Advertisement
E-Paper

Fake Vaccine: প্রতিষেধকের নামে কী দেওয়া হয়েছিল, রহস্য ১৭ দিন পরেও

কসবার ভুয়ো প্রতিষেধক শিবিরের ঘটনা সামনে আসার ১৭ দিন পরেও ব্যবহৃত ভায়ালে ঠিক কী ছিল, তার উত্তর না পাওয়ায় এখন নানা মহল থেকে এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২১ ০৪:৫৪
Share
Save

প্রতিষেধকের নামে শরীরে কী ঢুকল, সেই প্রশ্নটি কি কম গুরুত্বপূর্ণ? কসবার ভুয়ো প্রতিষেধক শিবিরের ঘটনা সামনে আসার ১৭ দিন পরেও ব্যবহৃত ভায়ালে ঠিক কী ছিল, তার উত্তর না পাওয়ায় এখন নানা মহল থেকে এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। কারণ, এই বিষয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারেনি। সবটাই জানানো হয়েছে তাদের অনুমানের উপরে ভিত্তি করে। অনেকের আবার প্রশ্ন, ভুয়ো প্রতিষেধকের মতো জরুরি মামলার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ফরেন্সিক রিপোর্ট আসতে কি এত দেরি হওয়ার কথা?

এই সব প্রশ্নের কোনও উত্তরই অবশ্য মিলছে না লালবাজারের কোনও কর্তার কাছ থেকে। যদিও এই ঘটনার তদন্তে গঠিত ‘সিট’ (স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম)-এর এক সদস্য বললেন, “রিপোর্ট একটা এসেছে, কিন্তু সেটাকে এখনই চূড়ান্ত বলে ধরা যাচ্ছে না কিছু বাধ্যবাধকতার কারণে।” কিন্তু কী সেই বাধ্যবাধকতা? স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।

এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের বাড়ি থেকে তরল ভর্তি বেশ কয়েকটি ভায়াল উদ্ধার করেছিলেন কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সেগুলি পাঠানো হয়েছিল বেলগাছিয়ার রাজ্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে। সেখানকার টক্সিকোলজি বিভাগে শুরু হয় ওই তরলের পরীক্ষা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, সেখানকার ‘ড্রাগ’ বিষয়ক এক ফরেন্সিক গবেষক বললেন, “নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এই ধরনের তরল বেশ কয়েক ধাপে পরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হয় যে, সেটি আদতে কী? বিভিন্ন তরলের চারিত্রিক ধরন বিশ্লেষণ করে মিলিয়ে দেখা হয়, সংশ্লিষ্ট তরলের সঙ্গে কোনটির সব চেয়ে বেশি মিল রয়েছে। নিশ্চিত হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। জরুরি ক্ষেত্রে অন্তত দু’সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একটি রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে নমুনা পাওয়ার সাত দিনের মধ্যেই।” কী ছিল ওই রিপোর্টে? স্পষ্ট করে বলতে না চাইলেও ওই গবেষকের দাবি, ভায়ালে যে তরল মিলেছে, সেটিই যে ভুয়ো শিবিরে ব্যবহৃত হয়েছিল, সেই ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ, ওই সব শিবির থেকে কোনও নমুনা সংগ্রহ হয়নি। সে কারণেই ধৃতের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া তরল আদতে কী, তা নিয়ে এগিয়েও লাভ কিছু হচ্ছে না। ওই গবেষক বলেন, “এ ক্ষেত্রে শিবিরে ব্যবহৃত তরল আলাদাও হতে পারে। এই কারণেই আদালতে দেওয়া হলফনামাতেও নিশ্চিত করে কিছু বলা যায়নি।”

আদালতে দেওয়া হলফনামায় পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বাড়ি থেকে যে ভায়াল মিলেছে, তার উপরে কোভিশিল্ড এবং স্পুটনিক-ভি এর নকল স্টিকার লাগানো ছিল। তার মধ্যে যে তরল মিলেছে সেগুলি অ্যামিকাসিন এবং ট্রায়ামসিনোলোন হতে পারে। ভুয়ো শিবিরে এই দু’টি তরলই ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, সেটা তদন্তসাপেক্ষ। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর জন্য তরলের নমুনা ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজ়িজ়েস’ বা নাইসেডে পাঠানো হয়েছে। লালবাজারের এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের কথায়, “আদতে ভুয়ো শিবির থেকে মানুষের শরীরে কী গিয়েছে তা ধরাই যায়নি। ফলে অ্যামিকাসিন এবং ট্রায়ামসিনোলোনের মতো কিছু গেলে কী কী ক্ষতি হতে পারে, সেই ব্যাপারেই পরামর্শ চেয়ে পাঠানো হয়েছে নাইসেডের কাছে।”

এর পরেও প্রশ্ন, ভুয়ো প্রতিষেধক দেওয়া নিয়েই যে মামলা, তাতে যদি জানাই না যায় সাধারণ মানুষের দেহে প্রতিষেধকের নামে আদতে কী গিয়েছে, তা হলে তদন্ত এগোবে কিসের ভিত্তিতে? ফরেন্সিক গবেষকদের দাবি, এই ক্ষেত্রে দু’টি উপায় খোলা থাকছে। প্রথমত, ভুয়ো শিবিরে যাঁরা প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করানো। সে ক্ষেত্রে পরিষ্কার হতে পারে দেহে কী গিয়েছে। দ্বিতীয়ত, প্রতিষেধক নিয়ে প্রতারণার দিকটি ছেড়ে বিশ্বাসভঙ্গ এবং আর্থিক প্রতারণার মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। শেষ পর্যন্ত পুলিশ কোন পথে হাঁটে, এখন সেটাই দেখার।

kasba Fake Vaccination Fake Vaccine

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}