ফাইল চিত্র।
পুরসভার কোষাগারের অবস্থা সঙ্গিন। সব মিলিয়ে সাতশো কোটি টাকা দেনা পুরসভার মাথায়। গত দু’বছরে করোনা অতিমারির কারণে রাজস্ব সংগ্রহ তলানিতে ঠেকেছে। কলকাতার ৩৯তম মেয়র হিসাবে মঙ্গলবার শপথ নেওয়ার পরে ফিরহাদ হাকিম এই আর্থিক সঙ্কটের কথাই উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘যখন শপথ নিচ্ছি, ঠিক সেই সময়ে বিল আর দেনা মিলিয়ে পুরসভার মাথায় সাতশো কোটি টাকার বোঝা রয়েছে। তবে বিশ্বাস করি, সবাই মিলে আয় বাড়াতে সক্ষম হব।’’
পুরভবনের ভিতরের লনে নীল-সাদা মঞ্চে বসে এ দিন শপথ নেন ফিরহাদ। মেয়র ও পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়কে শপথবাক্য পাঠ করান প্রোটেম স্পিকার রামপিয়ারি রাম। এর পরে প্রত্যেক মেয়র পারিষদকে শপথবাক্য পাঠ করান ফিরহাদ নিজে। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ, কুণাল সরকার এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুরা। এ দিন বিরোধীদের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র তিন কাউন্সিলরই।
শপথ নেওয়ার পরে মেয়র ও মেয়র পারিষদদের দফতরও ঘোষণা করা হয়। ‘সম্পত্তিকর মূল্যায়ন ও সংগ্রহ’ (অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড কালেকশন) বিভাগের দায়িত্ব পূর্বতন পুরবোর্ডে অতীন ঘোষ সামলেছেন। এ বার থেকে ওই দায়িত্ব মেয়রই সামলাবেন। সেই সঙ্গে পার্সোনেল দফতরের দায়িত্বও মেয়র পারিষদ অতীনের থেকে নিয়ে অন্য মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, অতীনের উপর থেকে কাজের ভার যে কমানো হল, সেটা বলাই যায়।
জনগণের সুবিধার্থে পুরসভার সমস্ত পরিষেবা অ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া যাবে বলেও এ দিন ঘোষণা করেন ফিরহাদ। নতুন মেয়র জানিয়েছেন, বিল্ডিং প্ল্যান, নিকাশি ও জল সরবরাহের সংযোগ, মিউটেশন, লাইসেন্স পরিষেবা, জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র প্রদানেও অ্যাপ-নির্ভর পরিষেবা আগামী দু’বছরের মধ্যে চালু করা হবে। আরও একটি পুর উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন ফিরহাদ। সেটি হল, ‘টক টু মেয়র’-এর মতোই সরাসরি মেয়রকে সমস্যা জানানো যাবে। তবে হোয়্যাটসঅ্যাপে। এর নাম হয়েছে ‘শো ইয়োর মেয়র’। ফিরহাদ বলেন, ‘‘কলকাতা পুর এলাকার যে কোনও জায়গার জঞ্জাল, নিকাশি, রাস্তা-সহ যে কোনও পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ থাকলে তার ছবি-সহ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে (৯৮৩০০৩৭৪৯৩) পাঠালে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হবে। পরিষেবা স্বাভাবিক হলে তার ছবিও অভিযোগকারীকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’
নতুন মেয়রের কথায়, ‘‘পুরসভা একটা টিম। আমরা সবাই সেবক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আশা নিয়ে জনগণের জন্য কাজ করতে পাঠিয়েছেন, সেই প্রত্যাশা পূরণে দায়বদ্ধ আমরা। সমস্ত কাউন্সিলর মিলে শহরবাসীর স্বার্থে কাজ করতে চাই। শহরের কাঠামোগত এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষাতেও মনোযোগী হতে হবে।’’ সাংবাদিকদের তিনি জানান, করোনাকালে খরচ প্রচুর বেড়েছে। সেফ হোম, অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য অনেক খরচ হয়েছে। অথচ, কর সংগ্রহ কমেছে। করোনার সময়ে ট্রেজ়ারি বন্ধ ছিল। ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে পুরসভা। প্রচুর মানুষ কর দিতে আসছেন। পুরসভাও রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে তৎপর হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy