জেমস ফার্গুসনের অঙ্কনে পুরীর রথযাত্রা। ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস।
জগন্নাথ মাহাত্ম্যকে কেন্দ্র করে বাংলায় গড়ে ওঠা ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সবচেয়ে বড় উদ্যাপন রথযাত্রা। জগন্নাথ দর্শনের জন্য বাংলা থেকে তীর্থযাত্রীদের ঢল নামত সে কালেও, আজও সে ধারা অব্যাহত। আঠারো-উনিশ শতকে এই যাত্রার নিয়ন্ত্রণ থাকত এক শ্রেণির বৃত্তিজীবীর হাতে। তাদের বলা হত ‘সেথুয়া’ বা ‘সেথো’। সাহেবরা এঁদের বলতেন ‘পিলগ্রিম হান্টার’। পুরীর মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত এই সেথুয়ারা এক হাতে গোলপাতার ছাতা, আর পিঠে বোঁচকা নিয়ে বাংলার গ্রামে শহরে মফস্সলে ঘুরে বেড়াতেন চৈত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত। দুর্ঘটনা ও মহামারিপ্রবণ তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পুরীর বদনামের ভয় ভাঙিয়ে, মূলত অভিভাবকহীন মহিলা ও বিশেষত বিধবা নারী এবং আশাহীন মানুষের মনে দেবদর্শনের নামে আবার নতুন করে বাঁচার স্পৃহা জাগিয়ে তুলতেন এই ‘সেথুয়া’ বা ‘সেথো’রা।
কিছু যাত্রী কলকাতা থেকে গেঁওখালি হয়ে স্টিমার বা নৌকোয় যেতেন কটক। অথবা কলকাতা থেকে জাহাজে চাঁদবালি, সেখান থেকে খালপথে কটক। কটক থেকে ‘জগন্নাথ সড়ক’ ধরে পুরী। চাঁদবালির পথেই ১৮৮৭-তে ডুবে গিয়েছিল ‘স্যর জন লরেন্স’ নামের এক জাহাজ, যার স্মৃতিফলক আজও দেখা যায় কলকাতার ছটুলাল ঘাটের এক কোণে। তবে অধিকাংশ যাত্রী হেঁটে যেতেন মেদিনীপুর হয়ে কটক-ভদ্রকের রাস্তা ধরে। ‘হাতে কড়ি পায়ে বল, তবে চল নীলাচল’, খুব প্রচলিত ছিল এই বাংলা প্রবাদবাক্য। দুর্ঘটনা বা পথশ্রমের ক্লেশ তো ছিলই, সেই সঙ্গে অখাদ্য খাবার আর অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থার ফলে অনেকেরই শেষ পরিণতি হত বেওয়ারিশ লাশ।
সুরেশচন্দ্র সমাজপতির গল্প ‘তীর্থের পথে’, লালবিহারী দে-র ‘আলঙ্গের তীর্থযাত্রা’ থেকে সেথুয়াদের কাজের খানিকটা আন্দাজ পাওয়া যায়। সেথুয়া বা সেথোরা ছিলেন পুরীর মন্দিরের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত। যত বেশি তীর্থযাত্রী, তত বেশি আয়। তীর্থকর আদায়কারী, রাত্রিবাসের চটির মালিক, মন্দিরের পান্ডা, নদী পার করার মাঝি থেকে শুরু করে ছোটখাটো জিনিস বিক্রেতা— সকলেই মুখিয়ে থাকতেন তীর্থযাত্রীদের নিংড়ে আরও দু’পয়সা করে নেওয়ার সুযোগ নিতে। অবস্থাপন্ন গৃহস্থ ধার-কর্জ করে যাত্রার ঝক্কি সামাল দিতেন। কিন্তু দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের হত চরম দুর্গতি। দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণের সোমপ্রকাশ পত্রিকা সেথোদের নির্মম কার্যপ্রণালী নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল। উনিশ শতকের একেবারে শেষে শ্রীক্ষেত্রে রেল পরিষেবা শুরু হল। এর ফলে তীর্থযাত্রীদের পক্ষে ‘পুরুষোত্তম যাত্রা’ আর আগের মতো বিপদসঙ্কুল রইল না। এর সঙ্গে ১৯০৩ সালে বিজ্ঞানসাধক চুণীলাল বসুর লেখা পুরী যাইবার পথে-র মতো বই মানুষকে সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা শুরু করল। অন্য দিকে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জোড়াসাঁকোর ধারে জানাচ্ছে, জগন্নাথ দর্শনের সঙ্গে পুরীর নিসর্গ ও স্থাপত্যশিল্প নতুন শতকের যাত্রীকে টানছে, বদলাতে শুরু করেছে তীর্থযাত্রার রূপ। রথযাত্রা আসছে, একুশ শতকীয় উদ্যাপনের আবহে বাঙালির পুরী-যাত্রার ইতিহাসকে ফিরে দেখারও সুযোগ বইকি!
জন্মশতবর্ষে
“জ্ঞানকে সদর্থে মনের অংশ করে তোলাই মননের যথার্থ কাজ, যে জ্ঞান মানুষকে কিছুমাত্র পরিবর্তিত করে না সেটা তার অন্তরের বস্তু হয়ে ওঠেনি,” বলতেন অধ্যাপক অম্লান দত্ত (ছবি)। অধ্যাপক, উপাচার্য, অর্থনীতিবিদ পরিচিতির পারে তাঁর প্রজ্ঞাদীপ্ত মনটি বাঙালির সম্পদ। আজ তাঁর জন্মদিন, জন্মশতবর্ষেরও শুরু (জন্ম ১৭ জুন ১৯২৪), রেখা চিত্রম সল্টলেক ও এশিয়াটিক সোসাইটি কলকাতা উদ্যাপন করছে একত্রে। আজ বিকেল ৫টায় সোসাইটির সল্টলেক ক্যাম্পাসে রাজেন্দ্রলাল মিত্র ভবনে ‘অধ্যাপক অম্লান দত্তের চোখে রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধী’ বিষয়ে বলবেন আশীষ লাহিড়ী; প্রকাশিত হবে পাঁচ খণ্ডে সিলেক্টেড ওয়র্কস অব প্রফেসর অম্লান দত্ত (প্রকা: দিব্য জীবন ফাউন্ডেশন শিলং), অম্লান দত্তের প্রথম প্রকাশিত বই ফর ডেমোক্রেসি-ও (প্রকা: রেডিয়্যান্স পাবলিকেশন) প্রকাশ পাবে নতুন করে। দেখানো হবে অরুণকুমার চক্রবর্তীর করা তথ্যচিত্র মোনোলগ: অম্লান দি আননোন প্ল্যানেট।
ভাবনার রসদ
আ ডান্স অব দ্য ফরেস্টস— বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে জ্বলন্ত প্রতিবাদ। নাইজিরিয়ার নাট্যকার উলে সোইংকা-র এ নাটক আফ্রিকার নিজস্ব জাদুবাস্তবতা, যার মধ্যে আসলে লুকিয়ে ‘উপনিবেশিক অত্যাচার, লুণ্ঠন এবং তার পাল্টা নিজস্ব প্রতিরোধ’, লিখেছেন ব্রাত্য বসু। সোয়িংকার দ্য সোয়াম্প ডুয়েলার্স-এর স্থানীয়করণ তাঁরই: বাদা, প্রকাশ পেল তাঁর সম্পাদিত ব্রাত্যজন নাট্যপত্র-এর সাম্প্রতিক সংখ্যায় (প্রকাশক: কালিন্দী ব্রাত্যজন)। প্রস্তাবনায় নাইজিরীয় নাট্যকারকে নিয়ে তাঁর লেখাটি অবশ্যপাঠ্য; ক্রোড়পত্র দু’টিতেও ভাবনার রসদ, ‘বাংলা নাট্যসমালোচনা’ নিয়ে সম্পাদক কথা বলেছেন বিশিষ্ট সমালোচকদের সঙ্গে, অন্যটিতে অঞ্জন দত্তের সঙ্গে তাঁর থিয়েটারের কাজ নিয়ে। নাটক, অনুবাদ-নাটকের সঙ্গে আছে প্রবন্ধও।
গানের দিন
আসছে ২১ জুন, বিশ্ব সঙ্গীত দিবস। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নৃত্য নাটক সঙ্গীত ও দৃশ্যকলা আকাদেমির নিবেদনে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির উদয়শঙ্কর কক্ষে দুপুর দু’টোয় গীতগোবিন্দ-এর পদাবলি গাইবেন অনাথবন্ধু ঘোষ। রামমোহন লাইব্রেরি হলে সাড়ে ৫টায় সর্বভারতীয় সঙ্গীত ও সংস্কৃতি পরিষদের আয়োজন, একক পরিবেশনে সৈকত মিত্র চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত শমীক পাল মেধা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। শোভাবাজার নাটমন্দিরে সন্ধ্যা ৬টায় সৃষ্টি পরিষদ-এর উদ্যোগে ‘বাংলা গানের আসর: রামপ্রসাদী থেকে সলিলগীতি’— টপ্পা, রামপ্রসাদী, কীর্তন, রাগপ্রধান, পঞ্চকবির গান, আধুনিক, ছায়াছবির গানে নবীন শিল্পীরা। বিকেল ৪টায় জ্ঞান মঞ্চ মেতে উঠবে ভাওয়াইয়া, রাভা-সহ লোকগানের সুরে, বাংলানাটক ডট কম-এর উদ্যোগ।
তথ্যচিত্রে থিয়েটার
১৯৪৮-এ ‘বহুরূপী’র প্রতিষ্ঠা, গ্রুপ থিয়েটারের পথ চলা শুরু। গিরিশ বা শিশির-যুগ, পেশাদার রঙ্গালয়, গণনাট্যের কাল... সবই তো বাংলার থিয়েটার-ইতিহাসের অংশ, কে আজ চর্চা করে সেই ইতিহাস! সেই ভাবনা থেকেই তথ্যচিত্র-নির্মাতা শান্তনু সাহার উদ্যোগে, ‘অশোকনগর নাট্যমুখ’-এর ব্যবস্থাপনায় তাদের থিয়েটার স্পেস ‘অমল আলো’য় ১৬-১৮ জুন বিকেল ৫টায় চলছে অন্য রকম তথ্যচিত্র উৎসব, ‘ক্যানভাসে রঙ্গালয়’। গৌতম ঘোষ, রাজা সেন, অসিত বসু ও শান্তনু সাহার তৈরি পাঁচটি তথ্যচিত্র— ইন সার্চ অব থিয়েটার, গ্লিম্পসেস অব আ জিনিয়াস, লেট দেয়ার বি লাইট, বিহাইন্ড দ্য কার্টেন ও থিয়েটার মন আমুর— উৎপল দত্ত, শম্ভু মিত্র, তাপস সেন, বিভাস চক্রবর্তী ও অশোক মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে। কলকাতা কি অপেক্ষাতেই থাকবে?
মঞ্চে আবার
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের চিলেকোঠার সেপাই থেকেই কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রের প্রথম নাটক, সমীর দাশগুপ্ত গৌতম হালদার খালেদ চৌধুরী স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত প্রমুখের যৌথতায়। প্রথম মঞ্চস্থ হয় ১৯৯৭-এ, ভারতের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী উদ্যাপনে। ছাব্বিশ বছর পেরিয়ে কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্র ফের তৈরি করছে সাড়া জাগানো এ নাটক: পুরনো প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত প্রয়াত শিল্পীদের স্মৃতিতে, এবং দুই দেশের স্বাধীনতার পঁচাত্তর ও পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে। মঞ্চ, সঙ্গীত, আলোক পরিকল্পনায় প্রয়াত গুণিজনের ভাবনা অনুসৃত; পুনরুদ্ধার হয়েছে স্বাতীলেখা-কৃত সঙ্গীত। আগামী ২৫ জুন সন্ধেয় অ্যাকাডেমি মঞ্চে দেখা যাবে এ নাটক, দলের সাতাশতম জন্মদিনে। বিকেল ৩টেয় নতুন নাটক ভোরের বারান্দা।
জীবন যেমন
২০২০ ও ’২১, বছর দু’টিকে ইতিহাস মনে রাখবে অতিমারির স্মৃতি-অনুষঙ্গে, এ আজ স্বীকৃত সত্য। মৃত্যু, শোক, ব্যক্তি ও সমষ্টির দোষারোপ, তর্ক, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব... সব পেরিয়ে থেকে যাবে সেই সব ‘ডকুমেন্টেশন’ও, তথ্যে লেখায় ছবিতে যা ধরে রেখেছেন সাংবাদিক, আলোকচিত্রী, শিল্পীরা। কোভিডকালে ‘এনসিআর’ অঞ্চলে আলোকচিত্রী অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের তোলা এমনই বহু ছবি থেকে বাছাই ৬৪টি নিয়ে তৈরি একটি ‘ফোটো এসে’র সাক্ষী থাকল কলকাতা, অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এর নর্থ গ্যালারিতে, গত ৯ থেকে ১২ জুন। লকডাউন ঘোষণার পর বাড়িমুখী মানুষের ভিড়, পরিযায়ী শ্রমিকদের পথ হাঁটা, মাস্ক-মুখে বিয়ের আসরে বর-কনে, অতিমারির দেওয়ালচিত্র (ছবিতে), মৃতদেহের গণদাহের ছবি মনে করায় কোন বিভীষিকা পেরিয়ে এসেছে এ দেশ, এই বিশ্ব।
আষাঢ়স্য...
স্বামী বিবেকানন্দের কণ্ঠস্থ ছিল মেঘদূত, কুমারসম্ভব। বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ থেকে বুদ্ধদেব বসু, সমর সেন, শক্তি চট্টোপাধ্যায়... মহাকবি কালিদাসকে আত্মস্থ করে লিখেছেন কবিতা, প্রবন্ধ। মেঘদূত বাংলায় অনুবাদ হয়েছে বহু বার। যে মন্দাক্রান্তা ছন্দের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি এই কাব্য, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ‘যক্ষের নিবেদন’ কবিতায় তাকে সার্থক ভাবে বাংলায় রূপ দিয়েছিলেন। ‘আষাঢ়স্য প্রথমদিবস’ উদ্যাপনে আজ সন্ধ্যা ৭টায় রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার গোলপার্ক, ‘ঋতচ্ছন্দ’ ও লেক কালীবাড়ির যৌথ উদ্যোগে হবে আন্তর্জাল-অনুষ্ঠান, ‘কালিদাস ও বঙ্গসংস্কৃতি’। থাকবেন স্বামী সুপর্ণানন্দ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী অজয় ভট্টাচার্য সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় মন্দাক্রান্তা সেন নিতাইচন্দ্র বসু-সহ বিশিষ্টজন। প্রকাশিত হবে মন্দাক্রান্তা ছন্দে পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেঘদূত-এর কাব্যানুবাদ মন্দাক্রান্তায় মেঘদূত (প্রকাশক: লেক কালীবাড়ি)। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মের সার্ধশতবর্ষ স্মরণে তাঁর আঁকা নির্বাসিত যক্ষ (ছবি) উঠে এসেছে প্রচ্ছদে। অনুষ্ঠানটি লাইভ দেখা যাবে ‘ঋতচ্ছন্দ’-এর ফেসবুক পেজে।
ঝর্না কলম
‘ডট পেন’-এর একচ্ছত্র জমানায় ‘ফাউন্টেন পেন’ বা ঝর্না কলমে আগ্রহ কি ফিরে আসছে? এ শহরের ঝর্না কলম-উৎসাহীদের তেমনই মত। কি-বোর্ড ও ডট পেনের বহুলব্যবহারে হাতের লেখা খারাপ হওয়া, বা আর্থারাইটিসের সমস্যায় হাতে তুলে নিতে বলা হচ্ছে ঝর্না কলম। পুনর্ব্যবহারযোগ্য, তাই পরিবেশবান্ধব হিসাবেও তার গুরুত্ব বড়। অতিমারির সময় অনেকেই ক্যালিগ্রাফি, ইঙ্ক ড্রয়িং-এর মতো কালি-কলমনির্ভর শিল্পে মন দিয়েছেন। হাতে লেখার অভ্যাস কমার অনেকটা দায় যাদের, সেই কম্পিউটারই আবার কালি-কলম ব্যবহারকারীদের যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছে। গত ১০ জুন সন্ধ্যায় বইপাড়ার ‘মান্দাস’ বই বিপণিতে এক আড্ডায় মেতেছিলেন কলকাতার ঝর্না-কলম উৎসাহীরা। এখনও শোনা যাচ্ছে মান্দাস-এর ফেসবুক পেজে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy