Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Dharna

Dharna: ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি সত্ত্বেও ধর্নামঞ্চ ছাড়বেন না চাকরিপ্রার্থীরা

শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার আন্দোলনকারীরা একটি বটগাছের নীচে তাঁদের মঞ্চ বানিয়েছেন।

রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন বিক্ষোভরত এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের। সোমবার, গান্ধী মূর্তির পাদদেশে।

রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন বিক্ষোভরত এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের। সোমবার, গান্ধী মূর্তির পাদদেশে। সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২২ ০৭:৩৪
Share: Save:

জ্বালা ধরানো গরমে ওঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে ছিল একটি প্লাস্টিকের ত্রিপল। অন্য দিকে, সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে আজ, মঙ্গলবার থেকে হতে পারে ভারী বৃষ্টি। কিন্তু এই ঝড় এবং বৃষ্টির চোখরাঙানিতেও তাঁদের ভরসা ওই প্লাস্টিকের ত্রিপলই। ধর্মতলায় শহিদ মিনারের কাছে ধর্না চালিয়ে যাওয়া শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থী এবং গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসা নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা একযোগে এ দিন জানিয়ে দিলেন, মাথার উপরে থাকা ছাউনি ঝড়ে উড়ে গেলেও তাঁরা ধর্নামঞ্চ থেকে সরবেন না।

আন্দোলনকারীরা জানালেন, তাঁরা এত দিন তীব্র গরম উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে এসেছেন। এ বার দরকারে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটও সহ্য করবেন। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জন্য প্যানেলের মেয়াদ বাড়িয়ে শূন্য পদ সৃষ্টি করে চাকরির নিশ্চয়তা দিলেও যত দিন না আন্দোলনরত সব প্রার্থীর কাউন্সেলিং হয়ে চাকরি সুনিশ্চিত হচ্ছে, তত দিন তাঁরা উঠবেন না। কারণ, এর আগেও তাঁরা নিয়োগের আশ্বাস পেয়েছেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেই আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়নি।

কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার প্রার্থী অতনু রায়, ঈশিতা ইলারা জানালেন, সোমবার সকালে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে তাঁরা প্রায় সকলেই ভিজে গিয়েছেন। দু’টি ত্রিপল মাথার উপরে থাকলেও তাতে বৃষ্টি আটকায়নি। ব্যাগ এবং অন্যান্য জিনিস বাঁচাতে গিয়ে তাঁরা নিজেরাই ভিজে গিয়েছেন। এমনকি, যে ত্রিপল পেতে তাঁরা মাটিতে বসছেন, ভিজে গিয়েছে সেটিও। উপায় না থাকায় ভেজা ত্রিপলেই তাঁদের বসতে হচ্ছে।

কিন্তু আগামী দু’দিনের মধ্যে যদি ঘূর্ণিঝড় এসেই যায়, তা হলে তো মাথার উপরে থাকা এই অস্থায়ী ছাউনি ঝড়ে উড়ে যেতে পারে। শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার আন্দোলনকারীরা একটি বটগাছের নীচে তাঁদের মঞ্চ বানিয়েছেন। ঝড়ে সেই বটগাছের ডাল ভেঙে বড় অঘটনও ঘটতে পারে। অতনু বলেন, ‘‘সেই সব আশঙ্কা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা মঞ্চ ছাড়ছি না। আরও দুটো ত্রিপল পেয়েছি। তা দিয়েই বৃষ্টি আটকানোর চেষ্টা করব। ঈশিতা বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড় আসছে শুনে আমাদের বাড়ির লোকজনও যথেষ্ট চিন্তিত। তা-ও তাঁরা বলছেন, ঝড়-বৃষ্টি হলেও মঞ্চ যেন না ছাড়ি। এত দিনের লড়াইয়ে যেন পিছু না হটি।’’ শারীরশিক্ষার আর এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘রাজ্যবাসীকে খেলা দিবস পালন করতে বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ, হবু শিক্ষকেরা এখনও চাকরির জন্য রাস্তায় বসে আছেন।’’

এ দিন গান্ধী মূর্তির কাছে এসএসসি-র নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন-মঞ্চে গিয়ে দেখা গেল, বৃষ্টি কমতেই মেঘলা আকাশের নীচে শুরু হয়েছে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন। বিশ্বকবির ছবিতে কৃষ্ণচূড়া ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিন চাকরিপ্রার্থী শ্রাবণী, সুমনা, সাধনারা গাইছেন ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’। এক চাকরিপ্রার্থী মিঠুন বিশ্বাস জানান, এ দিন সকালের বৃষ্টিতে ময়দানের কৃষ্ণচূড়া গাছ থেকে অনেক ফুল পড়েছে। সেই ফুল সাজিয়ে তাঁরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথকে।

ওই মঞ্চে দেখা গেল, চাকরিপ্রার্থীদেরই গায়ের জামা বৃষ্টিতে ভেজা। তাঁদের মাথার উপরেও রয়েছে শুধু ত্রিপল। স্বরূপ বিশ্বাস নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের থেকেও বেশি ঘূর্ণিপাকে আমাদের ভাগ্য। তাই মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এখনও চাকরি পেলাম না।’’ শেখ জামাল নামে আর এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘শুধু তো ঘূর্ণিঝড় নয়, কিছু দিন পরেই বর্ষা আসবে। জানি, বার বার আবহাওয়া বিরূপ হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্যানেলের মেয়াদ বাড়িয়ে শূন্য পদ তৈরি করায় তাঁকে ধন্যবাদ। কিন্তু ধর্নামঞ্চে থাকা প্রত্যেক প্রার্থীর কাউন্সেলিং হয়ে তাঁরা নিয়োগপত্র পাওয়া পর্যন্ত নড়ব না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dharna Job job aspirants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy