কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
আদিগঙ্গার দু’পাড়ে জবরদখল রুখতে গাছের চারা লাগিয়ে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা করেছে কলকাতা পুরসভা। সেই সঙ্গে গীতাঞ্জলি মেট্রো স্টেশন থেকে ঊষা ব্রিজ পর্যন্ত পেভার ব্লকের রাস্তা তৈরির ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কিন্তু পাড়ের জবরদখল রুখতে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, নতুন জবরদখল রুখতে গাছের চারা বসাবে পুরসভা, কিন্তু পাড়ের দু’পাশে যে ইতিমধ্যেই জবরদখল হয়ে রয়েছে, তার কী হবে? অথচ সে সব উচ্ছেদ করতে জাতীয় পরিবেশ আদালতের তরফে একাধিক বার রায়ও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুরসভা ‘চুপ’ কেন?
পুরসভার অবশ্য বক্তব্য, সরেজমিনে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের ‘ফিজ়িবিলিটি রিপোর্ট’ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট এলাকা জঞ্জালের স্তূপে ভর্তি। তা ছাড়া পাড়ে যেখানেই ফাঁকা জমি রয়েছে, সেখানেই জবরদখলের প্রবণতা দেখা গিয়েছে। সে কারণেই সুদৃশ্য রেলিংয়ে ঘিরে গাছের চারা রোপণের পাশাপাশি পেভার ব্লকের রাস্তা তৈরির পরিকল্পনাও হয়েছে। যাতে সৌন্দর্যায়নের পরে জবরদখল না হয়। আবার ওই রাস্তা তৈরি হলেও সংলগ্ন মেট্রো স্টেশন যেতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সুবিধা হবে। সে কারণেই ১.১৫ কোটি টাকার বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘ওই টাকা ‘ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম’-এর খাত থেকে খরচ করা হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে।’’
যদিও এই প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, আদিগঙ্গার ধারে জবরদখলকারীদের চিহ্নিতকরণের ব্যাপারে অতীতে একাধিক বার রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। তার পরেও সে ব্যাপারে কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের। এক পরিবেশবিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘আদিগঙ্গা বাঁচাতে গেলে চটকদারি কাজ করলে হবে না। দূষণের উৎস আগে বন্ধ হোক, তার পর সৌন্দর্যায়নের কথা ভাবা যাবে।’’ পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘নতুন জবরদখল ঠেকাতে পুরসভা না হয় গাছ বসাবে, কিন্তু যাঁরা ইতিমধ্যেই পাড়ের দু’পাশ দখল করে রয়েছেন, তাঁদের নিয়ে পুরসভা চুপ কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy