Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
East West Metro

ইস্ট-ওয়েস্টের কাজ শেষ হতে অন্তত আরও এক বছর!

বর্তমানে সল্টলেকের সেক্টর ৫ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত চালু রয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা। পূর্ব দিকের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও পশ্চিমের বাধা কাটছে না বলে অভিযোগ।

বৌবাজারে বারবার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে মেট্রোর কাজ।

বৌবাজারে বারবার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে মেট্রোর কাজ। ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৫৩
Share: Save:

আগামী জানুয়ারিতে তো নয়ই, নতুন বছরের প্রথমার্ধেও শেষ হবে না ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ। নতুন করে আর বিপত্তি দেখা না দিলে কাজ শেষ হতে আগামী বছরের নভেম্বর হয়ে যাবে বলে খবর কেএমআরসিএল (কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড) সূত্রের। আপাতত এই লক্ষ্যমাত্রা ধরেই এগোনোর চেষ্টা করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বৌবাজারের সাম্প্রতিক বিপর্যয় প্রকল্পের কাজ অন্তত সাত-আট মাস পিছিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন সংস্থার আধিকারিকদের একাংশ।

বর্তমানে সল্টলেকের সেক্টর ৫ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত চালু রয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা। পূর্ব দিকের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও পশ্চিমের বাধা কাটছে না বলে অভিযোগ। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই মেট্রোপথের পশ্চিমে হাওড়া ময়দান, হাওড়া ছাড়াও বি বা দী বাগ স্টেশনের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার মুখে। এসপ্লানেড স্টেশনের কাজও অন্তিম পর্যায়ে। হাওড়া থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত অংশের মেট্রোপথ কার্যত তৈরি। হাওড়া থেকে শিয়ালদহের দিকে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজও শেষ হয়েছে আগেই। ওই সুড়ঙ্গে লাইন পাতার কাজও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু,২০১৯ সাল থেকে তিন বছরে তিন বার বিপত্তির জেরে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না। এসপ্লানেড ও শিয়ালদহের মধ্যে ওই সুড়ঙ্গের বেশির ভাগটাই তৈরি হয়ে গিয়েছে। ভোগাচ্ছে শুধু বৌবাজারের ক্ষুদ্র অংশটি। যার মধ্যে জোড়া টিবিএম (টানেল বোরিং মেশিন) বার করার জন্য নির্মিত ৪০ মিটার দীর্ঘ চৌবাচ্চার অংশটি অন্যতম। কারণ, সেখানে সুড়ঙ্গ তৈরি করতে হবে। এ ছাড়াও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের উদ্ধার করার জন্য শিয়ালদহ ও এসপ্লানেডের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে আটটি সংযোগকারী সুড়ঙ্গ তৈরি করতে হবে। ছয় থেকে দশ মিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গ ট্রেন চলাচলের জোড়া সুড়ঙ্গের মধ্যে সংযোগকারী পথ হিসাবে কাজ করবে। মোট আটটি সুড়ঙ্গের মধ্যে তিনটি তৈরি হয়ে গেলেও এখনও পাঁচটি বাকি।

গত ১৪ অক্টোবর বৌবাজার স্ট্রিট সংলগ্ন মদন দত্ত লেনে মাটির প্রায় ১০ মিটার গভীরে ওই সুড়ঙ্গ তৈরির সময়েই বিপত্তি ঘটে। জল ঠেকাতে সুড়ঙ্গের কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। অর্ধেক তৈরি সুড়ঙ্গ ফের বুজিয়ে ফিরে আসতে হয় মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। আপাতত ওই সুড়ঙ্গ ছাড়াও শিয়ালদহের দিকে ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া মোড় সংলগ্ন অংশে একটি সংযোগকারী পথ তৈরি করতে হবে। মদন দত্ত লেনের পুরনো সুড়ঙ্গ এবং ওই অংশের প্রস্তাবিত সুড়ঙ্গ তৈরির কাজে হাত দেওয়াই এখন মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যাবতীয় প্রস্তুতি সত্ত্বেও আচমকা বেরিয়ে আসা জল এবং বালির স্তরের খামখেয়ালি আচরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। ওই অংশের কাজ কী ভাবে, কখন শুরু করা যাবে, তা নিয়ে নিরন্তর মাথা ঘামাচ্ছেন মেট্রোকর্তারা। নতুন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। প্রায় ৪০ মিটার দীর্ঘ চৌবাচ্চার ভিতরে একাংশে এখন পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ চলছে। তবে, ওই সুড়ঙ্গের পশ্চিমে ৯ মিটার অংশে, যেখান থেকে গত মে মাসে জল বেরিয়ে এসেছিল, সেখানে এখনও হাত দেওয়া যায়নি। পরিস্থিতি অনুকূল হলে ওই কাজ সেরে ফেলা হবে।

পর পর তিন বার বিলম্বের কারণে প্রকল্পের খরচ বেড়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনার ৮৫৪২ কোটি টাকার উপরে আরও দু’হাজার কোটি টাকা খরচ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, ওই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দে কোনও ঘাটতি নেই বলেই জানিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। গোটা প্রকল্পের ভূগর্ভস্থ অংশ বা মাটির নীচের মেট্রোপথ তৈরির খরচের ৪৮ শতাংশ দিয়েছে জাইকা। ওই টাকা আগেই এসে গিয়েছে। এখন কেন্দ্রের কাছে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ টাকা মিলছে বলে দাবি কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষের।

অন্য বিষয়গুলি:

East West Metro KMRCL
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy