গ্যাস-অম্বলের জন্য অনেকেই নিজের মতো করে দীর্ঘ দিন ধরে খেয়ে চলেন ওষুধ ‘এসওমিপ্রাজ়ল’। আদতে সেটি শরীরের ক্ষতি করছে বলে সতর্ক করে নির্দেশিকা জারি করল ইন্ডিয়ান ফার্মাকোপিয়া কমিশন (আইপিসি)। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে রোগী— সকলকে সাবধান করে জানানো হয়েছে, ওই ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ব্যাহত হতে পারে।
দেশ জুড়ে ফার্মাকোভিজিল্যান্স বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত নজরদারি কর্মসূচি শুরু করেছে দেশে ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় নজরদারি সংস্থা আইপিসি। সেখানেই মারাত্মক অম্বল উপশমের ওই ওষুধটি সম্পর্কে এমন তথ্য উঠে এসেছে। দেখা গিয়েছে, ওষুধটির বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে শরীরে প্রোল্যাক্টিন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাই ‘এসওমিপ্রাজ়ল’ ব্যবহার নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই ওষুধ পাকস্থলীতে বেশি মাত্রায় হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড তৈরিতে বাধা দেয়। আটকে দেয় হাইড্রোজেন আয়ন বা প্রোটন তৈরি। কেন্দ্রীয় ওই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এসওমিপ্রাজ়লের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে রক্তে প্রোল্যাক্টিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, অর্থাৎ দেখা দিতে পারে হাইপার-প্রোল্যাক্টিনিমিয়া।
এর ফলে বন্ধ্যাত্ব, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, হাড় ভঙ্গুর হওয়া, মাংসপেশির জোর কমে যাওয়া, ত্বকে র্যাশের মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। শহরের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘কোন ওষুধ কার ক্ষেত্রে কত দিন চলবে, সেটি রোগীর অসুখের উপরে নির্ভর করে স্থির করা হয়। সেখানে নিজে থেকে ডাক্তারি করার ফলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক।’’ কারণ, গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা দূর করতে বেশির ভাগ লোকই অন্য কারও থেকে জেনে কিংবা পুরনো প্রেসক্রিপশন থেকে দেখে ওষুধ কিনে টানা খেতে থাকেন। সেই কারণে কেন্দ্রীয় ওই সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী নিজে থেকে মুড়ি-মুড়কির মতো ওষুধ খাওয়ার উপরে রাশ টানার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)