Advertisement
২৬ অক্টোবর ২০২৪
Bhowanipore Electrocution Death

রেলিং থেকে ঝুলন্ত তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট? কী ভাবে এল তার? ভবানীপুরের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু পুলিশের

শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতায় টানা বৃষ্টি হয়েছে। দুপুরের মধ্যেই শহরের একাধিক রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। অভিযোগ, বিকেলে ভবানীপুরে জলমগ্ন রাস্তা পেরোতে গিয়ে রেলিং থেকে ঝুলন্ত তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন যুবক।

ভবানীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু।

ভবানীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু। —প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ১১:৩৩
Share: Save:

ভবানীপুরে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৫ বছরের যুবকের। সেই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসির তরফেও পুলিশে আলাদা অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে। স্থানীয়দের সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে একটি বাড়ির রেলিং থেকে বিদ্যুৎবাহী তার ঝুলছিল ভবানীপুরের জাস্টিস দ্বারকানাথ রোডে। টানা বৃষ্টির জেরে ওই রাস্তায় জলও জমে ছিল। জল পেরিয়ে হাঁটছিলেন যুবক। সেই সময়ে তার থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতায় টানা বৃষ্টি হয়েছে। দুপুরের মধ্যেই শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রাত পর্যন্ত বৃষ্টি চলায় দিনের অধিকাংশ সময় জল দাঁড়িয়ে ছিল রাস্তাগুলিতে। ভবানীপুরের জাস্টিস দ্বারকানাথ রোডের ছবিও তার ব্যতিক্রম ছিল না। বিকেলে সেখানেই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সৌরভপ্রসাদ গুপ্ত (২৫)। তিনি বিহারের বাসিন্দা। তবে থাকতেন কলকাতাতেই। ভবানীপুরে তাঁদের একটি ভুজিয়ার দোকান রয়েছে। বাবার সঙ্গে যুবকও সেই দোকান চালাতেন। শুক্রবার বিকেলে জল পেরিয়ে দোকানেই যাচ্ছিলেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জলে পড়ে গিয়েছিলেন যুবক। স্থানীয়েরা তাঁকে দেখতে পেয়ে বাঁশ দিয়ে বিদ্যুৎবাহী তারের কাছ থেকে তাঁকে সরান। তার পর তাঁকে উদ্ধার করে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপরঞ্জন বক্সী বলেন, ‘‘দুর্যোগের জন্য আমরা এলাকার বিদ্যুতের খুঁটিগুলি এ বার ভাল করে পরীক্ষা করেছিলাম। যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে পুরসভার কোনও বিদ্যুতের খুঁটি নেই। একটি বাড়ির মিটার বক্স থেকে অবৈধ ভাবে সংযোগ টেনে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। পুলিশ এবং সিইএসসি বিষয়টি দেখছে।’’

আপাতত ভবানীপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সিইএসসির তরফেও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে ওই বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। যে বিদ্যুতের তার ঝুলছিল, তার মাধ্যমে অবৈধ ভাবে বিদ্যুতের সংযোগ টানা হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ভবানীপুরের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কেন্দ্রে একটি মর্মান্তিক ঘটনা, যা এড়ানো যেত। জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবক প্রাণ হারালেন। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর প্রশাসন ব্যর্থ হল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম তথা তৃণমূলের দুর্নীতি আর কত দিন সহ্য করতে হবে মানুষকে? অপশাসনের খেসারত এ ভাবেই দিতে হচ্ছে।’’’ সুকান্তের বক্তব্যের পাল্টা হিসাবে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার একটি দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করতে নেমেছেন। যাদের শাসনে বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে স্টেশন, এয়ারপোর্ট ডুবে রয়েছে, তারা এখানকার ঘটনা সম্পর্কে না জেনে রাজনীতি করতে নেমেছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE