বন্ধুর: এমনই বিপদ বাইপাসের অভিষিক্তা মোড়ের কাছে। নিজস্ব চিত্র
চলতি বর্ষায় এখনও শহরে সে ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়নি। তাতেই রাস্তাঘাটের দফারফা অবস্থা। এ দিকে, পুজো আসতে আর দেড় মাসও বাকি নেই। ফলে প্রশ্নটা ঘুরছেই, পুজোর আগে শহরের জরাজীর্ণ পথের চেহারা আদৌ বদলাবে কি?
বুধবার বন্দর এলাকা এবং দক্ষিণ কলকাতার একাধিক রাস্তা ঘুরে বেআব্রু দশাই চোখে পড়ল। খিদিরপুর, ডায়মন্ড হারবার রোড, ই এম বাইপাস চষে সবচেয়ে ভগ্নদশা দেখা গেল বন্দর এলাকার হাইড রোডের একাংশে। ব্রেস ব্রিজ থেকে হাইড রোডের দিকে যেতে প্রায় আধ কিলোমিটার রাস্তার মাঝে বড় বড় গর্ত। সেখান দিয়েই অনবরত ভারী মালবাহী যান আসছে-যাচ্ছে। দেখাও গেল, ভারী গাড়ির চাকা গর্তে পড়তেই বিপজ্জনক দুলুনি! যদিও গর্তের জন্য চালককে গতি কমাতে হচ্ছে আগেই। হাইড রোডের ধারে একটি কারখানার এক নিরাপত্তরক্ষীর কথায়, ‘‘গর্ত এতই বেশি যে, চালক সামান্য অন্যমনস্ক হলেই গাড়ি উল্টে যেতে পারে। এমন ঘটেছে একাধিক বার।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃষ্টি হলেই পুকুরের চেহারা নেয় হাইড রোড। ছোট গাড়ি বড় গর্তে পড়ে ইঞ্জিন বিকল হওয়ার ঘটনা হামেশাই ঘটে। বুধবার অবশ্য খটখটে রোদে ভাঙাচোরা হাইড রোড ভারী গাড়ির ক্রমাগত যাতায়াতে ধুলোয় ঢেকে যাচ্ছিল। কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী জানান,শুকনো আবহাওয়ায় ধুলোর দাপটে রাস্তায় ডিউটি করা মুশকিল হয়ে যায়।
ভাঙাচোরা রাস্তা ব্রেস ব্রিজেও। অবস্থা তথৈবচ বন্দর এলাকার কোল ডক রোডেরও। সেখানেও একাধিক জায়গায় ছোট-বড় গর্ত। তারাতলা রোড ও ডায়মন্ড হারবার রোডের সংযোগস্থলের কাছেও রাস্তায় অসংখ্য গর্ত। কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বলছিলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবার রোড থেকে তারাতলা রোডের দিকে গাড়ি ঘোরানোর সময়ে চালকদের খুব সাবধান থাকতে হয়। তবে ঝুঁকি বেশি বাইকচালকদের। একাধিক বার গর্তে চাকা পড়ে মোটরবাইক উল্টে গিয়েছে। মৃত্যুও ঘটেছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ রয়েছে খিদিরপুরের সার্কুলার গাডেনরিচ রোডের অবস্থা নিয়েও। তাঁদের মতে, বার বার রাস্তা সারাই হলেও বেশি দিন টিকছে না। নির্মাণ সামগ্রী ভাল মানের না হওয়ায় দ্রুত পিচ উঠছে। রাস্তা সারাইয়ের জন্য কলকাতা পুরসভা কেবল জোড়াতাপ্পি দেয়। অভিযোগ, সেই কাজটাও ঠিকঠাক না হওয়ায় এতটা দুরবস্থা। রুবি মোড় ছাড়িয়ে পাটুলির দিকে এগোতে আরও প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ই এম বাইপাসের উপরেও গর্ত চোখে পড়ার মতো। সেখানে আবার গর্ত ঢাকতে ইটের টুকরো দিয়ে ভরাট করার চেষ্টা হয়েছে।
হাইড রোড, কোল ডক রোড শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের অধীনে। ওই বন্দরের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সি জি আর রোডের মোড় থেকে ব্রেস ব্রিজ পর্যন্ত হাইড রোডের সংস্কার শুরু হয়েছে। দু’পাশের নিকাশির সংস্কারের জন্য ১২ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পুজোর আগেই পুরো রাস্তার সংস্কার শেষ হবে। ব্রেস ব্রিজের উপরেও সারাই হবে।’’ তিনি আরও জানান, হাইড রোডের নীচে পুরসভার পুরনো জলের পাইপ ফুটো হয়েজল বেরোনোয় রাস্তা দ্রুত খারাপ হচ্ছে। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ চলছে বলে জানান তিনি। কোল ডক রোডের গর্ত দ্রুত সংস্কারের আশ্বাসও দেন।
অন্য দিকে, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘শহরের বিভিন্ন রাস্তা পুরসভা ছাড়াও বিভিন্ন দফতরের অধীনে। সেই সব দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পুজোর আগেই রাস্তা সংস্কারের কাজ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy