Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

Coronavirus in Kolkata: দ্বিধা কাটিয়ে প্রতিষেধক নিতে বন্দর এলাকায় প্রচার ইমামদের

বন্দর এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধক না নেওয়া সত্ত্বেও সেখানে সংক্রমণের হার এত কম কেন?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৪১
Share: Save:

অতিমারির প্রকোপ থেকে বাঁচার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ প্রতিষেধক নেওয়া— এই বলে বার বার সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। কলকাতা পুর এলাকায় বসবাসকারী অধিকাংশ নাগরিকের ইতিমধ্যেই করোনার প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে। অনেকে পেয়ে গিয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ়ও। অথচ, ঠিক এর উল্টো ছবি বন্দর এলাকার গার্ডেনরিচ ও মেটিয়াবুরুজে। সেখানে মোট বাসিন্দার মধ্যে অর্ধেকেরও কম জন এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নিয়েছেন। তা সত্ত্বেও পুরসভার তথ্যই বলছে, ১৬টি বরো এলাকার মধ্যে ১৫ নম্বর বরো অর্থাৎ বন্দর এলাকায় করোনা সংক্রমণের হার সব চেয়ে কম! যা দেখে বিস্মিত পুর আধিকারিকদের একাংশই।

পুরসভার চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, করোনার প্রতিষেধক নিলে সন্তানধারণ ক্ষমতা কমে যাবে, দেখা দেবে মৃত্যুভয়— এমন নানা কুসংস্কার চেপে বসেছে বন্দর এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে। এই ভ্রান্ত ধারণা থেকে তাঁদের বার করে আনতে এবং প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য সাহস জোগাতে স্থানীয় মসজিদের ইমামদেরও কাজে লাগাচ্ছে পুরসভা। কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিরুল ইসলাম মোল্লা বর্তমানে বন্দরএলাকায় করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনার দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধক নিয়েছেন। বেশির ভাগই বিভিন্ন কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে তা নিতে চাইছেন না। এই পরিস্থিতি কাটাতে স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছিলাম। তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। অনেকেই প্রতিষেধক নিতে অনীহা দেখাচ্ছেন।’’

আরও অভিযোগ, বন্দর এলাকার বাসিন্দারা কোভিড-বিধিও খুব একটা মেনে চলছেন না। এমন যেখানে অবস্থা, সেখানে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরেরই পরিসংখ্যান বলছে, ওই এলাকায় করোনায় আক্রান্তের হার সব চেয়ে কম। যে চিত্র দেখা গিয়েছিল অতিমারির প্রথম ঢেউয়ের সময়েও। তা বদলায়নি চলতি বছরেও। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে প্রতিদিনই শহরে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ১০০-র উপরে। সেখানে ১৫ নম্বর বরো এলাকায় এমন বেশ কয়েকটি দিন গিয়েছে, যে দিনগুলিতে সেখানে এক জনও সংক্রমিত হননি।

পুর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২২ অগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর— এই ২২ দিনে ১৫ নম্বর বরোয় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১৩ জন। ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই বরোয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য। এমনকি, গত দু’মাসের নিরিখে গত ৮ সেপ্টেম্বর শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক হলেও (১৫৯) ওই দিন বন্দর এলাকায় এক জনও সংক্রমিত হননি। ১৪ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সেখানে মাত্র এক জন সংক্রমিত হয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

বন্দর এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধক না নেওয়া সত্ত্বেও সেখানে সংক্রমণের হার এত কম কেন? এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অমিতাভ নন্দীর মত, ‘‘অল্প মাত্রায় সংক্রমণের জন্য ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। যে কারণে শহরের বাকি এলাকায় সংক্রমণ বেশি হলেও ওঁরা অসুখের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন।’’ বক্ষরোগ চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমীক্ষা করলে হয়তো দেখা যাবে, অতিমারির প্রথম ঢেউয়ের সময়ে বন্দর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে হালকা (মাইল্ড) সংক্রমণ হয়েছিল। কিন্তু তখন তাঁরা হাসপাতালে যাননি। যার জন্য তাঁদের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর ফলে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে ওই এলাকায় আক্রান্তের হার কম।’’

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus Imams
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy