৫০ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী সজল ঘোষ। ফাইল চিত্র
শহরের তিনটি ওয়ার্ডে জয় নিয়ে খানিকটা নিশ্চিন্ত ছিল বিজেপি। কিন্তু সেই তালিকায় ছিলেন না ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সজল ঘোষ। সজল-হীন তালিকার আশা পূর্ণ করে জিতেছেন মীনাদেবী পুরোহিত, বিজয় ওঝা যথাক্রমে ২২, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। কিন্তু ৪২ ধরে রাখতে পারল না বিজেপি। হেরে গেলেন সুনীতা ঝাওয়ার। বরং, এল ৪১ ও ৫০।
গেরুয়া শিবির ভেবেছিল, জয় এলেও আসতে পারে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে। বলা যেতে পারে, ৫০:৫০ ধরা ছিল ৫০-এর ভাগ্য। শেষ পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডে জিতল বিজেপি। জিতলেন দীর্ঘ সময় ওই ওয়ার্ডে কংগ্রেসের কাউন্সিলর থাকা প্রদীপ ঘোষের ছেলে সজল। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা সজলকে লেবুতলা চেনে ‘দেবু’ নামে। সেই প্রদীপ-পুত্র দেবুই পদ্মের দীপ জ্বালালেন ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে।
সজল বিজেপি-তে খুব বেশি দিন নন। বাবা প্রদীপ এক সময়ে ছিলেন কংগ্রেসের প্রথমসারির নেতা। রাজনৈতিক শিবির বদলে প্রথমে তৃণমূলে এবং পরে বিজেপি-তে যোগ দেন। একই পথে হাঁটেন সজলও। তবে একটু পিছনে পিছনে। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে ফেব্রুয়ারি মাসে সজল যোগ দেন বিজেপি-তে।
বয়সে নবীন হলেও দলবদলে এগিয়েই সজল। সিটি কলেজে পড়াশোনা করার সময়ই ছাত্র রাজনীতিতে যোগ। তার পর ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি হন। পরবর্তীকালে বাবার সঙ্গেই তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। কলকাতা পুরসভার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে উপনির্বাচনে কাউন্সিলর পদে লড়েছিলেন তৃণমূলের। দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় আবার কংগ্রেসে ফিরে গিয়েছিলেন বাবার হাত ধরে। পরে ফের ২০১২ সালে তৃণমূলে ফিরে আসেন সজল। এবার বিজেপি-র টিকিটে কাউন্সিলর হলেন।
একটা সময় পর্যন্ত মনে করা হয়েছিল বিধানসভা নির্বাচনেই বিজেপি-র টিকিট পাবেন সজল। কিন্তু তা হয়নি। তবে বিধানসভা নির্বাচনের পরে নতুন করে প্রচারের আলোয় আসেন তিনি। গত ১২ অগস্ট মুচিপাড়া থানা এলাকায় একটি গোলমাল হয়েছিল। এমন অভিযোগ ওঠে যে, সেখানে সজল ‘উস্কানি’ দিয়েছিলেন। যার ভিত্তিতে পরের দিন কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করে সজলকে। সেই গ্রেফতারিও ছিল নাটকীয়তায় ভরা। বাড়ির বন্ধ দরজার ভিতর থেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন সজল। সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে দরজা ভেঙে সজলকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
সে মামলা এখনও আদালতে। তবে সেই ঘটনা নতুন করে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসে সজলকে। ভবানীপুর উপনির্বাচনে বিজেপি-র হয়ে সক্রিয়ও হন তিনি। তার পরেই ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হন। তবে তার পরেও গোলমালের অভিযোগ ওঠে। সজলের কার্যালয় বন্ধ করে দেয় পুলিশ। কলকাতার পুরভোটে অন্যতম টক্করের কেন্দ্র হয়ে ওঠে ৫০ নম্বর ওয়ার্ড। শেষ পর্যন্ত সেই টক্করে শেষ হাসি হাসলেন সজলই। লেবুতলার দেবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy