ফাইল চিত্র।
জোকা, বেহালা, যাদবপুর এবং ই এম বাইপাস এলাকায় নিকাশির উন্নয়নের কাজের জন্য ১৮০০ কোটি টাকা ঋণ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। কেইআইআইপি-র তৃতীয় পর্যায়ের এই কাজে এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এডিবি) থেকে ঋণ পেতে চলতি সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছে আবেদন করা হবে। পরে এডিবি-র সদর দফতর ম্যানিলায় আবেদনপত্র পাঠানো হবে। কেইআইআইপি-র এক শীর্ষ আধিকারিক বুধবার বলেন, ‘‘ঋণ মঞ্জুর হতে অন্তত বছরখানেক সময় লাগবে। তার পরে কাজ শুরু হবে। তৃতীয় পর্যায়ের ওই কাজে মূলত ই এম বাইপাসের ১০৭, ১০৮ ও ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং বেহালার ১২৭ ও ১২৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও জোকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, এর আগে কেইআইআইপি দু’টি ধাপে এডিবি-র থেকে ৪২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে শহরে নিকাশির উন্নয়নের কাজে করেছে। প্রথম ধাপে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় ধাপে ২৮০০ কোটি টাকা পেয়েছিল তারা। মূলত জোকা, বেহালা, যাদবপুর এবং গার্ডেনরিচ এলাকায় নিকাশির উন্নয়নের কাজে ওই টাকা ব্যয় করা হয়েছিল। কিন্তু গত বর্ষায় দেখা গিয়েছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার জোকা, বেহালা, যাদবপুর ও গার্ডেনরিচ এলাকায় জল দীর্ঘ ক্ষণ জমে ছিল। যাদবপুর এলাকার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের অভিযোগ, ‘‘গত বর্ষায় যাদবপুরে যে ভাবে জল জমেছিল, তা আগে কখনও হয়নি।’’
কেইআইআইপি সূত্রের খবর, ই এম বাইপাসের চৌবাগা, বানতলা, মুকুন্দপুর, নয়াবাদ, বেহালার সরশুনা, ঠাকুরপুকুর, শকুন্তলা পার্ক ও জোকায় তৃতীয় পর্যায়ের ওই কাজ শুরু হবে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ এখনও বাকি রয়েছে। তবে তৃতীয় পর্যায়ের কাজের জন্য ঋণের টাকা হাতে পেতে পেতে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’
নয়া পুর বোর্ডের প্রথম মাসিক অধিবেশনে ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ তাঁর ওয়ার্ডের একাধিক এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা কিছুই নেই বলে অভিযোগ করেছিলেন। কেইআইআইপি-র তৃতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হলে বাইপাস লাগোয়া ১০৭, ১০৮ ও ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হবে বলে মনে করছেন আধিকারিকেরা। পুরসভা সূত্রের খবর, সংযোজিত এলাকার (১০১-১৪৪ নম্বর ওয়ার্ড) একাধিক জায়গায় নিকাশি নালা নেই। জোকা ও বাইপাস লাগোয়া কিছু ওয়ার্ড ছাড়াও গার্ডেনরিচের অনেকাংশে এই সমস্যা রয়েছে। ভারী বৃষ্টি হলেই সেখানে জল জমে যায়।
কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের অভিযোগ, ‘‘পুরসভা কেইআইআইপি-র প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা খরচ করে বেহালা, জোকা, যাদবপুর, গার্ডেনরিচে নিকাশি সংস্কারের কাজ করেছে। এত কোটি কোটি টাকা খরচ করেও কাজের কাজ কি কিছু হয়েছে? গত দু’বছরে ওই সব এলাকায় জল জমার সমস্যা একটুও কমেনি।’’ আর বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের প্রশ্ন, ‘‘মাটির নীচে বিগত কয়েক বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করেও সুফল মেলেনি। ভস্মে ঘি ঢালা হচ্ছে। এক দিকে পুরকর্মীরা অবসর নিয়েও পেনশন পাচ্ছেন না। অন্য দিকে, হাজার হাজার কোটি খরচ করেও ফল মিলছে না। এত টাকা কোথায় যাচ্ছে, তার তদন্ত হওয়া দরকার।’’
মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন, ‘‘অনেক কাজই হয়েছে। বেহালার বেশ কিছু জায়গায় কেইআইআইপি-র কাজ হয়েছে। সেখানে এখন আর জল বেশি ক্ষণ জমে না। বাম আমলে সংযুক্ত এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা বলতে কিছু ছিল না। সেই সমস্ত এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy