Advertisement
E-Paper

পাইপ ‘নেই’, ঠান্ডা পানীয়ের স্ট্র কিনে চালকদের শ্বাস পরীক্ষা?

বাধ্য হয়ে তাঁদের কাউকে কাউকে নিজেদেরই কিনে আনতে হচ্ছে বাজারে বিক্রি হওয়া ঠান্ডা পানীয় বা ডাবের জল পান করার স্ট্র!

ব্রেথ অ্যানালাইজ়ারে লাগানোর পাইপ চেয়েও মিলছে না। তাই এমন স্ট্র লাগিয়ে চলছে পরীক্ষা।

ব্রেথ অ্যানালাইজ়ারে লাগানোর পাইপ চেয়েও মিলছে না। তাই এমন স্ট্র লাগিয়ে চলছে পরীক্ষা।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৬
Share
Save

‘ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার’-এর একটি পাইপ দিয়েই একাধিক জনের শ্বাস পরীক্ষার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সংক্রমণের আশঙ্কা সত্ত্বেও এমন বিধিভঙ্গের কারণ কী? ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের একটি অংশের অভিযোগ, ব্রেথ অ্যানালাইজ়ারের গায়ে লাগানোর পাইপের অভাবেই বহু ক্ষেত্রে এমন কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের। কারণ, বার বার চেয়েও ব্রেথ অ্যানালাইজ়ারের ওই পাইপ সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে তাঁদের কাউকে কাউকে নিজেদেরই কিনে আনতে হচ্ছে বাজারে বিক্রি হওয়া ঠান্ডা পানীয় বা ডাবের জল পান করার স্ট্র! মাপ মতো কেটে যন্ত্রের গায়ে ওই স্ট্র লাগিয়েই চলছে মত্ত চালক ধরা!

দক্ষিণ কলকাতার একটি ট্র্যাফিক গার্ডের এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘আমি নিজেই গত মাসে ২০০ টাকার স্ট্র কিনেছি। এক-একটি স্ট্র গোটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। মাঝখান থেকে কেটে অর্ধেক করে কাজ চালাতে হচ্ছে। কারণ, ভোর পাঁচটা পর্যন্ত এখন রাতের নাকা-তল্লাশি চলছে। অত ক্ষণের ডিউটিতে যত জন গাড়ি বা মোটরবাইক চালকের শ্বাস পরীক্ষা করতে হয়, তা অত কম স্ট্র দিয়ে করা সম্ভব নয়।’’ পূর্ব কলকাতার একটি ট্র্যাফিক গার্ডের এক পুলিশকর্মীর মন্তব্য, ‘‘বর্ষবরণের রাতেও কাঁচি দিয়ে স্ট্র কেটে নিয়ে পরীক্ষা করতে বেরিয়েছিলাম। সে দিন অন্তত হাজারখানেক গাড়ি পরীক্ষা করেছি। কিন্তু ডিউটিতে বেরোনোর সময়ে বড়বাবু বললেন, এখনও পাইপ আসেনি, স্ট্র দিয়েই কাজ চালাতে হবে।’’ ওই পুলিশকর্মীর আরও দাবি, ‘‘সার্জেন্টদের অপেক্ষা করার সময়ও দেওয়া হয় না। উৎসবের রাতে কোন ট্র্যাফিক গার্ড কত মত্ত চালক ধরল, তার প্রতিযোগিতা চলে। সরঞ্জাম নেই বলে প্রতিযোগিতায় কেউ পিছিয়ে পড়তে চান না। এ দিকে, ছোট স্ট্র দিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে চালকের লালা আমাদের হাতে, মুখে ছেটে। তাই ঠোঁটে ধরেই ফুঁ দিতে বলছি আমরা।’’

লালবাজার সূত্রে যদিও জানা গিয়েছে, ২০ মাস বন্ধ থাকার পরে ফের ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার দিয়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ার সময়েই এক নতুন ধরনের যন্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই যন্ত্রের মুখে একটি ছিদ্র থাকে। সেখানে ফানেলের মতো একটি পাইপ লাগানো থাকে। পাঁচ সেন্টিমিটার দূর থেকে ফুঁ দিলেই শ্বাসবায়ু সেই ফানেলের মধ্যে দিয়ে যন্ত্রে ঢুকে যায়। তার পরে গন্ধ বিচার করে ওই যন্ত্র জানিয়ে দেয়, চালক মত্ত কি না! চালক মত্ত, এমন প্রমাণ পেলে মোটরযান আইনের ১৮৫ নম্বর ধারায় মামলা করতে পারে পুলিশ। সে ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে কোনও সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও পরীক্ষা করাতে হয়। এমন ঘটনায় জরিমানা হতে পারে দু’হাজার টাকা। একই অপরাধে বার বার ধরা পড়লে জরিমানা তিন হাজার টাকা পর্যন্ত করারও এক্তিয়ার রয়েছে পুলিশের। গাড়ি বা বাইক-সহ অভিযুক্তকে এর পরে থানার হাতে তুলে দেন ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা।

কিন্তু ওই যন্ত্রের ফানেলের মতো পাইপ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ। আর এক ধরনেরও যন্ত্র পুলিশ ব্যবহার করে। তাতে যন্ত্রটির গায়ে কড়ে আঙুল সমান মোটা ও ছ’ইঞ্চি লম্বা এক ধরনের পাইপ লাগাতে হয়। ওই পাইপও অমিল বলে খবর। ফলে অতীতে পাওয়া একটি বা দু’টি ওই ধরনের পাইপ খুঁজে বার করে তার আগে কিনে আনা স্ট্র লাগিয়ে শ্বাস পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

লালবাজারের অতিরিক্ত কমিশনার দেবাশিস বড়াল বললেন, ‘‘এমন কিছু এখনও পর্যন্ত আমার কাছে আসেনি। তবে বিষয়টি দ্রুত দেখা হবে। এই মুহূর্তে করোনার জন্য ছুটিতে রয়েছি।’’ যুগ্ম-কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার যদিও বলেন, ‘‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। সব সময়ে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রেখেই পরীক্ষা করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে কী হচ্ছে, তা নিয়ে ট্র্যাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলব।’’

চিকিৎসকদের বড় অংশ যদিও বলছেন, ‘‘করোনার পাশাপাশি মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধ করাও জরুরি। ফলে ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে। শুধু দেখা দরকার, সবটা যেন বিধি এবং পরিচ্ছন্নতা মেনে হয়।’’

Kolkata Traffic Police Straw Breath Analyzer

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।