Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

কলকাতা কড়চা

দুর্গা এখন বিদেশেও জনপ্রিয়। আর ক’দিন পরেই এই শহরেই শুধু নয়, বরং সেই আলোর বেণু সাড়া জাগাবে সারা বিশ্বে। ক’দিন আগেই এই শহরের শিল্পী পার্থ দাশগুপ্ত পাড়ি জমিয়েছিলেন সুদূর নিউ জার্সিতে, সঙ্গে ছিলেন আর এক শিল্পী শিবশঙ্কর দাস।

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

দুই শিল্পীর হাতে গড়ে উঠছে ধরিত্রী

দুর্গা এখন বিদেশেও জনপ্রিয়। আর ক’দিন পরেই এই শহরেই শুধু নয়, বরং সেই আলোর বেণু সাড়া জাগাবে সারা বিশ্বে। ক’দিন আগেই এই শহরের শিল্পী পার্থ দাশগুপ্ত পাড়ি জমিয়েছিলেন সুদূর নিউ জার্সিতে, সঙ্গে ছিলেন আর এক শিল্পী শিবশঙ্কর দাস। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্থপতি যোগেশ মিস্ত্রির নকশায় তৈরি হল একটি বড় দুর্গামণ্ডপ ‘আনন্দমন্দির’। ২০ একর জায়গা জুড়ে এই মন্দির প্রাঙ্গণেই গড়ে উঠেছে রবি ঠাকুরের নামাঙ্কিত একটি কমিউনিটি হল। দেড় বছরের পরিশ্রমে সম্প্রতি শেষ হল কাজটি। উল্লেখ্য এখানকার দুর্গা প্রতিমাটিও কিন্তু পাড়ি জমিয়েছিল এই কলকাতা থেকেই! পার্থবাবুর সঙ্গে তথাকথিত থিমপূজার যোগ দীর্ঘদিনের। শান্তিনিকেতনের সেই ইতিহাস হয়ে যাওয়া বাঁধন দাসের পুজোর দায়িত্বও এক সময় ছিল ওঁর কাঁধে। সেই সময় থেকেই ফি বছর তিনি নতুন কিছু ভাবনা উপহার দেন এই শহরের শিল্পরসিকদের। সেই কাজের সূত্র ধরেই তিনি ও দেশে দেখিয়ে এলেন দুর্গা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র ‘আনন্দকীর্তি’। এ বারে পার্থবাবু কাজ করছেন বেহালা নূতন দল–এ। দুর্গা মাতৃরূপে ধারণ করে আছেন সমগ্র সৃষ্টি, সে কারণেই তিনি ধরিত্রীর সঙ্গে একাত্ম। নানা নামে তিনি মেদিনী, বসুন্ধরা, পৃথিবী বা জগন্মাতা। আসলে মায়ের রূপেই তিনি বিরাজমান।

বিস্তৃত শ্যামলিমায় লেগে থাকে তারই অনিঃশেষ স্পর্শ। কিন্তু এ দিকে আমরা এই শহরকে কেন্দ্র করেই বড় হয়েছি। অতএব শহরের কর্কশতা আর কাঠিন্য আমাদের নিত্যসঙ্গী। প্রতিদিন আমরা চোখ মেলেই দেখি এক দমবন্ধ ধূসর নিসর্গ রূপ। যেখানে কংক্রিট আর লোহার বজ্রকঠিন আবরণ। দৃষ্টি আটকে যায়, মন ফিকে হয়ে আসে। আজকের এই অস্থিরতা কি তারই ফল, কে জানে! কিন্তু এই ধূসরতাকেই যদি একটুকরো রঙিন কাচের মধ্যে দিয়ে দেখা যেত, তবে তো নিশ্চয় ফিকে হয়ে যেত সেই দৃশ্যদূষণ! এই ভাবনা থেকেই নূতন দল প্রাঙ্গণে গড়ে উঠছে ‘ধরিত্রী’। শিল্পী জয়শ্রী বর্মন দীর্ঘদিন ধরে দুর্গা এঁকে চলেছেন। শিল্পরসিকজনের কাছে সে খবর অজানা নয়। কিন্তু সেই জয়শ্রী এ বারে দুর্গাপ্রতিমা নির্মাণ করছেন তাঁর নিজের শহরে, এই প্রথম। সঙ্গের ছবিতে তারই খসড়া এবং নির্মাণ মুহূর্ত। পার্থ দাশগুপ্ত এবং জয়শ্রী বর্মনের যৌথ ভাবনায় এবারে শহরের চালচিত্রে নূতন দলের উত্তর সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে গড়ে উঠছে ‘ধরিত্রী’। ওঁদের বোনা রঙিন কাচে পুজোর ক’দিন শহরের মলিন ধূসরতা একটু রঙবাহারি হয়ে থাকলেই বা কম কি!

অভিনব

ভগবদ্গীতার পুথি ছড়ানো আছে দেশের সব পুরনো গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালাতেই, কিন্তু মহাভারত-কাহিনি বাদে মুঘল, রাজপুত বা পাহাড়ি চিত্রকররা গীতা থেকে সচিত্রকরণের কোনও বিষয় খুঁজে পাননি। হিমাচল প্রদেশে বাঘাল রাজ্যের রাজধানী অর্কি থেকে রাজসংগ্রহের একটি ভগবদ্গীতার পুথি মিলেছে, যার ২৬টি ছবির মধ্যে গীতার শ্লোকের চিত্রায়ণও দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে কুরুক্ষেত্রের শ্রীকৃষ্ণ সংগ্রহশালায় রক্ষিত এই পুথির ছবি নিয়ে আশুতোষ জন্মশতবার্ষিকী হলে ১৮ সেপ্টেম্বর তিনটেয় বলবেন ইলাহাবাদ সংগ্রহশালার অধিকর্তা রাজেশ পুরোহিত। সঙ্গে তারই একটি ছবি। অন্য দিকে, ১৫ সেপ্টেম্বর রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় অধিকার এবং পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশনের উদ্যোগে বেলা ১টায় গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী: আলোকচিত্রে চিত্রকলা। রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহালয়ের চিত্রকলা সম্ভারের আলোকচিত্রের এই প্রদর্শনীটি চলবে ১৯ পর্যন্ত। শেষ দিন শিশির মঞ্চে সারা দিনের আলোচনা সভা, বিষয়: প্রাগাধুনিক ভারতে চিত্রকলার ঐতিহ্য।

সংগীতসাধক

সিরাজু ডাকাতের বংশধর হয়ে উঠলেন এক অসামান্য সংগীতসাধক— বাবা আলাউদ্দিন খানের (১৮৬২-১৯৭২) তুলনা তিনি নিজে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মাইহার ঘরানার একাধিক শিল্পী ভারতীয় মার্গ সংগীতকে বিদেশের মাটিতে জনপ্রিয় করেছেন: পণ্ডিত রবিশঙ্কর, আলাউদ্দিনের পুত্র উস্তাদ আলি আকবর খান, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। অনাথ শিশুদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘মাইহার ব্যান্ড’। ৬ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুদিনে বাংলা আকাদেমি সভাঘরে ‘সুরনন্দন ভারতী’ সংগীত শিক্ষায়তনের পক্ষ থেকে প্রকাশ পেল মদনমঞ্জরী (সম্পা: ঋতীশ রঞ্জন চক্রবর্তী। যোগপ্রভা প্রকাশনী)। শিল্পী আলাউদ্দিনকে নিয়ে বইটিতে কবিতা লিখেছেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত থেকে নৃত্যশিল্পী অমিতা দত্ত প্রমুখ। সঙ্গে শিল্পীর ছবিটি অরিজিৎ মৈত্রের সৌজন্যে।

জোড়াসাঁকো

এই উপন্যাসের কেন্দ্রে ৪৩ বছরের এক মধ্যবয়স্ক পুরুষ। সদ্য তাঁর স্ত্রী মৃণালিনী দেবী মারা গিয়েছেন। পুরুষটির বয়স বাড়তে থাকে, তাঁর সাধের শান্তিনিকেতন ততদিনে ঋণভারে টলমল। তারই মধ্যে তাঁর জীবনে কখনও আসেন রাণু অধিকারী, কখনও বা ভিক্তোরিয়া ওকাম্পো। অরুণা চক্রবর্তীর ‘জোড়াসাঁকো’ উপন্যাসের দ্বিতীয় খণ্ড ‘ডটারস অব জোড়াসাঁকো’ (হার্পার কলিন্স)প্রকাশ পেতে চলেছে। আনুষ্ঠানিক প্রকাশ নভেম্বরে, শর্মিলা ঠাকুরের হাতে। শরৎচন্দ্রের ‘শ্রীকান্ত’ বা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেই সময়’, ‘প্রথম আলো’ যিনি অনুবাদ করেছেন, সেই দিল্লিবাসিনী অরুণা কেন বেছে নিলেন ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলকে? ‘‘এই সময়েই রবীন্দ্রনাথ নিজের পুরনো ভুলগুলিকে প্রশ্ন করছেন। যিনি নিজের মেয়েদের বাল্যবিবাহ দিয়েছিলেন, তিনিই ওই সময় ছেলেকে বিধবাবিবাহ দিচ্ছেন। উপন্যাসের বিষয় হিসেবে তাই সময়টি ইন্টারেস্টিং,’’ জানালেন দিল্লির জানকী দেবী মেমোরিয়াল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। উপন্যাস শেষ হচ্ছে ১৯৪১-এ, রবীন্দ্রনাথ ও জ্ঞানদানন্দিনীর প্রয়াণবর্ষে। শেষ হচ্ছে জোড়াসাঁকোর কন্যাদের উজ্জ্বল উদ্ধার।

শ্রুতিনাটক

যে শিল্পের শুরুটা হয়েছিল বেতারে, সেই শ্রুতিনাটকই নতুন আলোয়, নতুন সাজের ঐতিহ্যমণ্ডিত স্টার থিয়েটারে। ১৭ সেপ্টেম্বর, সন্ধে সাড়ে ৫টায় আর্টএজ এবং হেলো হেরিটেজ-এর যৌথ প্রয়াসে কলকাতার এই প্রথম ‘শ্রুতিনাটক উৎসব ২০১৬’। কাদম্বরী থেকে বনলতা সেন বা অমিত-লাবণ্য থেকে টাপুরটুপুর— সবই এক মঞ্চে যেন একই মালায় গাঁথা। থাকবেন জগন্নাথ বসু, ঊর্মিমালা বসু, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, কাজল সুর, মধুমিতা বসু, রঞ্জনা ভঞ্জ, শাশ্বতী গুহ প্রমুখ। সঙ্গে দেখা যাবে প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে কাজল সুর-এর লেখা নাটক ‘হিমু’।

প্রথম অ্যালবাম

খেলনাওয়ালার পিছনছুট, তুমুল বৃষ্টিতে জমে যাওয়া জলে কাগজের নৌকো ভাসানো, বয়ঃসন্ধির মনউচাটন পাগলামো, হর্ষ-বিষাদে ভরে থাকা এক রোমান্টিক মন... আশৈশব এমন আরও কত স্মৃতি জমতে থাকে বড় হতে-হতে। নিজের সেই জীবনটাকেই যেন তুলে এনেছেন দিওতিমা চৌধুরী তাঁর প্রথম বাংলা গানের অ্যালবামে: ‘আমি দিওতিমা’। সৌমেন দেবের কথা ও সুর। ছোট থেকে গানের পাশাপাশি ছবি আঁকায়ও পারদর্শী দিওতিমা, বাবা সুব্রত চৌধুরী যে চিত্রকর। ঝোঁক ছিল অভিনয়েও, শেষ পর্যন্ত থিতু হলেন গানেই। ধ্রুপদী সংগীতে শিক্ষা শুরু, বিমান মুখোপাধ্যায়ের কাছে নজরুলগীতি শিক্ষা, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কীর্তন নিয়ে স্নাতকোত্তর। তবে বিভিন্ন ধারার বাংলা গানেই তাঁর সমান আগ্রহ। ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায় রোটারি সদনে তাঁর অ্যালবামটি উন্মোচন করবেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়। তারপর গান গাইবেন দিওতিমা।

কথাকলি

সাত বছর বয়স থেকে তাঁর তাবড় শিল্পীদের সঙ্গে বঙ্গরঙ্গমঞ্চ ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। ‘কানন পিসির জপমালা’, সায়কের ‘দামিনী হে’, ‘সীতা’, নৈহাটি ব্রাত্যজনের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ নাটকে ইতিমধ্যে কথাকলির অভিনয় প্রশংসিত। পড়াশোনা সমাজতত্ত্ব নিয়ে, থিয়েটারের পাশাপাশি তিনি এক জন ব্র্যান্ড রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট। এ বার তাঁরই নির্দেশনায় এবং অঞ্জন দেব, সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত, অনির্বাণ ঘোষ, কৌশিক কর প্রমুখের সহায়তায়, নির্বাক অভিনয় অ্যাকাডেমির প্রযোজনায়, শর্মিলা মৈত্র-র লেখা নাটক ‘রাতমোহানা’ (অনুপ্রেরণা: সলমন রুশদি) মঞ্চস্থ হবে আজ, ১২ সেপ্টেম্বর, বিকেল ৩টেয়, অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ।

গানের ভুবন

সাত বছর বয়সে বাবা-মায়ের কাছে শুরু সংগীত শিক্ষা। ১৯৯৬ সালে রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদের গানের অ্যালবাম দিয়ে সংগীত জগতে আত্মপ্রকাশ করেন মনোময় ভট্টাচার্য। তার আগেই আধুনিক গানের জন্য হাতে এসেছে রাজ্য সংগীত অ্যাকাডেমি, ডোভার লেন মিউজিক অ্যাকাডেমির অ্যাওয়ার্ড। ‘মনের মানুষ’, ‘উদাস পাগল মন’, ‘চেয়ে দেখো মেঘেরা’— গানের পর গান বাড়িয়েছে পরিচিতি। রেকর্ড করেছেন রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, শ্যামাসংগীতও। ‘আর একটি প্রেমের গল্প’, ‘শেষের কবিতা’, ‘অন্য অপালা’— বাংলা সিনেমার গানেও ক্রমে জনপ্রিয়। ২০১৩ সালে রাজ্য সরকারের সংগীত সম্মান। দেখতে দেখতে বাংলা সংগীতের পেশায় কুড়ি বছর কেটে গিয়েছে মনোময়ের। ১২ সেপ্টেম্বর আইসিসিআর-এ তাঁর একক অনুষ্ঠান: ‘একুশে পা’। ওই সন্ধ্যাতেই প্রকাশিত হবে তাঁর পুজোর গানের অ্যালবাম: ‘তৃষ্ণা’। অন্য দিকে, ‘শ্রাবণী সেন মিউজিক অ্যাকাডেমি’র দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রবীন্দ্র সদনে ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা ও সন্ধে ৬টায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। থাকবেন সুমিত্রা সেন, রত্না মিত্র, দেবশঙ্কর হালদার ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। সংবর্ধিত হবেন সুপূর্ণা চৌধুরী, দীপঙ্কর সরকার, হাসি পাঞ্চাল, কনিষ্ক সেন ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় (বাবু), ও পণ্ডিত বিপ্লব মণ্ডল। দেখা যাবে একটি তথ্যচিত্র এবং দু’টি আলেখ্য ‘সেই আমি’ ও ‘শ্রাবণের গান’।

আন্তর্জাতিক

পৃথিবীর সব মাছ মরে গেছে আজ/ স্বপ্নে শুধু বেঁচে আছে বেড়ালের চোখ।’ যেন কোনও ক্ষমতাপ্রিয় মানুষের চকচকে লোভই ভেসে ওঠে কবিতার লাইন দু’টিতে। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের এ-কবিতার সঙ্গে আশ্চর্য যোগাযোগ তাঁর নতুন ছবির— ‘টোপ’। ‘ক্ষমতাপ্রিয় মানুষ, শুধু উঁচু তলারই নয়, যে কোনও মতাদর্শ বা রাজনৈতিক দল নির্বিশেষেই নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে অসহায় সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করে।’ এ ভাবনাই বুদ্ধদেব তাঁর শিল্পস্বাতন্ত্র্যে বুনে দিয়েছেন ‘টোপ’-এ। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট আয়োজিত যে লন্ডন ফেস্টিভ্যাল, তার অধিকর্তা ক্লেয়ার স্টুয়ার্ট তো মুগ্ধ: ‘আ ডিপলি পোয়েটিক অ্যান্ড সাররিয়েল আনফোল্ডিং স্টোরি...’। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সে উৎসবে দেখানো হচ্ছে ‘টোপ’। প্রায় একই সময় তা দেখানো হবে বুসান ফেস্টিভ্যালের ‘আ উইন্ডো অন এশিয়ান সিনেমা’-য়, আর নভেম্বরের শুরুতে হাওয়াই ফেস্টিভ্যালে। তবে বুদ্ধদেব এখন টরন্টো-য়, সেখানকার ফেস্টিভ্যালে ‘মাস্টার্স অব ওয়ার্ল্ড সিনেমা সেকশন’-এ দেখানো হচ্ছে ছবিটি। এই নিয়ে সপ্তম বার বুদ্ধদেবের ছবি ‘মাস্টার্স সেকশন’-এ। সত্যজিৎ সেই কবে ভারতীয় ছবিকে জগৎসভায় স্থান করে দিয়েছিলেন, সে আন্তর্জাতিক উত্তরাধিকার যে আজও বহন করে চলেছে কলকাতা, তা আমাদের খেয়ালই থাকে না! বুদ্ধদেব কিন্তু একেবারেই তৃপ্ত নন: ‘নিরন্তর অতৃপ্তিই আমায় তাড়া করে ফেরে— আরও ভাল ছবি করতে হবে। বরং চারপাশের তৃপ্ত মানুষের ভিড়ে নিজেকে বড় একা মনে হয়।’

মাতৃরূপেণ

আজি শরত তপনে প্রভাত স্বপনে কী জানি পরাণ কী যে চায়— এমত ভাবিয়াছিলেন কবি। কিন্তু কুমোরটুলি আর পটুয়াপাড়া একটি জিনিসই চাহিতেছে— আর যেন বরষণ না হয়। প্রকৃতির এই অসম্ভব খামখেয়ালিপনায় মাতা ও তাঁহার পুত্রকন্যা বাহনাদিসহ অসুরদিগের অবাধ স্যাঁতসেতে অবস্থা। যদিও গ্যাসের আগুনে বার্নার দিয়া শুকাইবার ব্যবস্থা আছে, তবু মানিতে হইবে এই কর্মে শুষ্ক আবহাওয়া ও প্রখর সূর্যালোকের বিকল্প কিছু নাই। এই শহরের মাথায় এখনও নীরদপুঞ্জ, হঠাৎ হঠাৎই বারিধারা শুরু হইতেছে। প্রতিমার মৃত্তিকার প্রলেপ শুকানো তো দূরস্থান, মাতৃমূর্তির স্থিতিশীলতা যাহার ওপর প্রধানত নির্ভরশীল— সেই বংশকাঠামো অবধি ভিজা ভিজা। অতিরিক্ত ভিজা ভিজা হওয়ার দরুন অনেক বংশ নষ্টও হইতেছে। ফলে দাম বাড়িতেছে বিপুল বেগে। কেননা, শারদোৎসবের পরেও আছে আরও নানাবিধ পূজা। তবু ইহারই মধ্যে শহর জুড়িয়া নানা রূপে প্যান্ডেলের নির্মাণ চলিতেছে, ঠিক তেমনই কোথাও কোথাও মাতৃমূর্তিতে প্রাথমিক সাদা রঙ ও পরে অন্যান্য রঙের পোঁচ পড়িতে শুরু করিয়াছে। প্রয়োজনে এই বৎসর দর্শককুল নৌকা অথবা বজরা লইয়াও ঠাকুর দেখিতে বাহির হইবেন। শুভ শারদোৎসবে বাঙালিরে দমায় কে!

নাট্যশিল্পী

বাংলাদেশের সাতক্ষীরার অদূরে ধূলিহর গ্রামে জন্ম ১৯৩৮-এ। মা রাধারানি, বাবা অশোককুমার। মনোজ মিত্র পূর্ববঙ্গের মফস্‌্‌সল এবং এ পারের দন্ডীরহাট গ্রামে বড় হন। স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শন পড়তে এসে গল্প ও নাটকে মন। এসব কথা সরস এবং স্বাদু গদ্যে লেখা আছে ভাসিয়ে দিয়েছি কপোতাক্ষ জলে এবং গল্প না বইয়ে। ১৯৫৭-য় নাটকের দল ‘সুন্দরম’ প্রতিষ্ঠা করেন বন্ধু পার্থপ্রতিম চৌধুরীর সঙ্গে। ১৯৫৯-এ ২১ বছর বয়সে ‘মৃত্যুর চোখে জল’ নাটকের জন্য গিরিশ নাট্য প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ নাটককার, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা। এর পর জীবিকার জন্য কলকাতার বাইরে, ফিরলেন ’৭০-এ, নাটক ‘চাকভাঙা মধু’ নিয়ে। ‘চাকভাঙা মধু’ই চিনিয়ে দিল বাংলা নাট্যসাহিত্যের সেই প্রতিভাবান নবীন সৃষ্টিকর্তাকে। জরুরি অবস্থায় লিখলেন ‘নরক গুলজার’। ‘কথা বলো না শব্দ করো না....’ গানের এ পংক্তি প্রতিবাদের ভাষা হয়েছে কত বার। সত্তর দশকেই ‘পরবাস’ নাটক নিয়ে আবার সুন্দরমে। তিনিই নির্দেশক। ‘পরবাস’ থেকে কিংবদন্তি হয়ে যাওয়া ‘সাজানো বাগান’। গজমাধবের পর বাঞ্ছারাম। ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ ছবি করলেন তপন সিংহ। নাটককার, মঞ্চে নিবেদিত এই নাট্যকর্মী আবার তপন সিংহ, সত্যজিৎ রায়, তরুণ মজুমদার, বাসু চট্টোপাধ্যায় থেকে কত চিত্রপরিচালকের ছবির প্রধান অভিনেতা। লিখেছেন... অশ্বত্থামা, শোভাযাত্রা, রাজদর্শন, কিনু কাহারের থেটার, যা নেই ভারতে, ভেলায় ভাসে সীতা, জাদুবংশ... কত অসামান্য পূর্ণাঙ্গ থেকে শিল্পময় একাঙ্ক। পেয়েছেন নানা সম্মান। নাট্যসাহিত্যের জন্যই তিনি এ বার পাচ্ছেন শরৎ পুরস্কার। ১৬ সেপ্টেম্বর শরৎচন্দ্রের কলকাতার বাসভবনে তাঁর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেবেন শরৎ সমিতির সভাপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy