Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Accident

Kolkata Accident: ব্রেকের বদলে পা অ্যাক্সিলারেটরে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের

দুর্ঘটনা ঘটানো বিলাসবহুল গাড়িটির সোমবার ফরেন্সিক পরীক্ষা হয়। কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন।

অনুসন্ধান: বালিগঞ্জে দুর্ঘটনা ঘটানো গাড়িটি পরীক্ষা করছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সোমবার।

অনুসন্ধান: বালিগঞ্জে দুর্ঘটনা ঘটানো গাড়িটি পরীক্ষা করছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২২ ০৭:৪২
Share: Save:

ব্রেকের বদলে অ্যাক্সিলারেটরে পা চলে যাওয়াতেই কি দুর্ঘটনা? তার জন্যই কি প্রাণ গেল এক পথচারীর? পুলিশ নিশ্চিত করে এখনও কিছু না জানালেও বালিগঞ্জের দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ। বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনা ঘটানো বিলাসবহুল গাড়িটির সোমবার ফরেন্সিক পরীক্ষা হয়। দীর্ঘক্ষণ পরীক্ষার পরে কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষা করা হয় দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটিও। পাশাপাশি, ধৃত গাড়িচালককে এ দিন আলিপুর আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরে বিলাসবহুল গাড়িটি নিয়ে দিদি ও সঙ্গীদের নিয়ে বেরিয়েছিল বছর উনিশের সুয়াস পরসরামপুরিয়া। দুপুরে পার্ক স্ট্রিটের এক রেস্তরাঁয় খাওয়াদাওয়া করে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বেরোয় সুয়াস ও অন্যেরা। চালকের আসনে ছিল সুয়াস। এ জে সি বসু রোডের দিক থেকে তীব্র গতিতে গড়িয়াহাটের দিকে আসার সময়ে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে একটি পেট্রল পাম্পের সামনে ঘটে দুর্ঘটনা। প্রথমে একটি অ্যাপ-ক্যাবের পিছনে ধাক্কা মারে জাগুয়ার সংস্থার গাড়িটি। ক্যাবটি ধাক্কার জেরে রাস্তার পাশে ছিটকে যায়। এর পরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আর একটি দামি গাড়িতে ধাক্কা মারে জাগুয়ারটি। দু’টি গাড়ির মাঝখানে পড়ে চাকায় পিষ্ট হয়ে যান আনন্দপুরের বাসিন্দা ষষ্ঠী দাস। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। ঘটনার পরেই সুয়াসকে গ্রেফতার করে বালিগঞ্জথানার পুলিশ।

জানা গিয়েছে, সানি পার্কের বাসিন্দা সুয়াস কলকাতার একটি নামী স্কুলের ছাত্র। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি দু’টি আটক করে পুলিশ। সেই সঙ্গে ঘটনার তদন্তভার নেয় কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ফেটাল স্কোয়াড। রাতেই কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সুয়াসকে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ব্রেকের বদলে অ্যাক্সিলারেটরে পা চলে গিয়েছিল চালকের। আর তাতেই হঠাৎ তীব্র গতিতে গাড়িটি সামনে এগিয়ে যায়। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’’ তবে গাড়ির গতি যে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার ছুঁইছুঁই ছিল, তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা। গাড়িটির ব্ল্যাক বক্স পরীক্ষা করে খুঁটিনাটি এই সব তথ্য জানতে চাইছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে গাড়িটির যান্ত্রিক পরীক্ষাও করা হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

এ দিন ধৃতকে আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে পেশ করা হয়। সরকারি আইনজীবী শুভাশিস ভট্টাচার্য পুলিশি হেফাজতের আর্জি জানিয়ে বলেন, ‘‘প্রকাশ্য দিবালোকে বেপরোয়া ভাবে, সুস্থ মস্তিষ্কে গাড়ি চালানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এমন ঘটনা সমস্ত পথচলতি নাগরিকের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। একটি বড় অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ওই গাড়িচালককে হেফাজতে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা দরকার। গাড়িতে থাকা আরও তিন আরোহীকেও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে।’’ পুলিশের তরফে ২০ অগস্ট পর্যন্ত ধৃতের হেফাজতের আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক ১২ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। এখনও পর্যন্ত গাড়ির সমস্ত নথির হদিস পাওয়া যায়নি বলে আদালতে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী অফিসার। ঘটনার পুনর্নির্মাণের আবেদন করা হয়েছে তদন্তকারী অফিসারের তরফেও।

এ দিকে, সোমবার এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ষষ্ঠী দাসের দেহের ময়না-তদন্ত হয়। পরে দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। এ দিন মৃতের এক আত্মীয় সানি দাস বলেন, ‘‘আমরা চাই অভিযুক্তের সাজা হোক। থানায় আমরা মৌখিক জানিয়েছি। প্রয়োজনে আমরা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে লিখিত অভিযোগও দায়ের করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Road Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy