Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Municipal Election 2021

KMC Polls 2021: কলকাতার পুরভোটে দিনভর উত্তেজনা, শান্তিতে না অশান্তিতে চাপানউতর চরমে

রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং কলকাতা পুলিশের মতে, কয়েকটি বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটলেও মোটের উপর ভোট শান্তিপূর্ণ। বুথ দখলের কোনও ঘটনা হয়নি।

কলকাতা পুরভোটের খণ্ডচিত্র।

কলকাতা পুরভোটের খণ্ডচিত্র। ছবি: পিটিআই।

অমিত রায়, ভাস্কর মান্না
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:০৪
Share: Save:

দিনভর উত্তেজনার আবহেই শেষ হল কলকাতার পুরভোট। শহরের নানা প্রান্তে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। দু’জায়গায় বোমাবাজি হয়েছে। রক্তও ঝরেছে দু’-একজনের। বিরোধীদের অভিযোগ, সকাল থেকেই বুথ দখল করে, সন্ত্রাস ছড়িয়ে ‘ভোট করিয়েছে’ শাসকদল। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতেই সব জায়গায় প্রার্থীই দিতে না পারা বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস শান্তিপূর্ণ ভোটকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চালিয়েছে দিনভর। রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং কলকাতা পুলিশের মতে, কয়েকটি বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটলেও মোটের উপর ভোট শান্তিপূর্ণ। বুথ দখলের কোনও ঘটনা হয়নি বলেও জানিয়েছে কমিশন।

রবিবাসরীয় পুরভোটের‘সৌজন্যে’ নজিরবিহীন বিরোধী ঐক্যেরও সাক্ষী হয়েছে শহর। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে উত্তর কলকাতার বড়তলা থানার সামনে মিলিত ভাবে অবস্থান বিক্ষোভ করেছে রাজ্যের তিন বিরোধী দল— বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস। তিন দলই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পৃথক ভাবে অশান্তি এবং অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছে।

বড় কোনও অশান্তি না ঘটলেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিরোধী প্রার্থী এবং কর্মীদের মারধর, পোলিং এজেন্টকে হেনস্থা, বিরোধীদের বুথ ক্যাম্পে হামলার অভিযোগ উঠেছে। প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও ঝরেছে রক্ত! শিয়ালদহের টাকি স্কুলের সামনে বোমায় জখম হয়েছেন এক জন। বেলেঘাটার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডেও শাসকদলের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। যদিও শিয়ালদহে বোমাবাজিতে আহত হওয়ার কথা স্বীকার করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিআইটি পার্ক পোলিং স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়েছে ইভিএম। ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী, প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র মীনা দেবী পুরোহিতের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী বিজয় ওঝাও আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। খিদিরপুরে হামলা হয়েছে সিপিএম প্রার্থী ফৈয়াজ আহমেদ খানের উপর। ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী আশিস মণ্ডল সিরিটির একটি বুথে ঢুকতে গিয়ে নিগ্রহের শিকার হন। ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে মারধর করা হয় কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠকের এজেন্টকে। প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল শাসক দলের দিকে।

সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে বুথে বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বেলেঘাটার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের খন্না হাইস্কুলের বুথে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার জন্য সেই সিসি ক্যামেরাকেই ঢেকে দেওয়া হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু কিছু অশান্তির ঘটনা ঘটলেও বুথ দখলের কোনও ঘটনা ঘটেনি। খন্নার ওই বুথে সিসি ক্যামেরা ঢেকে দেওয়ার কথাও জানায়নি কমিশন। তবে ৪৫৩টি অভিযোগ জমা পড়ার কথা জানিয়েছে কমিশন। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, গোলমাল বাধানোর অভিযোগে শহরে ১৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বিরোধীদের তোলা অশান্তির অভিযোগ খারিজ করে রবিবার বিকেল বলেন, ‘‘ভাল ভাবেই ভোট হচ্ছে।’’ অন্য দিকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আশ্বাস’, ‘‘অশান্তির ভিডিয়ো ফুটেজ থাকলে আনুন। তৃণমূল কেউ, কোথাও, কোনও জড়িত আছে প্রমাণ দিতে পারলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দল ব্যবস্থা নেবে।’’

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ খারিজ করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্য নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE