: ৭২ ঘণ্টা কোনও অশান্তি নেই কাঁকিনাড়ায়, ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত

কলকাতার পুলিশ কর্তাদের একাংশের দাবি, এ ধরনের ঘটনা শুধু ব্লক রেইড করে সামলানো যাবে না। তাঁরা বন্দর এলাকা, যাদবপুরের কয়েকটি ‘পকেট’ এবং তিলজলা–তপসিয়া–পার্ক সার্কাসের বেশ কিছু জায়গা চিহ্নিত করেছেন, যেখানে কিশোর এবং যুবকদের মধ্যে এ ধরনের আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘ওই এলাকাগুলিতে হঠাৎ হঠাৎ সারপ্রাইজ নাকা এবং অভিযান চালালে সুফল মিলতে পারে। তা হলে শহরের রাস্তায় নামার আগেই পাকড়াও করা যাবে এ ধরনের বেপরোয়া বাইকগুলিকে।”

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এ বার এই পদ্ধতিতেও অভিযান চালানো হবে। বেপরোয়া বাইকের তাণ্ডব রুখতে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy