বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বুধবারই বলেছিলেন নিরাপত্তার জন্য অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের ব্যবহার করার কথা। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উত্তাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যেই বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কেন্দ্র অরবিন্দ ভবনের ভিতরে ঢুকতে দেখা যায় সেনার পোশাকে সজ্জিত ২০ জনকে। আচমকা সেনার পোশাকে যাদবপুর ক্যাম্পাসে কারা এসে হাজির হল, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি নিয়ে সক্রিয় হল পুলিশও। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলা দায়ের করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলায় খুব শীঘ্রই তারা তলব করতে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকেও।
গত ৯ অগস্ট যাদবপুরের হস্টেল থেকে ছাত্রের পড়ে যাওয়ার ঘটনার পরই হস্টেলের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছিল বিরোধী গেরুয়া শিবির। অনেকে এমনও দাবি করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিকদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জুও জানিয়েছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা যায় কি না, সে ব্যাপারে আলোচনা করা হবে। এর মধ্যেই বুধবার সকালে হঠাৎ দেখা যায় ক্যাম্পাসে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেনা উর্দিধারীরা। কারা এঁরা? ভারতীয় সেনার কর্মী? না কি আধাসেনা? এমন প্রশ্ন ঘুরে ফিরে উঠছিল বুধবার দিনভর। পুলিশের কাছেও খবর পৌঁছয়। এর পরই বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় মামলা করে পুলিশ।
ওই মামলায় বলা হয়েছে, যাদবপুর থানার এক সাব ইন্সপেক্টরের অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলা করা হচ্ছে। গত বুধবার বিকেল ৪টে ২০ মিনিটে কাজি সাদেক হোসেন নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একটি দল প্রবেশ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। এঁদের প্রত্যেকেরই পরনে ছিল সেনাদের মতো পোশাক। মাথায় লাল টুপিতে লেখা ছিল ‘ভারতীয় সেনা’। ব্যবহার করা হয়েছিল ভারতীয় সেনার প্রতীকও। জানা গিয়েছে, ওই দলটি এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটি নামে একটি সংস্থার। কাজি তাদের সাধারণ সচিব। পুলিশ এই ঘটনায় ভারতীয় সেনার নাম এবং প্রতীক অপব্যবহারের জন্য মামলা দায়ের করছে।
বুধবার ওই সেনার উর্দিধারীদের প্রশ্ন করে জানা গিয়েছিল, তাঁরা সেনা বা আধাসেনা কোনও পক্ষ থেকেই আসেননি। সেনার নকল পোশাক পরে আসা ওই দলের নেতা দাবি করেন, “আমরা বিশ্ব শান্তি সেনা।” যদিও কেন তারা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এসেছেন, কারাই বা তাঁদের ডেকে পাঠিয়েছিল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। পুলিশ এই সব প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজবে বলে সূত্রের খবর।
বুধবার যদিও ওই দলটির নেতাস্থানীয় একজন দাবি করেছিলেন, তাঁদের কেউ ডাকেনি। তাঁরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যাদবপু ক্যাম্পাসে আসার। পুলিশ সেই সব তথ্যও খতিয়ে দেখতে চলেছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের মতামত জানতে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জুকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy