Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

খুদেদের সঙ্গে ভূতেদের আলাপ, সঙ্গী সাহিত্যিক

খুদে শ্রোতাদের সাহিত্যিক জানালেন, অনেক বিখ্যাত মানুষই ভয় পান ভূতে। উদাহরণ দিলেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও কুমার শানুর।

আড্ডা:‌ ভূতের গল্পের আসরে খুদে পাঠকদের সঙ্গে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

আড্ডা:‌ ভূতের গল্পের আসরে খুদে পাঠকদের সঙ্গে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

ঊর্মি নাথ
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২০
Share: Save:

ভূতের গপ্পের আড্ডা। সাহিত্যিকের সঙ্গে হাজির এক ঝাঁক খুদে পাঠক।

বুধবার সন্ধ্যায় সেই আসরের শুরুতেই ধেয়ে এল সঞ্চালকের প্রশ্ন, ‘‘আপনি নিজে ভূত দেখেছেন?’’ শপিং মলে বইয়ের বিপণির অন্দরে অসমবয়সিদের সেই আড্ডা জমে উঠতে আর সময় লাগল না বেশি।

উত্তর দেওয়ার আগে খুদেদের অতি-আপন মিষ্টি ভূতেদের ‘জন্মদাতা’ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ছোটদের উদ্দেশে বললেন, ‘‘আজ যারা এখানে এসেছ, তারা ভুলেও ভেব না আমি তোমাদের চেয়ে অনেক বড়। আমি এখনও তোমাদের মতোই ছেলেমানুষ আছি।’’

সাহিত্যিকের সেই কথা শুনে আনন্দ চকচক করে উঠল খুদেদের চোখ-মুখ। কেটে গেল জড়তাও। গল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে উঠতে শুরু করল একগুচ্ছ কৌতূহলী খুদে হাত। সে সব প্রশ্নে সাহিত্যিকের উত্তরে গল্পের ভূত যেন ফিরে ফিরে আসতে থাকল বই-বিপণির আড্ডা-আবহে।

গত ৫ এপ্রিল ‘আনন্দমেলা’ সংখ্যার প্রচ্ছদ কাহিনির বিষয় ছিল ভূত আর সেই সূত্র ধরেই এই আড্ডার আয়োজন। সেই আসরের ডাকে একরাশ খুদের উপস্থিতিতে ভরে উঠেছিল বই বিপণিটি।

ভূতেদের কি সত্যি বড় বড় দাঁত আর কুলোর মতো কান আছে? ভূতের শরীর কি খুব ঠান্ডা? ভূতেরা কি সব সময়ে অন্ধকারে থাকে? ভূত কি আসলে মানুষ হয়েই জন্মায়? এমন নানা প্রশ্নে ভরে উঠল ঘর।

সাহিত্যিক ফিরলেন প্রথম প্রশ্নে।

জানালেন, তিনি ভূত দেখেননি। কিন্তু ছোটবেলায় একাধিক বার টের পেয়েছেন ভূতের উপস্থিতি। তাঁর দুঃখ, বড়রা মোটেও বিশ্বাস করতে চাইতেন না সে কথা। কিন্তু সেই থেকে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ভূতে। শীর্ষেন্দবাবু বলেন, ‘‘স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন ধ্যান করে ক্ষমতা যদি বাড়ানো যায়, তা হলে পিঁপড়ের হাঁটার শব্দও শোনা যাবে। তরঙ্গের মধ্যে তো কত শব্দ, ছবি ভাসে। আমরা দেখতে পাই না। কিন্তু সেই জন্যই তো আমরা টেলিভিশনে ছবি দেখছি বা ফোনে কথা বলছি।’’ সে ভাবেই তিনি অনুভব করেন অনেক কিছু, যা সাধারণ চোখে ধরা পড়ে না।

খুদে শ্রোতাদের সাহিত্যিক জানালেন, অনেক বিখ্যাত মানুষই ভয় পান ভূতে। উদাহরণ দিলেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও কুমার শানুর। বললেন, ‘‘এক বার বিদেশে গিয়ে সৌরভ হোটেলের ঘরে একা শুতে ভয় পাচ্ছিলেন। শেষে সচিনকে ডেকে আনেন। আর এক বার শুনেছি, কুমার শানু একা থাকতে এতই ভয় পেয়েছিলেন, যে গাড়ির চালককে ডেকে আনেন।’’ হাসির রোল উঠল ঘর জুড়ে। তার পরে তিনি বললেন, ‘‘চোখের সামনে দেখলে বোধহয় অজ্ঞান হয়ে যেতাম। তবে আমার গল্পের ভূতগুলোর ভয় দেখানোর জন্য জন্ম নয়। তারা অনেকটা বন্ধুর মতো।’’

আড্ডা গড়িয়ে পৌঁছল কঠিন প্রশ্নে। ‘‘ভূতের ভয় জয় করব, নাকি সব রকমের ভয়কে জয় করব?’’ হাসি-ঠাট্টার মাঝে থেমে গেলেন সাহিত্যিক। উত্তরে বললেন, ‘‘ভয়কে জয় করা ঠিক। আবার কোনও কোনও জিনিসকে ভয় পাওয়াও ঠিক। যেমন অন্যায়কে, দুষ্ট লোককে। এদের থেকে ভয় পেয়ে দূরে সরে থাকা ভাল। এ ক্ষেত্রে ভয় পাওয়াটা বন্ধু হতে পারে। অকারণ ভয় অবশ্য দুবর্লতা। ভূতে বিশ্বাস করার দরকার নেই। কিন্তু মনটা খোলা রেখ।’’ শেষ হল আড্ডা। শুরু হল ভূতের গল্প পাঠ।

অন্য বিষয়গুলি:

Shirshendu Mukhopadhyay Ghost Story Children
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy