Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Kolkata

চিনা মাঞ্জা রুখতে মা উড়ালপুলে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি পুলিশের

গত ১ বছরে চিনা মাঞ্জায় বেশ কয়েক জন আহত হলেও ১৬ মে-র আগে তা কখনও প্রাণঘাতী হয়নি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মা উড়ালপুলে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মা উড়ালপুলে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ১৮:৫৯
Share: Save:

চিনা মাঞ্জার উৎপাত কমাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ড্রোনে নজরদারি শুরু করল কলকাতা পুলিশ।

লালবাজার সূত্রে খবর, চিনা মাঞ্জায় ঘটা দুর্ঘটনার নিরিখে শহরের কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানেই ওড়ানো হচ্ছে ড্রোন। কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিক, স্থানীয় থানা এবং ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে নজরদারি চালাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মা উড়ালপুলের উপর ৪ নম্বর সেতু লাগোয়া অংশে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালান পুলিশকর্মীরা।

গত ১ বছরে চিনা মাঞ্জায় বেশ কয়েক জন আহত হলেও ১৬ মে-র আগে তা কখনও প্রাণঘাতী হয়নি। ওই দিন বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ এজেসি বসু উড়ালপুল ধরে পার্কসার্কাস সাত মাথা মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন ওয়াটগঞ্জের কবিতীর্থ সরণির বাসিন্দা ৪৫ বছরের আখতার খান।

আরও পড়ুন: নিয়মের থোড়াই কেয়ার, যেমন খুশি ভাড়া নিয়েই চলছে বাস

তিনি একটি অনলাইন খাবার ডেলিভারি সংস্থায় কাজ করতেন। ওই দিন বিকেলে একটি কাটা ঘুড়ির সুতো আটকে যায় তাঁর গলায়। বাইকের গতি বেশি থাকায়, ধারালো ওই সুতো গভীর ভাবে কেটে বসে যায় আখতারের গলায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুলের উপরই পড়ে যান তিনি। কিছু ক্ষণ পরে পুলিশ তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

এই ঘটনার কয়েক দিন পরেই, ২৮ মে দক্ষিণ পূর্ব রেলের কর্মী, হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা মার্কাস মুর্মু বাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। বিদ্যাসাগর সেতুর র‌্যাম্পে ওঠার মুখে চিনা মাঞ্জা আটকে যায় ওই প্রৌঢ়ের মুখে। তাঁর চোখে, নাকে মুখে গভীর ক্ষত তৈরি করে ঘুড়ির ওই সুতো। দু’টুকরো হয়ে যায় তাঁর ডান চোখে মণি। হেস্টিংস থানার আধিকারিকদের তৎপরতায় দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পর পর মারাত্মক এমন দু’টি দুর্ঘটনার পর কারা ওই এলাকায় নিষিদ্ধ চিনা মাঞ্জা দিয়ে ঘুড়ি ওড়াচ্ছেন তার খোঁজ শুরু করে পুলিশ। সেতুর উপর এবং আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে কোন এলাকা থেকে ঘুড়ি উড়ছে তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়। কড়েয়া, তিলজলা, তপসিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রায় ১৫ জনকে। উদ্ধার হয় চিনা মাঞ্জার সুতো।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই অভিযানের পরেও ফের একটি দুর্ঘটনা ঘটে। এবং প্রমাণ হয়, আদৌ বন্ধ হয়নি চিনা মাঞ্জার ব্যবহার। তার পরেই চিনা মাঞ্জার উৎপাত বন্ধ করতে আকাশ পথে নজরদারির পরিকল্পনা করে লালবাজার। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘তপসিয়া, বেনিয়াপুকুর, হেস্টিংস, তিলজলা, ট্যাংরার মতো উড়ালপুল লাগোয়া এলাকাগুলিতে চিনা মাঞ্জা ব্যবহার করে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রবণতা রয়েছে।”

এর আগে কয়েক বার ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাময়িক ভাবে চিনা মাঞ্জার দাপট কমানো গিয়েছিল। পাশাপাশি সচেতনতামূলক লিফলেটও বিলি করা হয়। তবে ফের যে রমরমিয়ে চিনা মাঞ্জার সুতো ব্যবহার হচ্ছে, তা স্পষ্ট গত তিন সপ্তাহের পর পর দুর্ঘটনায়।

আরও পড়ুন: আসছে তেজসের উন্নত সংস্করণ, দেশীয় প্রযুক্তিতে ভারী যুদ্ধবিমান তৈরির অনুমোদন​

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এখন থেকে নিয়মিত বিভিন্ন জায়গায় ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি চালানো হবে। কোথা থেকে ঘুড়ি উড়ছে প্রথমে সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করে তার পর স্থানীয় থানা এবং প্রয়োজনে গুন্ডাদমন বাহিনী তদন্ত করে দেখবে সেখানে চিনা মাঞ্জা ব্যবহার করা হচ্ছে কি না। এ ভাবেই পর পর তল্লাশি চালিয়ে এই মাঞ্জার ব্যবহার বন্ধ করতে চায় পুলিশ।

এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘আনলকডাউন পর্বে শহরে বাইকের সংখ্যা বেড়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কেক গুণ। তাই চিনা মাঞ্জায় দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সে কারণেই আরও বেশি করে নজরদারি করা হচ্ছে ড্রোন দিয়ে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

drone camera Kolkata Police Chinese Kite Thread
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy