E-Paper

ওয়াকফ সম্পত্তি জরিপের কাজ চলছে দায়সারা ভাবে, অভিযুক্ত পুরসভা

সম্প্রতি টালিগঞ্জের একটি ওয়াকফ এস্টেটে জরিপের কাজ করতে গিয়েছিলেন পুরসভার গড়িয়াহাটের টলি-ট্যাক্স বিভাগের কর্মীরা। কিন্তু অভিযোগ, জবরদখলকারীদের হুমকির মুখে মাঝপথেই ফিরে আসতে হয় তাঁদের।

An Image Of Kolkata Municipality

কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৩২
Share
Save

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মতো শহরে ওয়াকফ সম্পত্তির জরিপের (সার্ভে) কাজ শুরু হয়েছে কয়েক মাস আগে। অতীতে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ওয়াকফ সম্পত্তি জরিপের কাজ না হওয়ায় কলকাতা পুরসভাকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়। চলতি বছরের অগস্ট মাসে বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, শহরের ১-১০০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় থাকা সব ওয়াকফ সম্পত্তির জরিপ যথাযথ ভাবে করতে হবে। কিন্তু পুরসভা যে পদ্ধতিতে ওয়াকফ সম্পত্তি জরিপের কাজ করছে, তাতে আপত্তি জানিয়েছেন একাধিক ওয়াকফ এস্টেটের মোতায়াল্লি তথা কর্ণধারেরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘পুরসভা হাই কোর্টের নির্দেশ মানছে না। সম্পূর্ণ দায়সারা ভাবে জরিপের কাজ হচ্ছে। বেশির ভাগ ওয়াকফ এস্টেটে যাচ্ছেন না পুরকর্মীরা। অনেক জায়গায় শাসকদলের অনুগামীদের মদতে ওয়াকফ সম্পত্তি দখল হয়ে থাকায় সেখানে ঢোকার সাহস পর্যন্ত পাচ্ছেন না তাঁরা।’’

সম্প্রতি টালিগঞ্জের একটি ওয়াকফ এস্টেটে জরিপের কাজ করতে গিয়েছিলেন পুরসভার গড়িয়াহাটের টলি-ট্যাক্স বিভাগের কর্মীরা। কিন্তু অভিযোগ, জবরদখলকারীদের হুমকির মুখে মাঝপথেই ফিরে আসতে হয় তাঁদের। উভয় পক্ষের বাদানুবাদে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। প্রহৃত হন টালিগঞ্জ এলাকার ওয়াকফ এস্টেটের এক মহিলা সদস্য। গোটা ঘটনাটি জানিয়ে তিনি কলকাতার নগরপালকে চিঠি লিখেছেন।

অন্য দিকে, টালিগঞ্জ থানা এলাকার সতীশ মুখার্জি রোডে প্রায় ১২ বিঘা জমি জুড়ে টিপু সুলতানের পরিবারের সদস্যদের কবর রয়েছে। ওই এলাকাটি গ্রেড ওয়ান হেরিটেজ বলে আগেই ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু অভিযোগ, সেই গ্রেড ওয়ান হেরিটেজভুক্ত এলাকার অধিকাংশই জবরদখল হয়ে গিয়েছে। দখলদারদের সরাতে বহু বছর ধরে লড়ে যাচ্ছেন টিপু সুলতানের প্রপৌত্র তথা মাইসোর ফ্যামিলি ওয়াকফ এস্টেটের সম্পাদক শাহিদ আলম। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুরসভার কর রাজস্ব বিভাগের কর্মীরা সতীশ মুখার্জি রোডে টিপুর পরিবারের কবরস্থানে সার্ভে করতে আসেননি। এখানে দখলদারদের হুমকির ভয়ে আসল কাজটাই হল না। হাই কোর্টের নির্দেশ মানেনি পুরসভা।’’

শাহিদের প্রশ্ন, ‘‘কলকাতায় ওয়াকফ সম্পত্তির অধিকাংশ দখল হয়ে গিয়েছে। হাই কোর্ট যখন পুরসভাকে যথাযথ ভাবে জরিপ করার নির্দেশ দিয়েছে, তখন পুরসভা কেন এত নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে? কেন তারা কাজের সময়ে পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে না?’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘ওয়াকফ সম্পত্তি জরিপ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে তার অর্থ এই নয় যে, পুরসভা দায়সারা ভাবে সেই কাজ করবে। জবরদখল হয়ে থাকা বেশ কিছু ওয়াকফ এস্টেটে পুরসভার কর্মীরা স্রেফ হুমকির ভয়ে যাননি। তা হলে ওই সব ওয়াকফ এস্টেটে আদৌ জরিপের কাজটা
হল কি?’’

প্রসঙ্গত, হাই কোর্টের নির্দেশে কলকাতা পুরসভার বিশেষ কমিশনার সোমনাথ দে-কে ওয়াকফ কমিশনার পদে নিযুক্ত করা হয়েছে। যদিও পুরসভার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি নস্যাৎ করে এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘ওয়াকফ সম্পত্তির সার্ভের কাজ ঠিক মতোই চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি পুলিশের আরও অনেক কাজ আছে। আমাদের কর্মীরা কোথাও বাধা পেলে আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছি। মোতায়াল্লিরা যে অভিযোগ করছেন, তা ঠিক নয়। অনেক মোতায়াল্লি আমাদের কর্মীদের সহায়তাও করছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Waqf Board delay negligence Kolkata municipality Kolkata Municpal Corporation

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।