প্লাস্টিক জমে এমনই দশা উল্টোডাঙার একটি খালের। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকে এ রাজ্যে বন্ধ হতে চলেছে ৭৫ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিকের ব্যবহার। এই বিধি কার্যকর করতে কলকাতা পুরসভার পাশাপাশি সচেতনতার প্রচারে নেমেছে হাওড়া, বিধাননগর ও দমদমের তিনটি পুরসভাও। নয়া প্লাস্টিক-বিধি না মানলে জরিমানা আদায়ের মতো কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে সব ক’টি পুরসভাই। তারা জানিয়েছে, বিধি বলবৎ করার আগে আপাতত মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতিগুলির সঙ্গে করা হচ্ছে বৈঠক। সে কাজে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি শামিল করা হচ্ছে স্কুল পড়ুয়াদেরও। সাধারণ নাগরিকদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, বিধি মানতে তাঁরা প্রস্তুত। তবে বিকল্প ব্যবস্থাও করা দরকার।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বললেন, ‘‘শহরের সমস্ত বাজারে নজরদারি চলবে। বিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, বাজার এবং লাইসেন্স বিভাগও নজরদারির কাজে নামবে। ওই দুই বিভাগের কর্মীরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবেন।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যে নয়া বিধি বলবৎ করতে আমরা কড়া নজরদারি চালাব। বিভিন্ন পুরসভাকে ইতিমধ্যেইনোটিস পাঠিয়েছি। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গেও আমারকথা হয়েছে। এ বিষয়ে মেয়র নিজেও খুব আগ্রহী।’’
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শহরে জল জমার অন্যতম কারণই হল প্লাস্টিক। প্রতি বছরই নিকাশি নালা ওগালিপিটের মুখ প্লাস্টিকে অবরুদ্ধ থাকায় জল বেরোতে পারে না। এ বার তাই সচেতনতার প্রসারে কাউন্সিলরদেরও পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। পুরসভার পরিবেশবিভাগের এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ‘‘সচেতনতা তৈরি না হলে জোর করে কিছু করানো মুশকিল।’’
হাওড়া পুরসভা আবার সচেতনতার প্রচারে শহরের সমস্ত দোকানে ও বাজারে লিফলেটবিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পুরসভার সার্ভে বিভাগ থেকে একটি দল গড়ে তাদের উপরে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘৭৫ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিকের ব্যাগ যে আর বিক্রি বা ব্যবহার করা যাবে না, তা জানাতে বাজারে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। তাতেও কাজ না হলে সার্ভে বিভাগের কর্মীরা বাজার-দোকানে নজরদারি চালিয়ে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যবহারের জন্য জরিমানা করবেন।’’
নয়া প্লাস্টিক-বিধি বলবৎ করতে উদ্যোগী হয়েছে বিধাননগর পুরসভাও। এর জন্য শুক্র ও শনিবার রাজারহাট-নারায়ণপুর এলাকায় দু’টি সচেতনতা মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রহিমা বিবি জানান, বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বোঝানো হবে, যাতে বৈধ প্লাস্টিকই তাঁরা ব্যবহার করেন। একই ভাবে সল্টলেকেও প্রচার চলবে। প্রচারের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হবে বলে তিনি জানান।
দমদম, উত্তর দমদম ও দক্ষিণ দমদম পুরসভাও প্রচারের কাজে নেমেছে। যদিও দক্ষিণ দমদমের বাঙুর এলাকায় ২০০১ সালেই প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার উদ্যোগে সাফল্য মিলেছিল।তৎকালীন কংগ্রেস কাউন্সিলর মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, জনমত গঠন করার ফলেই সাফল্য এসেছে। আজও সেখানে প্লাস্টিকের ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন বাসিন্দারা।বলা যায়, তাঁরাই রাজ্যে পথ দেখিয়েছিলেন।
প্রচারের কাজ শুরু করেছে উত্তর দমদম পুরসভাও। এক পুরকর্তা জানান, শুধু পুরসভা নয়, ওই কাজে স্থানীয় সংগঠন থেকে শুরু করে বাসিন্দাদেরও যুক্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কাজ অনেকটাই এগিয়েছে দমদম পুরসভা। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠক করা থেকে শুরু করে প্রতিটি ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের সঙ্গেও চলছে আলোচনা। মাইকেও ঘোষণা করা হচ্ছে নিয়মিত। ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট জানালেন, নির্দেশ অমান্য করলে জরিমানা করা হবে। তাঁর মতে, জনমত গঠিত হলেই প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে সাফল্য আসবে।
দমদমের মতো দক্ষিণ দমদম পুরসভাও প্রচারে জোর বাড়িয়েছে। মাইকে ঘোষণার পাশাপাশি মিছিলও করা হচ্ছে সেখানে। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, ওই পুর এলাকায় বাসিন্দাদের কাপড়ের ব্যাগ দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy