গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আমার বাড়ির সামনেই চার রাস্তার মোড়। অহরহ সেখান দিয়ে দ্রুত গতিতে নানা ধরনের গাড়িঘোড়া ছুটছে। পাশেই পাঠভবন স্কুল। শিক্ষার্থী, পথচারী এবং স্থানীয় মানুষদের নিরাপত্তা চাই। এই মোড়ে চাই একটি ট্রাফিক সিগন্যাল বা ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা। বড়-ছোট-মেজ-সেজ সব রকমের কেবল বা তারগুলো মাটির নীচ দিয়ে যাক, উপর দিয়ে নয়।
চার মাথা রাস্তার মোড়ে চা, পান বিড়ির দোকান। সারাদিন নানা বয়সের বহু মানুষের সেখানে নিত্য আনাগোনা। এটাই রাতে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পান, গুটখার পিক, খাবারের অবশিষ্টাংশ আবর্জনা হয়ে জমে থাকে রাস্তার ধারে। রাতে যখন দোকান থেকে বাড়ির পথে ফিরি, মনে হয় যেন নরক! হাঁটতে গিয়ে গা গুলিয়ে ওঠে। আমি চাই পাড়ার রাস্তা ঠিকমতো সাফসুতরো থাক। আমি চাই আমার শহর জুড়েই হোর্ডিং দূষণ বন্ধ হোক।
পানীয় জল নিয়ে আপাতত কোনও সমস্যা নেই। জল নিয়মিত আসে আমাদের সব বাসিন্দার বাড়িতেই। তবে সহ-নাগরিক অনেকের কাছে শুনেছি, তাঁদের এলাকার জলে আয়রন বেশি। যাঁদের পক্ষে সম্ভব পানীয় জল পরিশুদ্ধ করে নেন। কিন্তু সবাই তো তা করে উঠতে পারেন না। আমি চাই পুরসভা এই দিকটাতেও গুরুত্ব দিয়ে নজর দিক।
নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও কোনও অভিযোগ নেই। সবটাই যথাযথ। বর্ষায় আমাদের বাড়ির সামনে বা পাড়ায় কোনও দিন জল জমতে দেখিনি। তবে আমার এলাকার বাইরে তো এমন সব পাড়াও আছে, যেখানে বৃষ্টি হলেই ভয়ে ভয়ে থাকেন লোকজন। আমি চাই গোটা শহরের নিকাশি ব্যবস্থা যেন ভাল হয়। ভবিষ্যতের কথা ভেবে পরিকল্পনা করা হোক।
রাস্তায় আলো আছে। তবে যেহেতু চার মাথার মোড়, তাই অঞ্চলটি আরও একটু আলোকিত হলে ভাল হয়। এতে পথচারী এবং গাড়িচালক সবারই সুবিধে হবে। আমি চাই আমার পাড়া মোড়া থাকুক ঝলমলে আলোয়। কলকাতা শহরে অবশ্য আলো আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
কলকাতার মধ্যে একটা নিরাপত্তা আছে, যা আমাকে রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে দেয়।
সামনে কলকাতা কর্পোরেশনের ইলেকশন। ভাবছিলাম যিনি নির্বাচিত মেয়র হবেন, তিনি যদি আমার সামনে হঠাৎই ভূতের রাজার মতো উদয় হয়ে আমাকে বর দেন? কী ভালই না হয় তা হলে...
কী চাইব? আমি বাবা এক-দুই-তিন, না, চারটে বর চাইব—
১) কলকাতায় পথকুকুর আর বেড়ালরা নিরাপদ হোক। কাক-চিলদের খাবারের ব্যবস্থা করা হোক। অবোলা প্রাণিদের উপর নির্মম অত্যাচার অবিলম্বে বন্ধ করে তাদের পক্ষে আইন আরও কঠোর হোক।
২) গঙ্গায় ময়লা আর আবর্জনা ফেলা একেবারে বন্ধ হোক।
৩) প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায়, বৃদ্ধ-শিশুদের জন্য আলাদা করে পার্ক হোক, আর পোষ্যদের জন্য হোক আলাদা পার্ক।
৪) খেলার মাঠগুলোয় ছোট ছোট ফ্লাড-লাইটের ব্যবস্থা হোক, যাতে দিনের আলো না থাকলেও, খেলা বন্ধ না হয়।
এ ছাড়া,আমার কলকাতা এমনিই সুন্দর। আর কিছু চাই না।
যেমন চলছে, চলুক...
(সংকলক: উপালি মুখোপাধ্যায়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy