—প্রতীকী ছবি।
শিবিরে আসা রক্তদাতার হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করা জরুরি। অথচ অভিযোগ, বেশির ভাগ রক্তদান শিবিরে সেটা হয় না। ফলে দাতা ও গ্রহীতার স্বাস্থ্য-সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এমনই অভিযোগ তুলে জাতীয় রক্ত সঞ্চালন পর্ষদ এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিল রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সংগঠন।
দেশে এই মুহূর্তে প্রায় চার হাজার ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। সরকারি স্তরে রয়েছে ১১৬২টি। দেশের
সমস্ত ব্লাড ব্যাঙ্ক পরিচালনার জন্য লাইসেন্স প্রদান করে ‘ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অব ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই)। রক্তদান শিবিরে কী কী নিয়ম মানতে হবে, সেই বিষয়ে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার কিছু নির্দেশিকা রয়েছে। যার মধ্যে রক্তদাতার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পরীক্ষা আবশ্যিক। কিন্তু এ রাজ্যে বিশেষত সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক যে শিবিরগুলি করে, সেখানে প্যাথলজিক্যাল পদ্ধতিতে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করা হয় না বলেই অভিযোগ করেছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম’। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তথা জাতীয় রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি শিবিরে দাবি করা হয়, মেডিক্যাল অফিসার চোখের নীচ ও জিভ দেখে রক্তদাতার হিমোগ্লোবিন ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা করেন। এটা ঠিক পদ্ধতি নয়। ডিসিজিআই-এর নির্দেশিকায় প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার কথা আছে।’’
তিনি জানাচ্ছেন, ১৯৮০ সালের আগে কপার সালফার পদ্ধতিতে দাতার হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা হত। এডসের মতো সংক্রামক রোগের কারণে সেটি বন্ধ হয়েছে। কারণ, একই সুচ অনেকের আঙুলের ডগায় ফুটিয়ে রক্তের ফোঁটা নেওয়া হলে এডস ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। অপূর্ব জানাচ্ছেন, কপার সালফার পদ্ধতিতে ১০০ জনের পরীক্ষায় ২০০ টাকা খরচ হত। আর জেল পদ্ধতিতে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা জানতে রক্তদাতা পিছু ১৫ টাকা খরচ হয়। পুরুষদের ১২.৫ এবং মহিলাদের ১১.৫-এর নীচে হিমোগ্লোবিন থাকলে বুঝতে হবে, সংশ্লিষ্ট দাতার শারীরিক সমস্যা রয়েছে।
হেমাটোলজিস্ট প্রান্তর চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, যাঁর কম রয়েছে, তাঁর থেকে রক্ত নিলে সেই ব্যক্তির ক্ষতি। যে গ্রহীতাকে দেওয়া হচ্ছে, তাঁর কাজে না লাগলে সেটিও ক্ষতি।’’ প্রান্তর আরও জানাচ্ছেন, হিমোগ্লোবিনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার অনেক নন-ইনভেসিভ পন্থা আসছে। দাতার চোখের নীচের অংশ আর জিভ পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়।
অপূর্ব জানাচ্ছেন, সম্প্রতি জাতীয় রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেলকে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্য দফতরের রক্ত-সুরক্ষা বিভাগের কর্তাকেও চিঠি দিয়েছেন। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘আমরাও দেখছি। রাজ্যে রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থাপনা যথাযথ পরিচালনার জন্য কমিটি গড়া হয়েছে। কমিটির সদস্যেরাও দেখবেন বিষয়টি।’’
অন্য দিকে, শিবিরে রক্তের ব্যাগগুলিকে মাটিতে না রেখে মনিটর বা দাঁড়িপাল্লার মতো যন্ত্রে রাখা বাধ্যতামূলক করার কথা বলছে একাধিক সংগঠন। তাদের তরফে দীপঙ্কর মিত্র বলেন, ‘‘বাধ্যতামূলক নিয়ম অধিকাংশ শিবিরেই মানা হয় না। সব জেনেও স্বাস্থ্য প্রশাসন চুপ। হিমোগ্লোবিন পরীক্ষার মতো অন্য নিয়মও মানা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy