ছবি: সংগৃহীত।
কোভিড পরিস্থিতিতে মন্দার ধাক্কা সামলে বিজ্ঞাপনী খাতে আয় বাড়ানোর নতুন পথ দেখছে কলকাতা মেট্রো। স্মার্ট কার্ডের পরে এ বার বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য মেট্রো স্টেশনের নাম এবং টোকেন ভাড়া দেওয়ার পথে এগোচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ের নিরিখে দিল্লি বা বেঙ্গালুরু মেট্রোর তুলনায় অনেকটা দেরিতে দৌড় শুরু করেও ক্রমশ সামনের সারিতে উঠে আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে কলকাতা মেট্রো। চলতি অর্থবর্ষে বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের তালিকায় পশ্চিম রেল এবং মধ্য রেলের পরেই কলকাতা মেট্রোর নাম রয়েছে। এ শহরে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরত্বে ২৪টি স্টেশন এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ৬ কিলোমিটার পথের ৭টি স্টেশনে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ করে দিয়ে আয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে কলকাতা মেট্রোয় সংযোজিত হতে চলা বরাহনগর এবং দক্ষিণেশ্বর স্টেশনকেও যথেষ্ট সম্ভাবনাময় বলে মনে করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
সেই সঙ্গে আয় বাড়াতে টোকেনেও বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা ভাবছেন কর্তৃপক্ষ। অতিমারি আবহে বর্তমানে এই ব্যবস্থা বন্ধ থাকলেও ভবিষ্যতে যখন ফের টোকেন চালু হবে, তখন তার এক পিঠে বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে বলে ভাবা হয়েছে। এর ফলে বাড়বে আয়। সেই সঙ্গে কোনও কোনও যাত্রী আরএফআইডি-সহ (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ডিভাইস) মূল্যবান টোকেন জমা না দিয়ে চলে গেলে তার জেরে যে লোকসান হয়, সেই পরিমাণও কিছুটা কমানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে হুগলি, জেলায় জেলায় পৌঁছচ্ছে কোভিড টিকার ডোজ
আরও পড়ুন: আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল কুণাল, পাল্টা দাবি শোভনের
আগামী দু’বছরের মধ্যে শহরের মেট্রোপথ সম্প্রসারণের মাধ্যমে মেট্রোর মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ বদলের আশা করছেন কর্তৃপক্ষ। বর্তমান মেট্রোপথের সঙ্গে আরও কয়েকটি নতুন রুটে মেট্রো চালু হয়ে গেলে শহরে দৈনিক মোট যাত্রীর সিংহভাগই বহন করবে মেট্রো। যোগাযোগের জন্য অধিকাংশ যাত্রীই তখন কয়েকটি নতুন স্টেশনকে ব্যবহার করতে শুরু করবেন, সেই সম্ভাবনার কথা ভেবেই উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ১১টি স্টেশনের নাম ভাড়া দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবিত মেট্রো স্টেশনের নামের আগে বা পরে নির্দিষ্ট সংস্থা বা পণ্যের নাম বসানো যাবে। এই তালিকায় রয়েছে করুণাময়ী, সেন্ট্রাল পার্ক, সিটি সেন্টার, বেঙ্গল কেমিক্যাল, ফুলবাগান, চাঁদনি চক, শোভাবাজার সুতানুটি, বেলগাছিয়া এবং বরাহনগর-সহ মোট ৯টি মেট্রো স্টেশন। এ ছাড়াও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সল্টলেক স্টেডিয়াম এবং সেক্টর ফাইভ স্টেশনের নাম ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়া আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রস্তাবিত স্টেশনগুলির মধ্যে বরাহনগর এবং চাঁদনি চক স্টেশনকে ভিড়ের নিরিখে সম্ভাবনাময় মনে করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
স্টেশনের নাম ভাড়া দেওয়ার প্রাথমিক শর্তাবলীতে ঠিক হয়েছে, নির্দিষ্ট বাণিজ্যিক সংস্থাকে একটি স্টেশনের নামের আগে বা পরে তাদের পণ্য বা সংস্থার নাম বসাতে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য স্টেশন চত্বরে জায়গা ছেড়ে দেওয়া হবে, যেখানে ওই সংস্থা বিজ্ঞাপন বা ভিডিয়ো দেখানোর সুযোগ পাবে। পাঁচ বছরের জন্য স্টেশনভিত্তিক দরপত্র করা হয়েছে। তবে মেট্রোর ওয়েবসাইট, কামরায় ঘোষণা, মেট্রোর অ্যাপ বা সংস্থার মানচিত্রে কোথাও বরাতপ্রাপ্ত বাণিজ্যিক সংস্থার নাম এখন ব্যবহার করা যাবে না। যে সব মেট্রো স্টেশনে নামের সঙ্গে মনীষী বা বিশিষ্টদের নাম জড়িয়ে আছে, সেখানে অবশ্য আপাতত এই নাম বদলের ভাবনা কার্যকর করা হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে মেট্রো রেলের চিফ অপারেশন্স ম্যানেজার সাত্যকি নাথ বলেন, ‘‘নতুন পরিকল্পনায় ভাল সাড়া মিলছে। যাত্রী ভাড়া বহির্ভূত খাতে আয় বৃদ্ধি হলে মেট্রোর আর্থিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।’’ পরিকল্পনা রূপায়ণের দায়িত্বে আছেন মেট্রো রেলের সিনিয়র ট্রান্সপোর্টেশন ম্যানেজার কৌশিক মিত্র।
মেট্রো সূত্রের খবর, কলকাতা মেট্রোর একাধিক স্টেশনে যাত্রীদের আনাগোনা অনেকটাই বেশি। দিল্লি, মুম্বইয়ের তুলনায় এই শহরের মেট্রোপথের দৈর্ঘ্য অনেকটা কম হলেও একাধিক স্টেশনে যাত্রী-সংখ্যা অত্যধিক বেশি হওয়ায় এই পরিকল্পনায় সাফল্য মিলছে বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy