Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
KMC

KMC: রাজস্ব আদায়ে কর্পোরেট ধাঁচে এ বার লক্ষ্যমাত্রা পুরসভায়

মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে রাজস্ব দফতরের এক সাম্প্রতিক বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

কলকাতা পুরসভা।

কলকাতা পুরসভা। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২২ ০৮:০৪
Share: Save:

কর্পোরেট জগতে কাজের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা (টার্গেট) থাকে। প্রত্যেক কর্মীকে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হয়। তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্মীর মূল্যায়ন হয়। সেই কর্পোরেটধাঁচেই এবার রাজস্ব আদায়, কোনও সম্পত্তি মূল্যায়নের আওতায় আনা, বকেয়া কর আদায়-সহ একাধিক ক্ষেত্রে রাজস্ব দফতরের কর্তা, আধিকারিকদের লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে দিলেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে রাজস্ব দফতরের এক সাম্প্রতিক বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজস্ব আদায় এবং মূল্যায়ন‌ না-হওয়া (আনঅ্যাসেসড) সম্পত্তিকে মূল্যায়নের আওতায় আনা এবং বকেয়া কর আদায়ের জন্য রাজস্ব দফতরের কর্তা এবং আধিকারিকদের ব্যক্তিগতভাবে ‘দায়বদ্ধ’ করা হয়েছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘‘আধিকারিকদের এলাকাভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। কারণ, পার্ক স্ট্রিটে যে টার্গেট, তা তো আর চেতলা বা যাদবপুরে হবে না। তবে এলাকাভিত্তিক যা-ই লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হোক না, তা প্রত্যেককে পূরণ করতে হবে।’’

রাজস্ব আদায়ে কর্তৃপক্ষের কর্পোরেট মডেলকে অনুসরণের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করে পুর প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রথমত, দীর্ঘদিন ধরেই শহরে একটা বড় অংশের বকেয়া কর পড়ে রয়েছে। তা ছাড়া বার বার বলার পরেও এখনও শহরের সব সম্পত্তি মূল্যায়নের আওতায় আসেনি। ফলে ক্ষতি হচ্ছে পুরসভার রাজস্বে। এ দিকে কোষাগারের বর্তমান অবস্থায় রাজস্বে ক্ষতি পুরসভার কাছে ‘বিলাসিতা’র সমান! তাই পুর প্রশাসনের শীর্ষ নেতৃত্বকে মাঠে নামতে হয়েছে।

এ-ও জানা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক এই সক্রিয়তার নেপথ্যে আরও একটি কারণ রয়েছে। তা হল, রাজস্ব আদায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরের ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব। যে কারণে পুরসভার অন্তর্বর্তী নোটে রাজস্ব ক্ষতির জন্য পুরসভার রাজস্ব দফতরের দিকে আঙুল তুলেছিলেন কর্তৃপক্ষ। রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরকেই রাজস্ব ক্ষতির জন্য ‘দায়ী’ করা নিয়ে পুরমহ‌লের অন্দরে শোরগোলও পড়ে গিয়েছিল। তখনই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, বিষয়টি নিয়ে মেয়র নিজে দফতরের কর্তা, আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।

বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। তা হল, যে সব জমিতে পুকুর রয়েছে, সেগুলোর আলাদা ‘প্রেমিসেস নম্বর’ দিতে হবে। পুকুর-সহ জমিকে উল্লেখ করতে হবে ‘পি’ হিসাবে। মেয়র জানাচ্ছেন, ধরা যাক, কারও বাড়ির নম্বর ৪। তাঁর পাশের বাড়িতে পুকুর রয়েছে। তখন তা পুর নথিতে ‘পি/৫’ হিসাবে উল্লেখ করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘এর উদ্দেশ্য একটাই, শহরের কোনও সম্পত্তি মূল্যায়নের বাইরে রাখা যাবে না। সব অ্যাসেস করতে হবে।’’

আরও একটি বিষয় পুরসভার উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তা হল— বকেয়া কর। পুরসভার হিসাব বলছে, গত দু’-তিন বছর ধরে বকেয়া কর আদায়ে গতি এলেও এখনও অনেক পরিমাণে তা আদায় বাকি। তার বড় কারণ লোকবল এবং পরিকাঠামোর অভাব। রাজস্ব দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘পুরসভার এত লোকবল নেই যে শহরের প্রতিটা বাড়িতে গিয়ে বকেয়া কর আদায় করতে পারবে। তাই কর আদায়ে সময় লাগবে।’’

কিন্তু সেই সময়টা পাওয়া যাবে তো? কারণ, এ বার তো লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া রয়েছে!

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Firhad Hakim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy