প্রতীকী ছবি।
একে রবিবার, তার উপরে পুরভোট। সকাল সকাল বাড়ির কাজ সেরে দাঁড়িয়ে ছিলেন মাংসের দোকানের লাইনে। ভোট দিয়ে জম্পেশ মধ্যাহ্নভোজ সারতে হবে তো! এর পরে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সেজেগুজে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটকেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতেই শুনতে হল, ‘‘এ মা, আপনি এখন! আপনার ভোট তো আগেই হয়ে গিয়েছে। এই দেখুন, ভোটার তালিকাতেও টিক দেওয়া!’’ এ দিন ভোট দিতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে হয়েছে ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘা যতীন এলাকার এক ভোটারকে। একই অভিজ্ঞতা হয়েছে আরও কয়েকটি ওয়ার্ডের বেশ কয়েক জনের। কে, কখন, কী ভাবে পরিচয়পত্র ছাড়া ভোট দিয়ে গেল, ভোটারদের সেই প্রশ্নের অবশ্য কোনও উত্তর মেলেনি।
অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই এ দিন সকাল থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ পর্ব। কোথাও বোমাবাজি তো কোথাও এজেন্টকে মারধর— একের পর এক অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। শুধু তা-ই নয়, ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটদান কক্ষে পৌঁছেও বেশ কয়েক জন ভোটারকে শুনতে হয়েছে, তাঁর ভোট পড়ে গিয়েছে। এ দিন তারাতলা এলাকায় সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ভোট দিতে যান ৮০ নম্বর ওয়ার্ডের বছর চব্বিশের এক যুবক। তাঁর দাদা বললেন, ‘‘সকালে বাড়ি থেকে ও একাই গিয়েছিল। বুথে যেতেই বলে দেওয়া হয়, আপনার ভোট আগেই পড়ে গিয়েছে। ও পাল্টা প্রশ্ন করে, আমি তো এখন এলাম! পরিচয়পত্র-সহ আঙুলে ভোটের কালির চিহ্নও দেখায়। তাতেও লাভ হয়নি। ভোট না দিয়েই ফিরে আসতে হয় ওকে।’’ একই অভিজ্ঞতা হয়েছে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চসায়রের বাসিন্দা এক প্রৌঢ় এবং রবীন্দ্রপল্লির এক বাসিন্দার। ভোট না দিয়ে ফেরা, বাঘা যতীনের শীল দম্পতি বললেন, ‘‘বুথে ঢুকতেই রে রে করে কয়েক জন তেড়ে এসে বলল, আপনি কেন? আপনার ভোট পড়ে গিয়েছে। পুলিশকে গিয়ে বললাম। তাঁরা নীরব দর্শক। কিছুই হবে না জেনে ভোট না দিয়েই দু’জনে বাড়ি ফিরে এসেছি।’’
অন্যের ভোট দিয়ে দেওয়ার অভিযোগই শুধু নয়, তিন বছর আগে মৃত এক ব্যক্তির ভোট পড়ে যাওয়ার ঘটনাও সামনে এসেছে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরের একটি ওয়ার্ডে। তাঁর ছেলে, সন্তোষপুরের বাসিন্দা বছর চল্লিশের যুবক এ দিন বলেন, ‘‘তিন বছর আগে বাবা মারা গিয়েছেন। ভোটার তালিকায় নামটা থেকে গিয়েছিল। এ দিন নিজের ভোট দিতে গিয়ে শুনলাম, বাবার ভোটটাও পড়ে গিয়েছে।’’ রসিকতা করে ওই যুবক এর পরে বলেন, ‘‘একটাই আক্ষেপ, আমার একটু দেরি হয়ে গেল! একটু আগে গেলে হয়তো মৃত বাবাকে আর এক বার চোখের দেখা দেখতে পেতাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy