ফোটোগ্রাফির বয়স হল প্রায় দুশো বছর— ১৮২৬-২৭’এ ফরাসি উদ্ভাবক জোসেফ নিসেফোর নিয়েপ্স একটা আলোকচিত্র ‘ডেভলপ’ করেছিলেন। সে-ই শুরু, দুই শতকে বিশ্বে এক অন্যতর ‘শিল্প বিপ্লব’ সাধন করেছে ফোটোগ্রাফি। সেই সুদীর্ঘ পথ চলাকে মনে রেখে, সেই সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতার পঁচাত্তর পূর্তি এবং ভারত-ফ্রান্স সাংস্কৃতিক মৈত্রীর উদ্যাপন উপলক্ষে চমৎকার এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী চলছে ইন্ডিয়ান মিউজ়িয়মে— কনভারজেন্স: আ প্যানোরামা অব ফোটোগ্রাফি’জ় ফ্রেঞ্চ কানেকশনস ইন ইন্ডিয়া। বিগত দেড়শো বছরে ভারত ও ফ্রান্সের সংযোগ-সম্পর্ক নিয়েই এই প্রদর্শনী, যার সূত্রটি ফোটোগ্রাফি, এবং ফোটোগ্রাফাররা। তবে স্রেফ আলোকচিত্রী নন যাঁরা, ছবি তুলেই কাজ শেষ হয়ে যায়নি যাঁদের— নানা সময়ে ভারতে এসে, থেকে, ঘুরে ও দেখে ক্যামেরায় ধরে রেখেছেন দিন বদলের ইতিহাস। আমদাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, নয়াদিল্লি ঘুরে এই প্রদর্শনী এখন কলকাতায়।
প্রথম ডেভলপ হওয়া সেই ছবিটি দেখতে চান? রাখা আছে এ প্রদর্শনীতে। আছে ১৮৬০-এর দশকে ভারতে আসা ফরাসি পর্যটক লুই রুসলে-র ছবি। ‘ভারতের প্রথম আলোকচিত্রী রাজা’, জয়পুরের দ্বিতীয় সওয়াই রাম সিংহের সঙ্গে দেখা হয় লুইয়ের, হৃদ্যতাও গড়ে ওঠে, এবং এই সূত্রেই পাওয়া যায় ক্যামেরায় ধরে রাখা একগুচ্ছ ছবি, আসলে সেই ঔপনিবেশিক সময়টাই। আবার ১৮৫৭-র জুলাইয়ে কলকাতা এসেছিলেন ফরাসি সার্জন জন-বাপতিস্ত অস্কার মালিত, রয়েছে তাঁর কাজও। অনেকেই নানা পেশার মানুষ, ফরাসি দখলে থাকা ইন্দো-চিন এবং ব্রিটিশশাসিত বর্মা হয়ে এসেছিলেন ভারতে। দীর্ঘ যাত্রাপথে তাঁদের তোলা ছবিতে উপনিবেশের শাসন থেকে জনজীবন, ধরা পড়ে সবই। জাতীয় কংগ্রেস দলের শুরুর দিকের কিছু ছবিও রয়েছে এ প্রদর্শনীতে, আছে ১৯৩০-এর বোম্বেতে আইন অমান্য আন্দোলনের ছবিও।
মার্ক রিবু-র তোলা বহু ছবি সম্পদ এ প্রদর্শনীর। সেই মার্ক রিবু, যাঁর ক্যামেরায় ১৯৫৬ সালের হাওড়া ব্রিজের ভোর (উপরের ছবি) থেকে পুরনো শান্তিনিকেতন, কিংবা সত্যজিৎ রায়ের অপরাজিত-র শুটিংয়ের কাশী ফুটে ওঠে অন্য রূপে। অঁরি কার্তিয়ে-ব্রেসঁ’র ভাবশিষ্য ও বন্ধু রিবু-র মতে ক্যামেরার চোখে দেখা যেন শ্বাস নেওয়ার মতো, এ কোনও কাজ নয়, প্রায় ‘অবসেশন’এক, একটা সংক্রমণ। পঞ্চাশের দশকের কলকাতা, পুরনো দিল্লি, রাজস্থান, চণ্ডীগড়ের শহুরে পথজীবন ধরা পড়ে রিবু-র কাজে, প্রদর্শনীতে রয়েছে তাঁরই সমসাময়িক ভারতীয় নারী আলোকচিত্রী হোমাই ভিয়ারাওয়ালার তোলা ছবিও।
‘আলকাজ়ি ফাউন্ডেশন ফর দি আর্টস’-এর কিউরেটর রাহাব আলানা-র সযত্ন নির্মাণ এই প্রদর্শনীটি, ফ্রান্সের কয়েকটি বিখ্যাত মিউজ়িয়মের বাছাই সংগ্রহ এ শহরে দেখার এমন সুযোগ মিলবে না আর। শুরু হয়েছে গত ১৫ নভেম্বর, চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত, সোমবার বাদে।
এক কাপড়ে
পূর্ববঙ্গে তাঁদের বাড়ির দুর্গাঠাকুর গড়তেন হীরালাল পাল। দেশভাগের পরে বরিশাল থেকে কলকাতা আসা, এবং হঠাৎ আবিষ্কার, এ পারে চলে এসেছে পটুয়া পরিবারটিও! শিল্পী-কারিগরেরা নিজেদের কর্মদক্ষতা ছাড়া আর কিছু আনতে পারেননি সঙ্গে, এই ভাবনা ভাবিয়েছিল অর্চি বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ফ্যাশন ডিজ়াইনিং-এর ছাত্রী অর্চির লেখাপড়া চেন্নাই ও লন্ডনে, ‘মিড ফেলোশিপ’ পেয়ে তিনি ফিরেছেন শিকড়ে, বাংলার কারুশিল্প ও শিল্পী-জীবনে খুঁজেছেন দেশভাগের প্রভাব। ফলশ্রুতি তাঁরই কিউরেট করা প্রদর্শনী ‘পার্টেড ক্রাফ্টস’, শুরু হয়েছে ২৫ নভেম্বর আইসিসিআর-এর বেঙ্গল গ্যালারিতে। দুই বাংলার একশো জন মৃৎশিল্পী, শঙ্খশিল্পী, তাঁত ও বেনারসি শিল্পী, শীতলপাটি ও শোলা শিল্পীদের জীবন ও কাজে দেশভাগের ‘প্রভাব’, তারই প্রদর্শন— শিল্পনমুনায়। কলকাতা পার্টিশন মিউজ়িয়ম-এর সহযোগিতায় অন্য রকম এই প্রদর্শনী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত, দুপুর ৩টে-রাত ৮টা। ছবিতে শীতলপাটিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, কোচবিহারের চন্দন ও সুষমা দে-র শিল্পকাজ— প্রদর্শনী থেকে।
জীবনগান
১৯৮৪ সাল থেকে বহুবিধ প্রদর্শ সংরক্ষণের পাশাপাশি বাংলা মঞ্চগানের প্রচার-প্রসারে মগ্ন ‘একাডেমি থিয়েটার’। তাদেরই নতুন প্রযোজনা ‘সংস্ট্রেসেস’, জনমানসে বিস্মৃতপ্রায় গায়িকা-নায়িকাদের জীবন ও শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। উনিশ শতকে গঙ্গামণি বিনোদিনী তারাসুন্দরী তিনকড়ি চারুশীলা সুশীলাবালা কুসুমকুমারী বেদানা দাসী থেকে বিশ শতকের প্রভা দেবী হয়ে কেতকী দত্ত ও কেয়া চক্রবর্তীর জীবন-গান, ভাষ্য ও নৃত্য সহকারে। উঠে আসবে বঙ্কিমচন্দ্র গিরিশচন্দ্র দ্বিজেন্দ্রলাল ক্ষীরোদপ্রসাদ নিধুবাবুর পরম্পরা, তারাশঙ্কর নজরুল হয়ে উৎপল দত্ত অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্মাণ দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের, গানে তাঁর সঙ্গে ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় ও নির্ঝর চৌধুরী, বৃন্দগানে ঋদ্ধির মিউজ়িক অ্যাকাডেমির সদস্যেরা। ২ ডিসেম্বর আইসিসিআর-এ, সন্ধে সাড়ে ৬টায়।
পঞ্চাশে পা
ঊনপঞ্চাশ বছর পেরিয়ে এল নাট্যদল ‘সায়ক’। পাঁচ দশকের যাত্রায় তাদের বেশ কিছু নাটক দর্শকধন্য ও জনপ্রিয়; দায়বদ্ধ, দুই হুজুরের গপ্পো, বাসভূমি, কর্ণাবতী-র অভিনয়ের কথা শহরের নাট্যপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে আজও। থিয়েটারের অন্য কর্মকাণ্ড— নাট্যমঞ্চ নির্মাণ, নাট্যবক্তৃতামালা আয়োজন, নাট্যপত্র প্রকাশ, নির্বাচিত বাংলা নাটকের উৎসব, ছোটদের নাট্যপ্রযোজনাও চলেছে সমান তালে। বর্ষপূর্তিতে এ বার অ্যাকাডেমি মঞ্চে ২ থেকে ৪ ডিসেম্বর প্রাক্-পঞ্চাশ উৎসব তাদের, ২ তারিখ সন্ধে সাড়ে ৬টায় সূচনা দেবাশিসের রচনায়, মেঘনাদ ভট্টাচার্যের নির্দেশনায় নতুন নাটক ভবিষ্যতের স্মৃতি দিয়ে। বাকি দু’দিনে অভিনীত হবে বেহালা ব্রাত্যজন-এর নাটক এক স্বপ্নময় মৃত্যু, সায়ক-এর আত্মজন, ইচ্ছেমতো-র ঘুম নেই, এবং সংস্তব-এর উড়ন্ত তারাদের ছায়া।
নির্মাণের শিল্প
সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড আর্ট-এর স্নাতক, পাঠান্তে ইনফোগ্রাফিস্ট হিসাবে দিল্লি পাড়ি, ‘বই গড়া’র কাজও শুরু সেখান থেকেই। পুরাণ থেকে বর্তমান, কালী থেকে কালির দোয়াত সবই রাজকমল আইচের গ্রন্থনির্মাণের বিষয়। প্রাথমিক জ্যামিতিক আকার ও সমকালীন আন্তর্জাল-ভাষার চিহ্ন মিলেমিশে গড়ে ওঠে তাঁর বইয়ের দৃশ্যচিত্র, মনে করায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রামায়ণ কাহিনি-নির্ভর খুদ্দুর যাত্রা-কে, সে যুগের বিজ্ঞাপনচিত্র, দেশলাইবাক্স, লজেন্সের মোড়ক দিয়ে হয়ে উঠেছিল বিপুলায়তন যে বই। সেই চিত্রভাষারই নবনির্মাণ গ্রন্থশিল্পীর সাম্প্রতিক বই দিস ইজ় নট অ্যান আর্ট বুক, নিত্যদিনের পরিচিত বস্তু-চরিত্রের অবস্থান পাল্টে, সংক্ষিপ্ত রেখার সংযোজনে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে যে বই। প্রকাশিত হল গত ২৩ নভেম্বর, যোগেন চৌধুরী সেন্টার অব আর্টস-এ।
ছবি ভালবেসে
চলচিত্রের জন্ম হয়েছিল তথ্যচিত্রের হাত ধরে। শিক্ষা ও সমাজকল্যাণে তার অবদান অনস্বীকার্য। গত আট বছর ধরে প্রতিযোগিতামূলক তথ্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করে আসছে সুতানুটি ডকুমেন্টারি অ্যান্ড শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল কমিটি, এ বারের উৎসব আগামী ২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর, নন্দন-৩ প্রেক্ষাগৃহে। তিন দিনে দেখানো হবে মোট ৪০টি ছবি। আজকের প্রজন্মের ছবি-করিয়েদের উৎসাহ দিতেই এই আয়োজন। রয়েছে আলোচনাসভাও, এই সময়ে তথ্যচিত্রের নির্মাণ ও সমস্যা নিয়ে। থাকবেন কে জি দাশ লিপিকা ঘোষ শ্রীলেখা মুখোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্টজন।
অমূল্য
বাংলার মন্দিরস্থাপত্য আঞ্চলিকতায় স্বতন্ত্র— টেরাকোটার ব্যবহারে, চালা শিখর ও রত্নের বিশিষ্টতায়, ভাস্কর্য ও অলঙ্করণের সৌষ্ঠবে। সতেরো থেকে উনিশ শতকে প্রসার লাভ করে এই মন্দিরস্থাপত্য, তার কিছু আঙ্গিক ও উপকরণ দেখা যায় বাংলার মসজিদেও। গত শতাব্দীর ষাট ও সত্তর দশকে বাংলার ধর্মীয় স্থাপত্য নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করেছিলেন হিতেশরঞ্জন সান্যাল (ছবিতে বাঁ দিকে তিনি, ডেভিড ম্যাককাচ্চনের সঙ্গে), প্রায় তিন হাজার আলোকচিত্রে ধরে রেখেছিলেন তাদের খুঁটিনাটি। সেন্টার ফর স্টাডিজ় ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস কলকাতা-র গবেষক-কর্মীরা তাঁর সেই বিপুল ছবি-সংগ্রহকে ডিজিটাইজ় ও ক্যাটালগ করেছেন নিবিড় যত্ন ও শ্রমে, এ বার এক ওয়েবসাইটের আকারে (religiousarchitecturebengal.cssscal.org) সেই সংগ্রহ খুলে গেল আবিশ্ব আগ্রহীজনের জন্য। সেন্টার-এর অধীন যদুনাথ ভবন মিউজ়িয়ম অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টারে গত ১৯ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হল, হিতেশরঞ্জনের কাজের গুরুত্ব নিয়ে বললেন গৌতম ভদ্র, ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নীচে ডান দিকের ছবিতে বিষ্ণুপুরের মন্দির, সংগ্রহ থেকে।
নিজ নিকেতনে
শুরু যতীন দাস রোডের বাড়িতে, পরে গড়িয়াহাটের ফার্ন রোডে উঠে আসে দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাস, সেখানেই এত দিন চলছিল শিল্প প্রদর্শনী, গ্রন্থ প্রকাশনা-সহ বহুবিধ কর্মকাণ্ড, নিয়মিত। এ বার নতুন ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে এই প্রতিষ্ঠান, ৭০/২ সেলিমপুর রোডে নিজ নিকেতন— সেখানেই সেজে উঠেছে দেবভাষার সংগ্রহের প্রদর্শনীকক্ষ, বইয়ের ঘর, আলোচনা আর ঘরোয়া আড্ডার পরিসর। শুভারম্ভ আগামী ২৮ নভেম্বর সোমবার সন্ধে সাড়ে ৬টায়, রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় গণেশ হালুই লালুপ্রসাদ সাউ যোগেন চৌধুরী উমা পদ্মনাভন-সহ বিশিষ্ট শিল্পী ও সংস্কৃতি-ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে। নতুন আবাসের দ্বারোদ্ঘাটন উদ্যাপিত হবে ‘গৃহপ্রবেশ’ নামের নতুন এক চিত্রপ্রদর্শনী দিয়ে, দেখা যাবে যামিনী রায় গোপাল বসু অতুল বসু কে জি সুব্রহ্মণ্যন সনৎ কর রেবা হোর-সহ পূর্বোল্লিখিত (সঙ্গের ছবিতে রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিত্রকৃতি) ও এই প্রজন্মের শিল্পীদের কাজ, আগামী ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত, রবিবার বাদে রোজ দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা। আলাদা করে শিল্পী সোমনাথ হোরের চিত্রকৃতি দেখা যাবে বিশেষ প্রদর্শনীকক্ষে, জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধার্ঘ্য। প্রকাশিত হবে কয়েকটি বইও, ছবি ও কবিতার।
কবিতার চেয়ার
বুকার পুরস্কারজয়ী বেন ওকরি, পুলিৎজ়ার-জয়ী ফরেস্ট গ্যানডার ও বিজয় শেষাদ্রি, সাহিত্য অকাদেমি সম্মাননাধন্য কে সচ্চিদানন্দন অশোক বাজপেয়ী প্রমুখ কবিতা পড়েছেন এই উৎসবে। শহরের প্রকৃত কবিতাপ্রেমী মাত্রেই জানেন ‘চেয়ার পোয়েট্রি ইভনিংস’-এর কথা, কলকাতার আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব; কবি ও কবিতাপ্রেমীদের নিয়ে। কবিতার বিরাট আকাশ ছোঁয়াই লক্ষ্য উৎসবের, পাঁচ বছরে কুড়িটি দেশ ও ভাষার কবিদের এনেছে পাঠক-সকাশে। এ বার রয়েছেন ইরান নেদারল্যান্ডস নরওয়ে চিলি ইউক্রেন ব্রিটেন ও আমেরিকার কবিরা, বাংলা ও নানা ভারতীয় ভাষার কবিরা তো বটেই। আজ বিকেল ৫টায় শুরু আইসিসিআর-এ, ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত কবিতার সঙ্গে আনন্দযাপন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy