Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
COVID19

covid in kolkata: সংক্রমণ বাড়ছে শিশুদের, বিধি মানায় জোর স্কুলে

নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত ও সকলের সঙ্গে মেলামেশাকেই ছোটদের সংক্রমিত হওয়ার কারণ বলে মনে করছেন বেশির ভাগ অভিভাবক।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২২ ০৫:৪৭
Share: Save:

রাজ্যে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা। তবে অতিমারির চতুর্থ ঢেউয়ে এ বার আক্রান্তদের তালিকায় ছোটরাও থাকছে বলে পর্যবেক্ষণ চিকিৎসকদের। তবে তাঁরা জানাচ্ছেন, সংক্রমিত হলেও ছোটদের তেমন বাড়াবাড়ি হচ্ছে না। যদিও নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত ও সকলের সঙ্গে মেলামেশাকেই ছোটদের সংক্রমিত হওয়ার কারণ বলে মনে করছেন বেশির ভাগ অভিভাবক। তবে বিধি মেনে চলার দিকেই আপাতত জোর দিচ্ছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের একাংশ ফের অনলাইন ক্লাসে ফেরার প্রস্তাব দিতে শুরু করেছেন। যদিও অফলাইন ক্লাসের পক্ষেই রয়েছেন সরকারি স্কুলের অভিভাবকেরা। শহরের শিশুরোগ চিকিৎসকেরাও স্কুলের দরজা খোলা রাখার পক্ষে। তাঁদের দাবি, স্কুলকে দায়ী করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আবার ‘তালাবন্ধ’ করার মানে নেই। তাতে বরং শিশুর মানসিক বিকাশ-সহ অন্যান্য দিকে সমস্যা তৈরির আশঙ্কা বাড়বে। শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের কথায়, “স্কুল চলা উচিত। কারণ, এমন ভাইরাস সংক্রমণ হতেই পারে। করোনায় বাচ্চাদের তেমন সমস্যা হচ্ছে না। বরং অন্যান্য অসুখে আক্রান্ত শিশু রোগী অনেক বেশি। তার জন্য কি স্কুল বন্ধ করা হচ্ছে?”

পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথে কোনও শিশু এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়নি। বরং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কয়েক জন ভর্তি রয়েছে বলে জানাচ্ছেন অপূর্ববাবু। তাঁর কথায়, “করোনা আক্রান্ত হলে বাড়িতে ৫-৭ দিন থাকলেই হবে। এর জন্য স্কুল বন্ধ রাখার যুক্তি নেই।”

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি জানাচ্ছেন, কিছু অভিভাবক চিঠি দিয়ে প্রতিদিনই কিছু ক্লাস অনলাইনে করানোর আবেদন করছেন। তা বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিকে পর্যায়ক্রমে স্কুলে এনে করোনা-বিধি মেনে আপাতত ক্লাস হচ্ছে। তবে স্কুলে পড়ুয়ারা মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার, ভিড় এড়িয়ে চলার মতো বিধি যাতে মেনে চলে, সে দিকে স্কুল কর্তৃপক্ষকেও জোর দিতে বলছেন চিকিৎসকেরা। অনেক ক্ষেত্রে স্কুল থেকে বেরিয়ে মাস্ক খুলে ফেলে পড়ুয়ারা। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা চিন্তিত ঠিকই, তবে অনলাইনের প্রস্তাব দেননি। স্কুলে সব বিধি মানা হলেও বাড়ি ফেরার পথেও তা বজায় রাখতে বলা হচ্ছে পড়ুয়াদের।”

বর্তমানে অনেক বাড়িতেই করোনা-বিধি সে ভাবে মানা হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে উপসর্গহীন পরিবারের কোনও সদস্যের থেকে ছোটদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পিয়ারলেস হাসপাতালের শিশুরোগ চিকিৎসক সংযুক্তা দে-র কথায়, “বহু বছর আগে আসা ফ্লু এখনও রয়ে গিয়েছে। তেমনই কোভিড কখনও যাবে না। তাই শিশুর উপসর্গ দেখা দিলে দিন পাঁচেক ঘরে থেকে সুস্থ হলে আবার স্কুলে যাবে। তবে ওই সময়ে কোনও পরীক্ষা থাকলে তার জন্য অনলাইনে বা অন্য ভাবে পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে স্কুলকে।”

তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ছোটদের অল্প উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষার জন্য তা গোপন করে স্কুলে পাঠাচ্ছেন অভিভাবকেরা। সংযুক্তা জানাচ্ছেন, এটি কখনওই ঠিক নয়। বরং, উপসর্গ দেখা দিলে ছোটদের বাড়িতেই রাখতে হবে। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগের কথায়, “প্রাথমিকের পড়ুয়াদের পর্যায়ক্রমে স্কুলে আনা যায় কি না, তার পরিকল্পনা করছি। তবে পর্যাক্রমিক মূল্যায়ন শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই পরীক্ষায় আসতেই হবে, সেই বাধ্যবাধকতা নেই।” তিনি আরও জানাচ্ছেন, কয়েক জন পড়ুয়ার জ্বর হয়েছে জেনে তাদের অন্তত সাত দিন বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। করোনা পরীক্ষা করানোর কথাও বলা হচ্ছে। যদিও উপসর্গ থাকলেও অনেকেরই অভিভাবকেরা তাদের আরটিপিসিআর করাচ্ছেন না বলে জানাচ্ছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ চিকিৎসক দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী। তাঁর কথায়, “পরীক্ষা না করালেও ওই উপসর্গে ছোটদের আইসোলেশনে রাখলেই চলবে। অনেকে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে নিশ্চিত হচ্ছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে শিশুদের মারাত্মক কিছু হচ্ছে না। হাসপাতালেও যাচ্ছে না।” তিনি জানাচ্ছেন, এ বারে মৃদু উপসর্গ নিয়ে আসা শিশুদের পরীক্ষা করলে বেশির ভাগেরই রিপোর্ট পজ়িটিভ মিলছে। অনেকের হাত, পা, মুখে লাল র‌্যাশ বেরোচ্ছে। দিব্যেন্দুর কথায়, “তবে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সাধারণ কিছু ওষুধে সুস্থ হয়ে ফিট সার্টিফিকেট নিয়ে ছোটরা আবার স্কুলে যেতে পারবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

COVID19 school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy