E-Paper

নামফলক-হোর্ডিং লিখতে হবে বাংলায়, বিজ্ঞপ্তি পুরসভার

গত ২৬ অক্টোবর কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি বিশ্বরূপ দে প্রস্তাবে জানিয়েছিলেন, বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে।

কলকাতা পৌরসংস্থা।

কলকাতা পৌরসংস্থা। —ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:১৭
Share
Save

বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং থেকে দোকানের সাইনবোর্ড, সরকারি দফতরের নামের বোর্ড থেকে রাস্তার নামফলক— সবই এ বার থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে লিখতে হবে বাংলাতেও। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার সচিবের তরফে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নামফলকে বাংলায় লেখা কার্যকর করতে পুরসভার তরফে ২৬ নভেম্বর লালবাজারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

লালবাজারের তরফে শহরের প্রতিটি থানায় সেই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। সমস্ত থানা এলাকার ব্যবসায়ীরা যাতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নামফলকে অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলাতেও লেখেন, তার তত্ত্বাবধান করবেন থানার ওসি-রা। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এখনও শহরের বহু দোকান, রেস্তরাঁর নামফলকে বাংলা লেখা নেই। এ বার থেকে নামফলকে অন্যান্য ভাষা থাকলেও বাংলা অবশ্যই রাখতে হবে। এই নীতির বাস্তবায়ন করতে কলকাতা পুরসভার পাশাপাশি কলকাতা পুলিশও নজর রাখবে।’’

গত ২৬ অক্টোবর কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি বিশ্বরূপ দে প্রস্তাবে জানিয়েছিলেন, বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই পুরসভার অধীনে সরকারি, বেসরকারি স্তরে যাবতীয় সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষা থাকা উচিত। এর পাশাপাশি, পুরসভার নথি-সহ সব রকম চিঠিপত্র ও বিজ্ঞপ্তিও বাংলাতেই লেখা প্রয়োজন। সেই প্রস্তাবে মেয়র সম্মতি দেন। তার পরেই সেই নীতি কার্যকর করতে পুর সচিবের তরফে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পুর সচিব স্বপনকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘শহরের দোকান, রেস্তরাঁর নামফলকে বাংলায় লেখা কার্যকর করতে পুরসভার বিজ্ঞাপন, লাইসেন্স দফতর ওই সমস্ত দোকান, রেস্তরাঁ-সহ বিভিন্ন সংস্থার কর্ণধারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও ব্যবসায়ীদের বার্তা দেওয়া হবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগেই শহরের সমস্ত দোকান, রেস্তরাঁ-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামফলকে বাংলায় লেখা কার্যকর করতে চান পুর কর্তৃপক্ষ। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘অতীতে বাম আমলে বিকাশ ভট্টাচার্য মেয়র থাকাকালীন শহরের দোকান, রেস্তরাঁর নামফলকে বাংলা লেখা বাধ্যতামূলক করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। তার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না ঘটে, সে জন্য নামফলকে বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক করতে পুলিশকে নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ করতে চায় পুরসভা।’’

এই প্রসঙ্গে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। নামফলকে ইংরেজি বা হিন্দিতে লেখা থাক, তাতে অসুবিধা নেই। কিন্তু বাংলাতেও লেখা থাকতে হবে। অনেক জায়গায় বাংলায় হোর্ডিং থাকেই না। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এটা নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে প্রথম আন্দোলন শুরু করেছিলেন। বাম সরকার কিছুটা উদ্যোগী হলেও কাজটা শেষ হয়নি। এই সরকারের আমলেও কার্যকর হয়নি। বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে নামফলকে বাংলা বাধ্যতামূলক করা উচিত।’’ সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদারের পর্যবেক্ষণ, ‘‘প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে এটুকুই যথেষ্ট নয়। প্রত্যেক স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত বাংলা পড়ানো বাধ্যতামূলক হোক। এর অন্যথা হলে নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার স্বাদ পাবে না। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা শিক্ষা বাধ্যতামূলক না করলে কেউ বাংলা শিখতেই চাইবে না। এটা হলে বাংলা ভাষা পুনরুজ্জীবিত হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

KMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।