Advertisement
E-Paper

Haridevpur Incident: দোষ ‘কবুল’ কর্তৃপক্ষের, কড়া পদক্ষেপ শুরু পুরসভায়

রবিবার সন্ধ্যার ওই দুর্ঘটনায় পুরসভার দোষ এ দিনই কার্যত স্বীকার করে নিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপরঞ্জন বক্সী।

নিশীথ যাদব।

নিশীথ যাদব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২২ ০৬:৫৩
Share
Save

হরিদেবপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় পুরসভার যে প্রাথমিক দোষ রয়েছে, তা কার্যত মেনে নেওয়া হল দুর্ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির তরফে মঙ্গলবার বিকেলে পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের সিদ্ধান্তে। এ দিন পুরসভার আলো দফতরের ডিজি এবং ঘটনাস্থল যে ১৩ নম্বর বরোয়, সেখানকার এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে (আলো) শো-কজ় করেন তিনি। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের আলো বিভাগের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকেও সাময়িক বহিষ্কার (সাসপেন্ড) করেন। তিন জনের বিরুদ্ধেই বিভাগীয় তদন্ত হবে। এই পদক্ষেপের পরেও তদন্ত এগোবে তো? তদন্তে যাঁদের গাফিলতির প্রমাণ মিলবে, আদৌ কি তাঁদের শাস্তি হবে? প্রশ্ন তুলছেন শহরবাসীর বড় অংশ।

পুর কমিশনারের এই ঘোষণার আগেই রবিবার সন্ধ্যার ওই দুর্ঘটনায় পুরসভার দোষ এ দিনই কার্যত স্বীকার করে নিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপরঞ্জন বক্সী। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘স্থানীয় কাউন্সিলর আগেই বলেছেন, টেলিফোনের স্তম্ভে আলো লাগানো হয়েছিল। এ ভাবে টেলিফোনে স্তম্ভের আলো লাগানো একেবারেই ঠিক হয়নি। আমার এটা জানা ছিল না।’’

মেয়র পারিষদ (আলো) জানিয়েছেন, তাঁর অনুমোদন ছাড়াই টেলিফোনের স্তম্ভে আলো লাগানো হয়েছিল। তা হলে ওই স্তম্ভে আলো লাগাতে পুরসভার কার কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল? তরতাজা কিশোরের অকালমৃত্যুর জন্য পুরসভারই কেউ কি দায়ী? এ সব প্রশ্নই এ দিন পুর মহলে ঘোরাফেরা করেছে। টেলিফোনের স্তম্ভে আলো লাগানোর বিষয়টি সোমবার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহও সমর্থন করেননি। তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘ব্যক্তিগত স্বার্থে ওই স্তম্ভে আলো লাগানো হয়েছিল।’’ ফলে প্রশ্ন উঠেছে, হরিদেবপুরের ঘটনার জন্য তবে কার শাস্তি হবে?

সোমবার ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্না শূর বলেছিলেন, ‘‘হরিদেবপুরের হাফিজ মহম্মদ ইশাক রোডে বিএসএনএল-এর স্তম্ভে পুরসভার তরফেই আলো লাগানো হয়েছিল। জায়গাটা অন্ধকার থাকায় সমস্ত নিরাপত্তা বজায় রেখে সেখানে আলো লাগানো হয়।’’ কাউন্সিলরের এই বক্তব্যের পরেই প্রশ্ন ওঠে, টেলিফোনের স্তম্ভে কী ভাবে আলো লাগানো হল? মেয়রের সুরেই মেয়র পারিষদ (আলো) জানান, একটা তরতাজা কিশোরের প্রাণ গেল। তদন্তে পুরসভার গাফিলতি ধরা পড়লে কাউকেই ছাড়া হবে না।

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, হরিদেবপুরের ঘটনার তদন্ত কমিটিতে আছেন পুরসভা, সিইএসসি-র শীর্ষ আধিকারিক, হরিদেবপুর থানার ওসি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক অধ্যাপক। মেয়র ফিরহাদ হাকিম ওই কমিটিকে আগামী দু’দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে সোমবারই নির্দেশ দিয়েছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, তদন্ত কমিটির সদস্যেরা মঙ্গলবার হরিদেবপুরের হাফিজ মহম্মদ ইশাক রোডের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। বিএসএনএল-এর যে স্তম্ভ স্পর্শ করায় নিশীথ লুটিয়ে পড়ে, সেই স্তম্ভ তাঁরা পর্যবেক্ষণ করেন। সূত্রের খবর, মেয়র পারিষদকে (আলো) সংশ্লিষ্ট দফতরের ডিজি জানিয়েছেন, ওই স্তম্ভে হুকিং-এর নমুনাও মিলেছে। এ সব শোনার পরেই এ দিন বিকেলে পুর কমিশনার শো-কজ়ের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।

ওই দুর্ঘটনার পরে পুরসভার আলো দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ১৬টি বরোর চেয়ারম্যান তাঁদের এলাকার কাউন্সিলর ও বিদ্যুৎ বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে এলাকা ঘুরবেন। বাতিস্তম্ভে ত্রুটি দেখলে মেয়র পারিষদকে (আলো) রিপোর্ট দেবেন। এ দিন বিকেলে পুরসভায় বসেই মেয়র পারিষদ (আলো) জানতে পারেন, হরিদেবপুরের মতোই পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ে টেলিফোনের স্তম্ভে আলো লাগানো হয়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আলো বিভাগের ডিজি-কে নিয়ে যান সন্দীপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘পার্ক সার্কাসে বাতিস্তম্ভ ও টেলিফোনের স্তম্ভ পাশাপাশি রয়েছে। টেলিফোনের স্তম্ভে প্রচুর কেব্‌ল জড়িয়েছিল। সেগুলি সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ এ দিন মেয়রের হুঁশিয়ারি, বাতিস্তম্ভ নিয়ে আলো বিভাগ কিছু না করলে তিনি নিজেই পথে নামবেন।

এ দিকে, সোমবার রাতেই মৃত ছেলের দেহ নিয়ে দেওঘরে তাঁদের পৈতৃক বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন বাবা-মা। ওখানেই মঙ্গলবার শেষকৃত্য হয় নিশীথ যাদবের। টেলিফোনে কাঁদতে কাঁদতে শিবনারায়ণ যাদব বলেন, ‘‘ছেলেকে কি আর পুরসভা ফিরিয়ে দিতে পারবে? পুরসভার কাছে প্রার্থনা, আমাদের মতো কোনও বাবা-মায়ের এই অবস্থা যেন না হয়।’’

Haridevpur KMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।