ফাইল চিত্র
পাম্পিং স্টেশনের নিকাশি নালার মুখে প্লাস্টিক এবং কঠিন বর্জ্য জমা আটকাতে প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ করে কয়েক বছর আগে ন’টি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বসানো হয়েছিল। বর্তমানে তার মধ্যে একটি যন্ত্র মেরামতি করে ব্যবহার করা হলেও বাকি আটটি যন্ত্র অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, পুর কর্তৃপক্ষ এই যন্ত্রগুলি মেরামতির ব্যবস্থা করেননি কেন? যে সংস্থা এই সব যন্ত্র সরবরাহ করেছিল, সেই সংস্থা ছাড়াও নির্দিষ্ট ভাবে কাউকে পুরসভা দায়ী করেনি কেন?
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০০৬-২০০৭ অর্থবর্ষে তৎকালীন বামফ্রন্ট পুরবোর্ড ওই ন’টি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র একটি সংস্থার থেকে কিনেছিল। কেনার পরে সব ক’টি যন্ত্রে ত্রুটি ধরা পড়ে। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, ওই সংস্থার কাছ থেকে জরিমানা চাওয়া হল না কেন? পরে তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে যন্ত্রগুলি মেরামত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। মোমিনপুর পাম্পিং স্টেশনে বসানো একটি যন্ত্র বহু অর্থ ব্যয়ে সারানো সম্ভব হলেও বাকিগুলি অকেজো অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে।
পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট আমলে ওই সব যন্ত্র বসানো হয়েছিল। তার পর থেকেই সেগুলি নিয়ে সমস্যা হয় বলে শুনেছি। বিষয়টি জানতে পারার পরেই প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা নিকাশি দফতরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তারক সিংহকে এই বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। জনসাধারণের অর্থে কেনা যন্ত্র এ ভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভার প্রজেক্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট দফতর বাইরের একটি নির্মাণ সংস্থাকে দিয়ে প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ করে ওই ন’টি যন্ত্র তৈরি করায়। পরে সেগুলি পুরসভার নিকাশি দফতরকে হস্তান্তর করা হয়। তপসিয়ার কাছে কসবা পাম্পিং স্টেশনে দু’টি, চকগড়িয়ায় একটি, বালিগঞ্জে চারটি, মোমিনপুরে এবং কাশীপুরে একটি করে যন্ত্র বসানো হয়েছিল। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এই ধরনের কাজ করে এমন একটি ভারতীয় সংস্থা আধুনিক পদ্ধতিতে পাম্পিং স্টেশনে পরীক্ষামূলক ভাবে ন’টি যন্ত্র বসিয়েছিল। নিকাশি নালায় প্লাস্টিক পড়া আটকাতেই মূলত যন্ত্রগুলি বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সাধারণত, পাম্পিং স্টেশনের নিকাশি নালার মুখে প্লাস্টিক এবং অন্য কঠিন বর্জ্য আটকে গেলে পাম্প বিকল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়াও, স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র এই কাজ করতে থাকলে পুরনো পদ্ধতিতে কর্মীদের ঝাঁঝরি ব্যবহার করে নালার মুখ পরিষ্কার করারও প্রয়োজন পড়ে না।
সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, যন্ত্রগুলি খারাপ হয়ে যাওয়ার পরে কাজ করানোর তালিকা থেকে ওই সংস্থাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাদের পাওনা অর্থের কিছুটা দিলেও অনেকটাই বাকি রাখা হয়েছিল।
পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তারক সিংহ বলেন, “ওই সংস্থাকে বাদ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অর্থ অপচয়ের জন্য জরিমানা করা উচিত ছিল। তেমন কিছু হয়েছিল কি না, তা জানার জন্য এই সংক্রান্ত পুরনো ফাইল দেখতে চেয়েছি।’’ কিন্তু এত দিন দামি যন্ত্রগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করা হল না কেন? তারকবাবু বলেন, ‘‘যে সব যন্ত্র অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে, তার কী ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হবে? তবুও কোনও ভাবে যন্ত্রগুলিকে সচল করা যায় কি না, কাগজপত্র দেখার পরেই সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy