হাই কোর্টের নির্দেশে ছটের আগে ঘিরে দেওয়া হয়েছে সুভাষ সরোবর। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
দুর্গাপুজোর পরে কালীপুজো— বিধিনিষেধে সরকারি ছাড়ের ঘোষণার ফল কী হতে পারে, তা দেখেছে রাজ্য। ছাড়ের সুযোগ নিয়ে বিধিভঙ্গের একাধিক ছবি ধরা পড়েছে শহরে। তার জেরে পুজোর পরেই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে করোনা সংক্রমণ। একই ভাবে ছটপুজোতেও ছাড়ের ঘোষণা করেছে সরকার। আর সেখানেই প্রশ্ন, এই সুযোগে বিধিভঙ্গের সেই একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি হবে না তো? উৎসবের দু’দিন আগে পুলিশ ও পুরসভার তরফে প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা উৎসবমুখী জনতার বিধিভঙ্গের প্রবণতায় রাশ টানতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজোতেও বিধিভঙ্গের ছবি দেখছে শহর। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শব্দবাজির তাণ্ডব চলেছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, মাস্ক না পরা ও দূরত্ব-বিধি না মানার অভিযোগ তো ছিলই। রাজ্য প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই ছটপুজো উপলক্ষে ১০ এবং ১১ নভেম্বর নৈশ কার্ফুতে ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। ওই দু’দিন একই ভাবে শব্দবাজির তাণ্ডবের এবং দূরত্ব-বিধি শিকেয় ওঠার আশঙ্কা করছেন শহরবাসীর একাংশ। যদিও লালবাজারের তরফে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেই দাবি করা হয়েছে।
এ বছরও রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরে ছটপুজো আটকানোর জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গত বছর একই নির্দেশ থাকলেও একটি বড় অংশের মানুষ রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো করতে চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। তবে এ বছর আগেই তৈরি হচ্ছে প্রশাসন। প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সোমবার রবীন্দ্র সরোবরে আসেন কলকাতা পুলিশ ও কেএমডিএ-র প্রতিনিধিরা। আজ, মঙ্গলবার সুভাষ সরোবর পরিদর্শনে যাবেন তাঁরা। সেখানেও একই রকম ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরের বিকল্প হিসাবে ছটপুজোর জন্য ওই দুই এলাকায় ২০টি পুকুরে ৩৯টি অস্থায়ী ঘাট তৈরির কাজ শুরু করেছে কেএমডিএ। রবীন্দ্র সরোবরের ভারপ্রাপ্ত, কেএমডিএ-র সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার দিলীপকুমার বড়াল বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরে ১২টি গেট রয়েছে। সাধারণ মানুষ কেউ যাতে না ঢুকতে পারেন, তার জন্য সব গেট বাঁশের ব্যারিকেড করে টিন দিয়ে ঘেরা হবে। ফাঁকফোকর দিয়ে ঢোকা আটকাতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।’’
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার থেকেই দুই সরোবর কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হবে। ইতিমধ্যেই লালবাজারের তরফে ডিসিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। অন্য দিকে, আদালতের নির্দেশ মেনে রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরে যাতে কেউ ছটপুজো পালন না করেন, তার জন্য কেএমডিএ-র তরফে ট্যাবলোয় প্রচারের পাশাপাশি লিফলেট বিলি ও পথনাটকের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের পর্যবেক্ষণ, ‘‘গত বছর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী রবীন্দ্র সরোবরে নিয়ম মানা হলেও সুভাষ সরোবরে মানা হয়নি। আদালতের নির্দেশ যথাযথ ভাবে মানতে পুলিশকে কঠোর হতেই হবে।’’
কলকাতা পুরসভার তরফে শহরে গঙ্গার বিভিন্ন ঘাট ও পুকুরে ছটপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কেএমডিএ ও পুরসভা মিলিয়ে ১৩৮টি ঘাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক পুর আধিকারিক জানান, শহরের ১৮টি গঙ্গার ঘাট ছাড়াও বিভিন্ন পুকুর, জলাশয়ে ছটপুজোর ব্যবস্থা থাকছে। পাঁচটি কৃত্রিম জলাশয়েও ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য দিকে, দইঘাট ও তক্তাঘাটে প্রতি বছর মুখ্যমন্ত্রী যান। তাই ওই দুই ঘাটে মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। গঙ্গার ঘাটে পুরসভার পাশাপাশি নিরাপত্তা ও নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন কলকাতা বন্দর, ভারতীয় নৌবাহিনী ও কলকাতা পুলিশের কর্মীরা। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ তারিখ দুপুর ১টা থেকে ১১ তারিখ দুপুর ৩টে পর্যন্ত গঙ্গার ঘাট সংলগ্ন এলাকায় চক্ররেল চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy