Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

খুলেছে অফিসপাড়া, তবু মাছি তাড়াচ্ছে খাবারের স্টল

আনলক-১ পর্বের শুরু থেকে পুলিশের অনুমতি নিয়ে শহরের ফুটপাতে খাবারের স্টল খুলেছেন অনেকে।

সুনসান: অফিস খুললেও বাইরের খাবার এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকে। ফুটপাতের খাবারের দোকানে তাই সে ভাবে দেখা মেলেনি ক্রেতাদের। বুধবার, বি বা দী বাগ এলাকায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

সুনসান: অফিস খুললেও বাইরের খাবার এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকে। ফুটপাতের খাবারের দোকানে তাই সে ভাবে দেখা মেলেনি ক্রেতাদের। বুধবার, বি বা দী বাগ এলাকায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২০ ০৩:১৯
Share: Save:

কেউ খাবারের দামে ছাড় দিচ্ছেন। কেউ রাখছেন স্যানিটাইজ়ার। দোকানে খেতে আসা লোকজন যাতে দূরত্ব-বিধি মেনে চলেন, সে দিকেও নজর রাখছেন তাঁরা। তবে পঞ্চম দফা লকডাউনে বি বা দী বাগের অফিসপাড়া খুলে গেলেও তেমন বিক্রিবাটা নেই ফুটপাতের খাবারের দোকানগুলিতে। অফিসে হাজিরা দিলেও বেশির ভাগ কর্মীই এখন ফুটপাতমুখো হচ্ছেন না। ফলে কার্যত মাছি তাড়াচ্ছে খাবারের স্টলগুলি। কোথাও আবার অধিকাংশ খাবারের দোকান বন্ধই রয়েছে।

আনলক-১ পর্বের শুরু থেকে পুলিশের অনুমতি নিয়ে শহরের ফুটপাতে খাবারের স্টল খুলেছেন অনেকে। যেমন তন্দুরি রুটি, বাটার নান থেকে কাশ্মীরি আলুর দম, ডাল ফ্রাই মেনুতে রেখে আর এন মুখার্জি রোডের ফুটপাতে দোকান খুলেছেন রাজু সিংহ। সঙ্গে পাঁচ জন কর্মী। বুধবার দুপুরে সেই দোকানে খেতে দেখা গেল জনা পাঁচেক ব্যক্তিকে। তাঁদের হাতে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে, একে অপরের থেকে দূরে দূরে দাঁড়িয়ে খেতে বলেছেন রাজু। তবে তাতে বেশি লোক টানতে পারেননি। রাজু বলছেন, ‘‘অফিসের টিফিন টাইমে দোকান সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। আর এখন খেতে এসেছেন হাতে গোনা এই ক’জন। যা বিক্রি হয়, সে তুলনায় এখন ব্যবসা হচ্ছে মাত্র ২৫ শতাংশ।’’ তাঁর ধারণা, অফিস খুলে গেলেও সব অফিসকর্মী প্রতিদিন কাজে আসছেন না। সেই কারণেই ফাঁকা থাকছে অফিসপাড়ার খাবারের স্টলগুলি।

তবে এই দুর্দিনে যেটুকু বিক্রি হচ্ছে, তাতেই খুশি ওই দোকানেরই কর্মী অমিত মণ্ডল। তন্দুরি রুটি বানাতে বানাতে তিনি বলছেন, ‘‘মালিক দোকান খোলায় কিছু তো উপার্জন হচ্ছে। লকডাউনের আড়াই মাস তো কোনও রোজগারই ছিল না। সংসার চালাতে পারছিলাম না।’’

বি বা দী বাগের কয়লাঘাটা এলাকার ফুটপাতে রুটি-তরকারির দোকানে আবার খদ্দের টানতে দাম কমিয়েছেন শিবু শর্মা। তাঁর দোকানে তরকারি-সহ চারটি রুটি এবং জিলিপির দাম ৩০ টাকা। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকায়। তবু সে ভাবে খেতে আসছেন না কেউ। শিবুর কথায়, ‘‘আমাদের দোকানের আশপাশে রয়েছে পোর্ট ট্রাস্ট, রেলের দফতর এবং ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। এ ছাড়াও রয়েছে প্রচুর বেসরকারি অফিস। কিন্তু তা-ও খেতে আসছেন না প্রায় কেউই। কিছু বাঁধা খদ্দের আছেন, যাঁরা অফিস খুলতে না খুলতেই খেতে এসেছেন। ওঁরাই ভরসা।’’

তেমনই এক জন, ওই এলাকার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী অরিন্দম হাজরা। রুটি-তরকারির টানে এ দিন শিবুর দোকানে হাজির তিনি। বললেন, ‘‘আগে অফিসে টিফিন আনতাম না। কিন্তু এখন বাড়ি থেকে আনছি। কিন্তু এই দোকানের রুটি-তরকারি আমার খুব প্রিয়। তাই আপাতত বাড়ির টিফিনের বদলে এখানেই খাচ্ছি।’’ তবে অরিন্দম জানাচ্ছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য-বিধির কথা মাথায় রেখে তাঁর অফিসের অনেকেই রাস্তা থেকে কিনে খেতে চাইছেন না। তাই তাঁরা প্রায় সকলেই বাড়ি থেকে টিফিন আনছেন।

অফিসপাড়ার ফুটপাতে মাছ-ভাতের দোকানের মালিক নিকোলাস থমাসও জানাচ্ছেন, ব্যবসা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক তৃতীয়াংশে। ক্রেতার পাতে দিতে আপাতত চারাপোনা ছাড়া অন্য মাছ রাখছেন না। তবে লোক সে ভাবে না এলেও দোকান নিয়মিত খুলছেন। নিকোলাসের কথায়, ‘‘বাড়িতে বসে থাকার চেয়ে দোকান খোলা ভাল। তাতে আমার পাঁচ জন কর্মীরও কিছু উপার্জন হচ্ছে। সেটাই বা কম কী!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health COVID-19 Unlock 1.0
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy