ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।
শহরের বহু হোটেল, নাইটক্লাব, রেস্তরাঁ, ব্যাঙ্কোয়েট এবং অনুষ্ঠান-বাড়ি বিনোদন কর দিচ্ছে না। এর ফলে প্রতি বছর পুর প্রশাসনের ক্ষতি হচ্ছে ৮-১০ কোটিরও বেশি টাকা। কমছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ। সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। বিষয়টি নিয়ে পুরসভাকে কয়েক বার চিঠিও দিয়েছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)। কেন ওই বকেয়া টাকা আদায় করা হচ্ছে না, তার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। গোটা বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পুরসভার বিনোদন কর দফতর। প্রসঙ্গত, অতীনবাবু ওই দফতরেরই দায়িত্বপ্রাপ্ত।
আগে এ নিয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ দেখা না গেলেও এ বার ওই বকেয়া টাকা তুলতে কঠোর হতে চান ডেপুটি মেয়র। সম্প্রতি সিএজি-র রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই বিভাগীয় কর্তা-আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বার থেকে হোটেল, নাইটক্লাব, রেস্তরাঁ, ব্যাঙ্কোয়েটের মতো জায়গাগুলিতে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগে বিনোদন কর জমা দিতে হবে। তবেই সেখানে অনুষ্ঠান করার ছাড়পত্র দেবে পুরসভা। দফতরের একাধিক কর্তার অভিযোগ, শহরে বহু রেস্তরাঁ-ব্যাঙ্কোয়েট রয়েছে যেখানকার কর্তৃপক্ষ লক্ষ লক্ষ টাকা বিনোদন কর বকেয়া রেখে বছরের পর বছর ব্যবসা করে চলেছেন। বকেয়া চেয়ে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও তাঁরা তাতে কান দেন না।
অতীনবাবু বলেন, ‘‘এই বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার পরে দেখেছি, কোটি কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এত দিন বিভাগটিকে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। বিনোদন কর আদায়ের ক্ষেত্রে পুর আইনে যা বলা আছে, সেটিকে গুরুত্ব দিয়ে কতটা কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় তা দেখার জন্য আমি পুর কমিশনারকে বলেছি।’’ ডেপুটি মেয়র জানান, নাটক বা গানের অনুষ্ঠানের জন্য কোনও প্রেক্ষাগৃহ ভাড়া নেওয়ার আগে পুরসভাকে বিনোদন কর দিয়ে ছাড়পত্র নিতে হয়। একই ভাবে রেস্তরাঁ-ব্যাঙ্কোয়েট বা অনুষ্ঠান বাড়িগুলিতে কত জন যাবেন, সেখানে কত জনের জায়গা রয়েছে— সে সব দেখেই বিনোদন করের ছাড়পত্র নিতে হবে। অন্যথায় ওই সব প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, কার কত টাকা বকেয়া রয়েছে, তার একটি তালিকা তৈরি করা হবে। আইনি নোটিসের সঙ্গে সেই অর্থ চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে। টাকা না মেটানো হলে কোনও অনুষ্ঠানের ছাড়পত্র দেওয়া হবে না। ডেপুটি মেয়রের দাবি, এই ব্যবস্থা চালু হলে বর্তমানে যা কর আদায় হয়, তার পরিমাণ অন্তত ১০০ শতাংশ বাড়বে।
সিএজি-র রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০১৪-’১৫ থেকে ২০১৬-’১৭, এই তিন অর্থবর্ষে বিনোদন কর জমা না পড়ায় পুর কোষাগারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী বকেয়ার হিসেব এবং ডিমান্ড নোটিস (ব্যাড ডিমান্ড) ঠিক মতো করদাতাদের কাছে না পাঠানোয় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬৩ লক্ষ ৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১৫ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকার ডিমান্ড নোটিস কোনও কারণ ছাড়াই হিসেবের খাতা থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy