Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
atin ghosh

দক্ষিণেই বকেয়া কর ছাড়িয়ে ৬০০ কোটি! আদায়ে ঢিলেমি দিলে অফিসারদের শাস্তির নিদান

যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে কর দিচ্ছেন না, এমন সম্পত্তির মালিকদের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিতে হবে।

ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ কড়া ভাষায় আধিকারিকদের জানিয়ে দেন, কর আদায়ের ক্ষেত্রে আরও তৎপর হতে হবে।

ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ কড়া ভাষায় আধিকারিকদের জানিয়ে দেন, কর আদায়ের ক্ষেত্রে আরও তৎপর হতে হবে।

সোমনাথ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ১৯:১৭
Share: Save:

শোভন চট্টোপাধ্যায় থেকে ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল জমানাতে মেয়র বদল হলেও, কর আদায়ের চেনা ছবি পাল্টালো না। উল্টে বকেয়া করের বোঝা টানতে গিয়ে রীতি মতো হিমশিম খেতে হচ্ছে কলকাতা পুরসভাকে। বকেয়া করের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে দক্ষিণ কলকাতা ইউনিট। পুরসভার একটি সূত্র বলছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই ইউনিট থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার কর আদায় করা যায়নি। কলকাতার বাকি পাঁচটি ইউনিটের একই হাল। তাই এ বার কর আদায়ে কোমর বেঁধে নামতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।

এক দিকে যেমন কর দিতে একাংশের নাগরিকদের মধ্যে অনীহা রয়েছে, তেমন কর আদায়ের ক্ষেত্রেও অফিসারদের ঢিলেঢালা মনোভাব দেখা যায়। এই দু’টি ক্ষেত্রেই কোনও রকম গড়িমসি বরদাস্ত করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। বুধবার দক্ষিণ কলকাতার কর নির্ধারণ বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তিনি কড়া ভাষায় আধিকারিকদের জানিয়ে দেন, কর আদায়ের ক্ষেত্রে আরও তৎপর হতে হবে। যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে কর দিচ্ছেন না, এমন সম্পত্তির মালিকদের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিতে হবে।

বৈঠকের বিষয়ে অতীন ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যে সব জায়গা থেকে বকেয়া কর বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল, সেই সব ওয়ার্ড থেকে কর পাওয়া যাচ্ছে না। তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। টার্গেট দেওয়া হয়েছে। ইনস্পেক্টর, ম্যানেজার, চিফ ম্যানেজারদের বলা হয়েছে ওয়ার্ড ধরে ধরে কর আদায় করতে। ৩১ মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরও পড়ুন: বাড়ির বাতিল ল্যাপটপ, মোবাইল নিয়ে যাবে পুরসভা

বিরোধীদের বক্তব্য, ঠিক মতো কর আদায় না হলে উন্নয়নমূলক কাজের গতিও শ্লথ হয়ে যায়। কর আদায় না করতে পারাটা প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসাবেই তাঁরা দেখছেন। তাঁদের দাবি, গত আর্থিক বছরে কলকাতায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বকেয়া করের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল। এ বার তা আরও বাড়তে পারে। কত টাকা বকেয়া রয়েছে, তা স্পষ্ট ভাবে জানানো উচিত। পুরসভার একটি সূত্রে খবর, এই আর্থিক বছরে বকেয়া করের পরিমাণ হতে পারে চার হাজার কোটি টাকার আশপাশে।

আসন্ন পুরসভা নির্বাচনে কর আদায়ের বিষয়টি নিয়ে প্রচারেও নামতে চাইছেন বিরোধীরা। পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী তথা সিপিএম কাউন্সিলর রত্না রায় মজুমদার বলেন, “আমরা কর আদায়ের বিপক্ষে নই। কর আদায় হলে উন্নয়নের কাজে গতি বাড়বে। কিন্তু তৃণমূল বোর্ড কর প্রদানের সরলীকরণ করতে ব্যর্থ। ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট চালু হয়েছে। এই পদ্ধতিতে কী ভাবে করের মূল্যায়ণ হবে, তা বোঝাতে পারেনি পুরসভা। অনেক সময় দেখা গিয়েছে, এই পদ্ধতিতে সম্পত্তির কর বেড়ে গিয়েছে।”

কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডকে ৬টি ইউনিটে ভাগ করা হয়েছে। ৬৬ এবং ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড বাদে দক্ষিণ কলকাতা ইউনিটের মধ্যে পড়ছে ৫২ থেকে ৯০ নম্বর ওয়ার্ড। উত্তর কলকাতা ইউনিটে ১ থেকে ৫১, দক্ষিণ শহরতলি ইউনিটে ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর বরো, যাদবপুর ইউনিট ১১ এবং ১২ ওয়ার্ড এবং গার্ডেনরিচ ইউনিট ১৫ বরো নিয়ে।

আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসাথী-তে নাম, তবু টাকা আদায় নার্সিংহোমের

এলাকাভিত্তিক সম্পত্তিকর আদায় (ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট) পদ্ধতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আমলেই চালু হয়েছে। কলকাতায় প্রায় সাত লক্ষ কর দাতা রয়েছেন। তাঁদের একটা বড় অংশেরই অভিযোগ, নতুন পদ্ধতির জটিলতার কারণে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ কমছে। কিন্তু প্রতিটি বরোয় কর আদায়ের বিষয়ে ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। তাতেও আগ্রহী হয়নি করদাতারা। দক্ষিণ কলকাতায় বেশির ভাগ বহুতল, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, বকেয়া রয়েছে কর। ছোট কর দাতারা সময়ই কর দিচ্ছেন। যেমন, গার্ডেনরিচে কর দেওয়ার প্রবণতা আগের থেকে বেড়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Municipality KMC Atin Ghosh Property Tax
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy