আর জি কর হাসপাতালের ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করে বাম যুব-ছাত্র সংগঠন। মিছিল শেষে তাঁরা হাসপাতালে ঢুকতে চাইলে পুলিশ ও অন্য পড়ুয়ারা বাঁধা দিলে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়।
তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহে যে ধরনের এবং যত সংখ্যক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে, তা কি এক জনের পক্ষে করা সম্ভব? আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনায় এই প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারী মেডিক্যাল পড়ুয়া এবং চিকিৎসকদের একাংশ। প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেও।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মৃতার দেহে ১১টির বেশি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। মিলেছে চোখ এবং মুখ থেকে রক্তপাতের প্রমাণও। আঘাতের চিহ্ন ছিল বাঁ পা, পেট, হাত, ঘাড়-সহ আরও একাধিক জায়গায়। একাধিক বার ধর্ষণ করা হয়েছিল তাঁকে। কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিনের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘অপরাধের ধরন এবং একাধিক আঘাতের চিহ্ন থেকে পরিষ্কার, তরুণীর উপরে
দীর্ঘ সময় ধরে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে তরুণী স্বাভাবিক ভাবে চিৎকার-চেঁচামেচি বা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এক জন এই ঘটনা ঘটালে তরুণী হয়তো চিৎকার করতে সক্ষম হতেন। কিন্তু তিনি তা করতে পারেননি। তাই একাধিক জন জড়িত বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে।’’ শহরের আরও একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিনের এক চিকিৎসক জানাচ্ছেন, এই ধরনের অপরাধে এক জন জড়িত থাকলে সাধারণত এত আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা নয়। ওই চিকিৎসকের কথায়, ‘‘তরুণীর শরীরের প্রতিটি ক্ষত পরীক্ষা করলে এই প্রশ্নের উত্তর মেলার কথা। অপরাধের ধরন দেখে এক জন জড়িত বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে না।’’
ফরেন্সিক মেডিসিনের আর এক প্রবীণ চিকিৎসক বললেন, ‘‘এক জন জড়িত থাকলে শরীরের এতগুলি অংশে আঘাতের চিহ্ন মেলার কথা নয়। একাধিক আঘাত থাকতেই পারে, কিন্তু সেগুলি শরীরের দু’-তিনটি অংশে থাকার কথা। এখানে মুখ থেকে শুরু করে পা— সর্বত্রই একাধিক গভীর ক্ষত। ৩৫ মিনিট সময়ের মধ্যে এত জায়গায় এতগুলি আঘাত এবং একাধিক বার ধর্ষণ থেকে তাই নানা সংশয় দেখা দিচ্ছে।’’
এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘গলা এবং বুক, দু’জায়গায় জোরে চেপে ধরার প্রমাণ মিলেছে। এটা নিয়ে যথেষ্ট খটকা আছে। কারণ, শ্বাসরোধ করে কাউকে মারতে হলে দু’টি হাতেরই প্রয়োজন। আবার দু’হাত দিয়ে শ্বাসরোধ করলে বুকের উপরে ওই পরিমাণ চাপ দেওয়া খুব কঠিন। যদি অনেকটা সময় ধরে অত্যাচার চলত, তা-ও না হয় কথা ছিল। কিন্তু এখানে যে সময়টা বলা হচ্ছে, তাতে এতগুলি জায়গায় আঘাত করা কী ভাবে সম্ভব, চিকিৎসক হিসাবে সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।’’
পুলিশ অবশ্য আগাগোড়াই জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া যুবকই একমাত্র অভিযুক্ত। চিকিৎসকদের একাংশের এই সংশয়ের কথা কি পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে? সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy