কাপ-জ্বর: ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে গালে রং নিয়ে পথে খুদেরা। রবিবার, চেতলায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
অন্য দিন দুপুর গড়ালেই ভিড় বাড়ে জেলের বাইরের উঠোনে-মাঠে। রবিবাসরীয় দুপুর গড়ানোয় ভিড় বেড়েছিল অন্দরে। কারণ, এ দিন বিকেলে নিজেদের খেলা বা ঘুরে বেড়ানো নিয়ে উৎসাহী ছিলেন না দমদম সেন্ট্রাল জেলের বন্দিরা। তাঁদের চোখ ছিল টেলিভিশনের পর্দায়। থাকবে নাই বা কেন! ক্রিকেট বিশ্বযুদ্ধে মুখোমুখি যে ভারত-পাকিস্তান।
রাজ্যের মধ্যে দমদম কার্যত ‘বিশ্ব’ জেল। কারণ, সেখানে আফ্রিকার একাধিক দেশের সঙ্গে বেশি সংখ্যায় রয়েছেন বাংলাদেশি বন্দিরা। রয়েছেন পাকিস্তানের কয়েক জন বন্দিও। তবে কোথাও বিদ্বেষ নেই। নীলের সঙ্গে সবুজ জার্সির লড়াই দেখতেই ব্যস্ত ওঁরা। ব্যাট হাতে এ দিন ম্যাচ শাসন করেছেন রোহিত-কোহলি-রাহুলেরা। ফুলটস বলকে ব্যাটের মাঝখানে খেলে সোজা মাঠের বাইরে ফেলেছিলেন রোহিত। কখনও বা পুল করেছেন তিনি। এ সব দেখতে দেখতে তারস্বরে চিৎকারে তখন জেলের ভিতরে কান পাতাই দায় হয়ে উঠেছিল বলে জানাচ্ছেন কারা দফতরের কর্মীরা। সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি বন্দিরা ভাল ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেই মিস ফিল্ডে মাথা চাপড়েছেন।
এ দিন দমদম জেলে প্রায় চল্লিশটি টিভি চলেছে। যার দু’-একটি ছাড়া কার্যত সবটাই ক্রিকেটপ্রেমী বন্দিদের দখলে ছিল। প্রসঙ্গত, দমদম জেলে এখন চার জন পাকিস্তানি বন্দি আছেন। প্রত্যাশিত ভাবেই তাঁরা নিজের দেশকে সমর্থন করেছেন। বাকি বন্দিরা অবশ্য ‘ভাল’ খেলার তারিফ করেছেন বলে সূত্রের খবর। কয়েক দিন আগেই জেল থেকে বেরিয়ে করাচির বাড়িতে ফিরেছেন পাঁচ জন পাকিস্তানি বন্দি। এক কারাকর্তার কথায়, ‘‘রবিবার জেলের মাঠগুলিতে ভিড় থাকে। তবে এ দিন খেলা থাকায় মাঠের ভিড় মুখ ঘুরিয়ে টিভির সামনে বেড়েছে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সব ম্যাচ অবশ্য টিভিতে দেখছেন না বন্দিরা। ভারত-পাকিস্তানের খেলা বলেই এ দিন খেলা দেখার ভিড় ছিল।’’ এমনকি, কে সামনে বসবেন, কে পিছনে বসে খেলা দেখবেন তা-ও নিজেরা ঠিক করে নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন কারা দফতরের এক আধিকারিক। জায়গা দখলের জন্যই খেলার অনেক আগেই টিভির সামনে বসে পড়েন বন্দিদের কেউ কেউ।
ভারত-পাকিস্তান মহারণ শুধু দমদম জেলের বন্দিরাই উপভোগ করেছেন তা নয়। দমদমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বারুইপুর সেন্ট্রাল জেলে তিনতলা বাড়ির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২০টি টেলিভিশনে খেলা দেখেছেন তাঁরা। এখনও সম্পূর্ণ তৈরি হয়নি বারুইপুর জেল। অর্ধেক অংশে রয়েছেন বন্দিরা। সেখানেই শান্তির আবহে রোহিত-আমির দ্বৈরথ উপভোগ করেছেন তাঁরা। তবে ছেচল্লিশ ওভারের মাথায় বৃষ্টি আসায় হতাশা বেড়েছিল তাঁদের। ওয়ার্ডে ফিরে গেলেও খেলা শুরু হতেই ফিরে আসেন বন্দিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy