Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

পাখিরালয়ের পরিকল্পনা বাতিল রবীন্দ্র সরোবরে

বন দফতরের তালিকাভুক্ত যে সমস্ত পাখি খাঁচায় রাখা আইনত বৈধ, তাদের জন্যই পাখিরালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কয়েক মাস আগে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২১
Share: Save:

রবীন্দ্র সরোবরে হরিণ জাতীয় কোনও বন্যপ্রাণী রাখার পরিকল্পনা বাতিল হয়েছিল কয়েক বছর আগেই। এ বার বাতিল করা হল ওই সরোবরে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রাখার প্রস্তাবও।

বন দফতরের তালিকাভুক্ত যে সমস্ত পাখি খাঁচায় রাখা আইনত বৈধ, তাদের জন্যই পাখিরালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কয়েক মাস আগে। এই ধরনের প্রকল্প করতে গেলে সরোবরের মধ্যে নির্মাণকাজ করতে হবে। কিন্তু জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ওই সরোবর চত্বরে কংক্রিটের কোনও স্থায়ী নির্মাণ করা যাবে না। সেই কারণেই পরিকল্পনা করেও ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ) কর্তৃপক্ষ তা থেকে হাত তুলে নিয়েছেন। তা ছাড়া, এই প্রকল্প নিয়ে পাখিপ্রেমীদের একাংশের তীব্র আপত্তি রয়েছে।

কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আপাতত সরোবরের সৌন্দর্যায়নের জন্য লিলিপুল বা সাফারি পার্কের সামনে পাখিরালয় তৈরি করা হচ্ছে না। আদালতের নিষেধাজ্ঞা তো রয়েছেই, তা ছাড়া, এই ধরনের প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন বিশেষজ্ঞদের। তেমন কাউকে তাঁরা পাননি। সরোবরের যে অংশে লিলিপুল রয়েছে, সেখানেও হরিণ বা উল্লুক রাখার পরিকল্পনা তাঁরা বাতিল করেছেন। সেখানে অন্য কিছু করার কথা ভাবা হচ্ছে।

এ বিষয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘হরিণ বা ওই ধরনের কোনও বন্যপ্রাণী এনে সরোবরের সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু বন দফতরের অনুমতি না পাওয়ায় তা আপাতত হচ্ছে না। সরোবরের পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে, এমন কোনও কাজ করা হবে না।’’

রাজ্যের বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, সব পাখি খাঁচায় রাখা সম্ভব নয়। কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রজাতির পাখি, যেমন কাকাতুয়া, বদ্রিকা অথবা লাভবার্ড পোষা আইনত বৈধ। কিন্তু সেগুলি রাখার জন্য বিরাট আকৃতির খাঁচা তৈরি করতে হবে। সেই বড় খাঁচা তৈরি করতে গেলে স্থায়ী নির্মাণ করতে হবে। বন দফতর জানিয়েছে, কেএমডিএ-র তরফে এ বিষয়ে লিখিত কোনও আবেদন আসেনি। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, সরোবর চত্বরে কোনও বড় স্থায়ী নির্মাণ করা যাবে না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এই ধরনের প্রকল্প আদালতের নির্দেশিকার বিরোধী।’’

সুদীপ ঘোষ নামে এক পাখিপ্রেমীর মতে, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরে এমনিতেই প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে। তাই আলাদা করে খাঁচায় পাখি রাখা উচিত নয়। তার পরিবর্তে সরোবর চত্বরে গাছপালার সংখ্যা বাড়িয়ে পাখিদের আসার ও থাকার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করাটা অনেক বেশি জরুরি।’’

কেএমডিএ সূত্রের খবর, লিলিপুলে পুরনো কিছু কংক্রিটের ঘর সরোবর তৈরির সময় থেকেই রয়েছে। সেখানে বহু বছর আগে হরিণ রাখা হত। অভিযোগ, ওই হরিণদের মেরেও ফেলা হত। পরবর্তীকালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন কঠোর হওয়ায় সেখানে কোনও রকম প্রাণীকে রাখার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কেএমডিএ এখন ওই সমস্ত কংক্রিটের ঘরে প্রজাপতি পার্ক তৈরির কথা ভাবছে।

অন্য বিষয়গুলি:

KMDA Bird Sanctuary Rabindra Sarobar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy