Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

রাস্তা জুড়ে মণ্ডপ, কেনাকাটার ভিড়, রুদ্ধ শহর

পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, কলকাতায় বারোয়ারি দুর্গাপুজোর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। কালীপুজোর সংখ্যা সেখানে সাড়ে তিন হাজার।

থমকে: সার দিয়ে আটকে গাড়ি। বুধবার, ধর্মতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

থমকে: সার দিয়ে আটকে গাড়ি। বুধবার, ধর্মতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩৬
Share: Save:

মহানগরের দুর্গাপুজোয় যানজট সামলে দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু দীপাবলির উৎসবে মঙ্গল ও বুধবার দফায় দফায় থমকে গেল কলকাতার রাজপথ। রাস্তা আটকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় মণ্ডপ, ধনতেরস এবং কালীপুজোর কেনাকাটার জেরে দুর্ভোগে পড়তে হল বহু মানুষকে। আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরেও কলকাতার কিছু কিছু এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশের একাংশ।

পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, কলকাতায় বারোয়ারি দুর্গাপুজোর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। কালীপুজোর সংখ্যা সেখানে সাড়ে তিন হাজার। কিন্তু এর বাইরেও আরও কিছু ছোট ছোট পুজো রয়েছে। মহানগরের রাজপথ এবং অলিগলিতে কালীপুজোর মণ্ডপ হয়েছে। ফলে বড় রাস্তায় গাড়ির চাপ বাড়লেও ওই গলি দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে পারেনি পুলিশ। লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছি, ফুলবাগান, আমহার্স্ট স্ট্রিট, বেলেঘাটায় এমনই পরিস্থিতি হয়েছিল। দক্ষিণে চেতলার রাখাল দাস আঢ্য রোড, গড়িয়াহাটের ফার্ন রোড, লেক ভিউ রোডেও রাস্তা আটকে পুজোর মণ্ডপ হওয়ায় গাড়ি কার্যত চলতে পারেনি। রাস্তার এক পাশে পুজোর মণ্ডপের জন্য যান চলাচল বাধা পায় হরিশ মুখার্জি রোড-সহ ভবানীপুর, বালিগঞ্জ, বেহালার বিভিন্ন রাস্তায়। গড়িয়াহাট থেকে গরচা রোড এবং শরৎ বসু রোড থেকে মনোহরপুকুর রোডও সন্ধ্যার পরে বন্ধ ছিল।

পুলিশ জানায়, বড়বাজার, বৌবাজার-সহ মধ্য কলকাতায় কেনাকাটার জেরে রাস্তায় ভিড় হওয়ায় গাড়ি আটকে যায়। যদিও লালবাজারের দাবি, মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল ছিল। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গাঁধী রোড-সহ বড়বাজার, পোস্তায় গাড়ির গতি মাঝেমধ্যেই শ্লথ হয়ে গিয়েছে। লালবাজারের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘সারা দিন টানা যানজট হয়নি। তবে সন্ধ্যার পরে পরিস্থিতি বিগড়ে গিয়েছিল।’’ জানবাজারে রাস্তার উপরে শাসক দলের এক নেতার কালীপুজোর জন্য বুধবার সন্ধ্যায় এস এন ব্যানার্জি রোডে ওয়েলিংটন থেকে সব গাড়ি গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। একটি গাড়ি খারাপ হয়ে গিয়ে বিদ্যাসাগর সেতুতে যানজট হয়েছিল বলে লালবাজার সূত্রের খবর। পুলিশের একাংশের দাবি, সন্ধ্যায় শহরের কিছু এলাকায় এক পশলা বৃষ্টি হওয়ার ফলেও গাড়ির গতি শ্লথ হয়ে গিয়েছিল।

লালবাজার জানিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে ধনতেরসের ভিড়ের জন্য কাশীপুর রোড এবং বিটি রোডের দু’টি রাস্তা বন্ধ করা হয়। দু’দিন ধরে কালীপুজো এবং দীপাবলির জন্য বন্ধ বড়বাজারের কলাকার স্ট্রিট। এ দিন তার সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোডও। দক্ষিণমুখী ওই দুই রাস্তা বন্ধ থাকায় সব গাড়ি চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ দিয়ে যাতায়ত শুরু করে। এর জেরে ওই রাস্তায় চাপ বেড়ে যায়। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ব্রেবোর্ন রোড উড়ালপুলের নীচে ফুলের বাজার সরিয়ে দিয়ে মহাত্মা গাঁধী রোড এবং নেতাজি সুভাষ রোডে গাড়ির গতি ফেরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু এম জি রোড দিয়ে অতিরিক্ত গাড়ি চলাচল করায় গাড়ির চাকা কার্যত থমকেই ছিল। এমজি রোড এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে গাড়ির গতি আটকে যাওয়াতে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট, বিবেকানন্দ রোড, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট-সহ বিভিন্ন রাস্তায় সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে।

দুর্গাপুজোয় সামাল দিতে পারলেও কেন কালীপুজোয় এমন হাল?

অনেক পুলিশকর্তাই বলছেন, দুর্গাপুজোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম ও সমন্বয় রয়েছে। রয়েছে অনুমতির ব্যবস্থাও। কিন্তু কালীপুজোর ক্ষেত্রে বড় মাপের পুজো কমিটি ছাড়া বাকিদের তেমন নিয়মের কড়াকড়ি নেই। নেই পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে নির্দিষ্ট সমন্বয়ের ব্যবস্থাও। উপরন্তু, অলিগলিতে ইচ্ছে মতো মণ্ডপ তৈরি হওয়ায় পুরো ব্যবস্থাটাই ঘেঁটে গিয়েছে। ফি বছর এমন হওয়ার পরেও কেন কালীপুজোকেও নিয়মে বাঁধা হচ্ছে না? লালবাজারের এক কর্তা বলছেন, এ নিয়ে ভাবনা চিন্তা রয়েছে। তবে অধিকাংশ পুজোই শাসক দলের ছত্রচ্ছায়ায় রয়েছে। ফলে সেই নিয়ম আদৌ লাগু হবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy