Advertisement
E-Paper

বাইপাসে দুর্ঘটনা কমাতে এক গুচ্ছ পরিকল্পনা, সমীক্ষা করল আইআইটি 

২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৭৯টি দুর্ঘটনার মধ্যে ২৬টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। শিউরে ওঠার মতো এই পরিসংখ্যান নিয়ে উদ্বিগ্ন পুলিশ ও পরিবহণ দফতর।

ই এম বাইপাস।

ই এম বাইপাস। —ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫৩
Share
Save

­­শহর কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা ই এম বাইপাসে দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গা রয়েছে ১৮টি। ওই পথে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৭৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কালিকাপুর এলাকায় দুর্ঘটনার সংখ্যা ১৭, রুবি মোড় ও সংলগ্ন এলাকায় ১৪। তা ছাড়া, হাইল্যান্ড পার্ক, অজয়নগর-সহ একাধিক এলাকায় ১০টিরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। সব মিলিয়ে আহত হয়েছেন ২০৯ জন। অন্য দিকে, ২৭৯টি দুর্ঘটনার মধ্যে ২৬টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। শিউরে ওঠার মতো এই পরিসংখ্যান নিয়ে উদ্বিগ্ন পুলিশ ও পরিবহণ দফতর।

শুধু ই এম বাইপাসই নয়। রাজ্যের আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার ভিত্তিতেই রাস্তা নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করে সেখানে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে গতি নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়ার পথে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। কলকাতার ই এম বাইপাস ছাড়াও সারা রাজ্যের ছ’টি রাস্তা বেছে নিয়ে সংশ্লিষ্ট রাস্তাগুলির বৈশিষ্ট্য, স্থানীয় জনঘনত্ব এবং সেখান দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের সংখ্যার হিসাব করে খড়্গপুর আইআইটি-র সহায়তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের পাইলট প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার প্রথম পর্যায়ে ই এম বাইপাসের দুর্ঘটনাপ্রবণ অংশগুলি চিহ্নিত করে সম্প্রতি একটি সমীক্ষাও হয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুলিশ, নগরোন্নয়ন দফতর, কলকাতা পুরসভা এবং শিক্ষা দফতরকে সঙ্গে নিয়ে ওই সমীক্ষা চলে। কলকাতা পুরসভার আওতায় থাকা ই এম বাইপাসের অজয়নগর থেকে উল্টোডাঙা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার পথ জুড়ে এই কাজ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

সমীক্ষার উদ্দেশ্যে গত সপ্তাহেই পুলিশ, পরিবহণ দফতর, কলকাতা পুরসভা এবং শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে ই এম বাইপাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ পরিদর্শন করেছে খড়্গপুর আইআইটি-র এক বিশেষজ্ঞ দল। হাইল্যান্ড পার্ক, অজয়নগর, মুকুন্দপুর, রুবি, ভিআইপি বাজার, সায়েন্স সিটি, মেট্রোপলিটন, চিংড়িঘাটা-সহ একাধিক মোড়কে সমীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। ওই সব মোড় সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে যানবাহনের ঘনত্ব, রাস্তা পারাপারের প্রকৃতি, বাস স্টপ, ট্র্যাফিক সিগন্যাল, মেট্রো স্টেশন এবং মেট্রোর স্তম্ভ লাগোয়া একাধিক ক্ষেত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে।

সূত্রের খবর, বাইপাসে দুর্ঘটনা কমাতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে পথচারী, মোটরবাইক আরোহীদের নিরাপত্তা রক্ষার উপরে। লক্ষ রাখা হচ্ছে, যাতে বাস স্টপে যাত্রীরা সহজে এবং নিরাপদে পৌঁছতে পারেন। সেই উদ্দেশ্যে ‘বাস বে’ তৈরি করে যাত্রীদের ওঠা-নামা সুরক্ষিত করা, প্রয়োজনীয় সঙ্কেত সংবলিত বোর্ড বসানো, গতি সংক্রান্ত নির্দেশিকা ছাড়াও পর্যাপ্ত আলোর মতো একাধিক পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে।

সমীক্ষকেরা দেখেছেন, ই এম বাইপাসে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর করিডর রয়েছে। মেট্রোর বিভিন্ন স্টেশন থাকার কারণে বহু জায়গায় লেন বিভক্ত হওয়ার বিষয়টি এক রকম নয়। বহু ক্ষেত্রে রাস্তার উপরে স্তম্ভ থাকায় নির্দিষ্ট লেনকে কিছুটা ঘুরিয়ে দিতে হয়েছে বা প্রশস্ত করতে হয়েছে। গাড়ি চালানোর সময়ে চালকেরা যাতে এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়েন, তা দেখতে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।

জনবহুল অংশের যে যে জায়গায় পথচারীদের অসতর্ক ভাবে রাস্তা পারাপারের প্রবণতা বেশি, তা দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথাও ভাবা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রতিনিধিদলের সদস্য, খড়্গপুর আইআইটি-র অধ্যাপক তথা পরিবহণ বিশেষজ্ঞ ভার্গব মৈত্র বলেন, ‘‘স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রাস্তার চরিত্র খতিয়ে দেখে শুরুতে স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্যপূরণের উপরে জোর দেওয়া হবে। চলতি বছরের মধ্যেই এই কাজ সম্পূর্ণ করার চেষ্টা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

EM Bypass IIT

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}