Advertisement
E-Paper

Nurse maid Service: বেআইনি, সরকারি হাসপাতালে তবু চলছে ‘আয়া-রাজ’

এই মুহূর্তে নিখরচার সরকারি চিকিৎসা পেতে আয়ার খরচ হিসেবে রোগীর পরিজনদের গুনতে হয় দৈনিক প্রায় ৬০০ টাকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২১ ০৭:২৫
Share
Save

সরকারি নথি অনুযায়ী ওঁদের কোনও অস্তিত্বই নেই। অথচ, হাসপাতালের সর্বত্রই ওঁদের রমরমা উপস্থিতি। ওঁরা সরকারি হাসপাতালের আয়া। ওঁদের ‘খুশি’ করতে না পারলে বন্ধ হয়ে যায় মুমূর্ষু রোগীর খাবার ও দেখভাল। হুমকির সুরে বলে দেওয়া হয়, রোগী কেমন আছেন, সেই খবরটুকুও পাবেন না বাড়ির লোক! অভিযোগ, খুশি করার এই চেষ্টার পরেও একাধিক বার শৌচাগারে যাওয়ার আর্জি জানালে রোগীর জোটে নিগ্রহ। রোগী কথা বলতে অসমর্থ হলে আরও ভাল।

বুধবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুই পুরুষ আয়ার মারে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পরে সরকারি হাসপাতালের এই ‘আয়া-রাজ’ নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে!

এই মুহূর্তে নিখরচার সরকারি চিকিৎসা পেতে আয়ার খরচ হিসেবে রোগীর পরিজনদের গুনতে হয় দৈনিক প্রায় ৬০০ টাকা। কোথাও ১২ ঘণ্টার জন্য ২৫০, কোথাও আবার দিতে হয় ৩০০ টাকা। মানিকতলার বাসিন্দা সমীর বিশ্বাস নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর ক্যানসারে আক্রান্ত ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, আয়া বাবদ ওই বাড়তি খরচ করতে চান না তিনি। অভিযোগ, তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আয়া না রাখলে চিকিৎসকের বলা ওষুধ রোগীর কাছে পৌঁছবেই না। সমীরবাবুর কথায়, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল, আয়া হল হাসপাতালের পুরোহিত, আর চিকিৎসকেরা ভগবান।’’

আর জি করেই লিভারের সমস্যায় ভোগা, শয্যাশায়ী ভাইয়ের জন্য রাখা এক আয়াকে ‘সিস্টার’ বলে ডাকার জন্য চরম অপদস্থ হতে হয়েছিল উল্টোডাঙার সুমিতা ঘোষকে। তাঁর কথায়, ‘‘সে রাতে আমার ভাইকে কোনও খাবার আর ওষুধ দেওয়া হয়নি। ভাইয়ের মৃত্যুর পরে বলা হয়, আয়াদের খুশি করতে পারিনি বলেই নাকি ভাল করে চিকিৎসা হয়নি।’’

যাদবপুরের শ্রীরাধা বসু নামে এক মহিলার আবার অভিযোগ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রী-রোগ বিভাগে ভর্তি থাকা তাঁর পুত্রবধূ ও সদ্যোজাতের খবর দেওয়ার জন্য ৭০০ এবং ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। প্রথমেই বলে দেওয়া হয়েছিল, মেয়ে হলে আয়াকে এক হাজার টাকা বখশিস দিতে হবে। ছেলে হলে দু’হাজার!

স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, সরকারি হাসপাতালে আয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। রোগীর দেখভালের জন্য নার্সরা আছেন। আর রোগীর সঙ্গে থাকার কথা তাঁদের পরিজনেদের। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে হাসপাতালের নিরাপত্তা বা সাফাইয়ের কাজে যুক্ত কর্মীরাই ‘আয়া-চক্র’ চালান। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয়রানির আশঙ্কা করে রোগীর পরিবারও লিখিত অভিযোগ জানায় না। সমস্যার সমাধানে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের বার বার বদলির সিদ্ধান্ত হয়। রোগীদের পরিবারের একটি বড় অংশেরই অভিযোগ, ওই চতুর্থ শ্রেণির চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের একাংশই আয়া রাখতে পরিবারকে ‘চাপ’ দেন। বদলে তাঁদের সঙ্গে চলে আয়াদের বখরার হিসেব।

বেসরকারি একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে এসএসকেএমের অবশ্য একটি প্রকল্প রয়েছে। সেখানে দিনে ২৫০ টাকা দিয়ে রোগীর পরিবার নির্দিষ্ট অফিস থেকে আয়া নিতে পারে। যদিও সেখানেও দৌরাত্ম্যের অভিযোগ ওঠে প্রায়ই।

এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে না চাইলেও স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘এই সমস্যা মেটাতে স্টাফ নার্সের ঘাটতি পূরণ করা জরুরি। এই ঘাটতির কারণেই অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে বার্ন বা সার্জারি বিভাগে রোগীর মলম লাগানো থেকে ব্যান্ডেজ করার মতো কাজও করছেন আয়ারা।’’

Government hospitals Nurse Maid

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।