— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কোনও কোনও মত অনুযায়ী, দশমী পড়ে গিয়েছে শনিবারেই। তার জন্য এ দিন সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন ঘাটে শুরু হয়ে গিয়েছিল প্রতিমা নিরঞ্জন-পর্ব। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে পুলিশ এবং কলকাতা পুরসভার কড়া নজরদারি চোখে পড়েছে। জলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঠামো এবং পুজোর উপকরণ সরিয়ে ফেলার কাজ চলেছে নিরন্তর। যদিও পুলিশ-প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, রবিবার বিকেল থেকে শহরের বেশির ভাগ বারোয়ারি দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন হওয়ার কথা।
এ দিন মূলত কিছু বাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত পর্যন্ত শহরের ২৫০টি দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত গঙ্গার ঘাট এবং জলাশয়গুলিতে নিরঞ্জনের বন্দোবস্ত থাকছে। আগামী মঙ্গলবার রেড রোডে রয়েছে পুজোর কার্নিভাল। সেখানে যোগ দিতে যাওয়া প্রতিমা তার পরে ওই দিনই বিসর্জন দেওয়া হতে পারে।
লালবাজার জানিয়েছে, এ বার প্রতিমা বিসর্জনের জন্য শহরের ৬৯টি ঘাট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যার মধ্যে গঙ্গার ঘাটের সংখ্যা ২৪টি। বাকিগুলি পুকুর বা জলাশয়। ২৯টি ঘাটে থাকছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। তাঁদের সঙ্গে থাকবে নৌকা। যাতে নদীবক্ষে বা জলাশয়ে প্রয়োজন মতো দ্রুত নজরদারি চালানো যায়। এ ছাড়া, বাজেকদমতলা ঘাট এবং রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের জেটিতে মোতায়েন থাকছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর উদ্ধারকারী দল। প্রতিটি দলে ছ’জন করে সদস্য থাকছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
বাজেকদমতলা ঘাট এবং রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের জেটিতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরিও রাখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে ১৪টি ঘাটে দু’জন করে মহিলা পুলিশকর্মী থাকছেন। সূত্রের খবর, গুরুত্বপূর্ণ সাতটি ঘাটে নজর-মিনারের মাধ্যমে চলবে নজরদারি। মজুত রাখা হচ্ছে চারটি কুইক রেসপন্স টিম। স্পিড বোট এবং জেট স্কি-র মাধ্যমেও টহল চলবে।
শনিবার বেলার দিকে জাজেস ঘাট সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, একাধিক বাড়ির প্রতিমা আনা হয়েছে নিরঞ্জনের জন্য। প্রতিমা নামিয়ে চলছে সিঁদুর খেলা। বেহালার এমনই একটি বাড়ির পুজোর এক সদস্য বললেন, ‘‘রীতি মেনে আমাদের পুজোর ঘট নাড়ানোর পরেই বিসর্জন হয়। এ দিনই যে হেতু ঘট নাড়ানো হয়ে গিয়েছে, তাই বিসর্জন হয়ে যাচ্ছে।’’ কালীঘাটের চ্যাটার্জি বাড়ির প্রতিনিধিরা আবার জানান, কোন রীতি মেনে তাঁরা বিসর্জন করবেন, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছিল। শেষে এ দিনই বিসর্জনের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
বাজেকদমতলা ঘাটে হাজির একটি বাড়ির পুজোর প্রতিনিধি বলেন, ‘‘এ বার অন্য রকম পুজো কেটেছে। অনেকেরই মন ভাল নেই। প্রতিমা রেখে দেওয়ার মানে নেই ভেবেই বিসর্জন দিচ্ছি।’’ বিকেলের দিকে শোভাবাজার রাজবাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য বেরোনোয় যানজট সামলানোর দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ অফিসার বললেন, ‘‘বড় সাউন্ড বক্স এবং ডিজে নিয়ে কেউ যাতে বিসর্জন দিতে না যান, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে উপরমহল থেকে। এ ব্যাপারে কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে।’’ ঘাটগুলি এবং সংলগ্ন রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছে হাজারের বেশি অতিরিক্ত পুলিশকর্মী। যা আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy