পার্ক সার্কাস বাজারের ভাঙাচোরা ভবন সংস্কারের আগে দোকানদারদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনায় আরও এক ধাপ এগোল কলকাতা পুরসভা। এই প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট (ডিপিআর) অনুমোদনের জন্য পাঠানো হচ্ছে নগরোন্নয়ন দফতরে। পুরসভা সূত্রের খবর, রিপোর্টের ছাড়পত্র মিললেই ই-টেন্ডার ডাকার কাজ শুরু হবে।
পার্ক সার্কাস বাজারের অবস্থা বহু দিন ধরেই বেহাল। ছাদে ফাটল, দেওয়ালে ধস— সেই অবস্থাতেই দোকানদারেরা ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে পুরসভা সিদ্ধান্ত নেয়, বাজার ভেঙে নতুন করে তৈরির আগে দোকানদারদের অস্থায়ী বাজারে সরানো হবে। পুরসভার বাজার দফতরের মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, পার্ক সার্কাস বাজারের ভবনটির ভগ্ন দশা হওয়ায় সেটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘যত দিন না এই কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে, তত দিন সেখানকার দোকানদারদের পার্ক সার্কাস ময়দানে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। কাজ শেষ হলে তাঁদের নতুন বাজারে ফেরানো হবে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৮৫ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে তৈরি হবে নতুন অস্থায়ী বাজার। নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। তবে, অতিরিক্ত জরুরি খরচের (কনটিনজেন্সি) জন্য আলাদা বরাদ্দ এখনও রাখা হয়নি।
২০২৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মেয়র পরিষদের বৈঠকে অস্থায়ী বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ১২ জুন বাজার বিভাগের ডিজি অস্থায়ী বাজারের নকশা জমা দেন। সেই নকশা খতিয়ে দেখে বরো ইঞ্জিনিয়ার ও বাজার বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিটি দোকানে রোলিং শাটার বসানো হবে। বাজার চত্বরে জল জমা আটকাতে তৈরি হবে বিশেষ নিকাশি ব্যবস্থা। ভাঙা বাজারের ইটও কিছু কাজে লাগানো হবে।
চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই প্রকল্পের ব্যয় অনুমোদন করেন। ১৪ জানুয়ারি ওয়ার্কস কমিটিতেও অনুমোদন মেলে। এখন নগরোন্নয়ন দফতরের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছে পুরসভা। অনুমোদন পেলেই ই-টেন্ডার ডাকার কাজ শুরু হবে এবং দ্রুত নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি, বিদ্যুৎ ও আলোর জন্য আলাদা বাজেটও তৈরি করা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। আলো বিভাগের সঙ্গে সেই কাজ এগোচ্ছে। এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘ঝুঁকিপূর্ণ বাজারটি দ্রুত ভেঙে ফেলা হবে। দোকানিদের দ্রুত নতুন অস্থায়ী বাজারে সরানো হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)